জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: গত জুলাই মাসে লন্ডনে পোলো খেলার সময় প্রয়াত হন করিশ্মা কাপুরের (Karisma Kapoor) প্রাক্তন স্বামী ও ব্যবসায়ী সঞ্জয় কাপুর (Sunjay Kapur)। সম্প্রতি তাঁর মৃত্যু স্বাভাবিক নয়, বলে প্রশ্ন তুলেছিলেন তাঁর মা রানি কাপুর। এবার ব্রিটিশ চিকিৎসা কর্তৃপক্ষ তাঁর স্ত্রী প্রিয়া সচদেব কাপুরের কাছে পাঠানো একটি চিঠিতে জানালেন সঞ্জয়ের মৃত্যুর আসল কারণ।
সারের করোনার অফিস জানিয়েছে যে সঞ্জয় কাপুরের মৃত্যুর তদন্তে জানা গিয়েছে যে তিনি স্বাভাবিক কারণে মারা গেছেন এবং মৃত্যুর কারণ বাম ভেন্ট্রিকুলার হাইপারট্রফি এবং ইস্কেমিক হার্ট ডিজিজ। বাম ভেন্ট্রিকুলার হাইপারট্রফি এমন একটি অবস্থা, যেখানে হৃদপিণ্ডের বাম ভেন্ট্রিকলের পেশীর দেওয়াল পুরু হয়ে যায়। এতে কার্যকরভাবে রক্ত পাম্প করা কঠিন হয়ে পড়ে। এই অবস্থাটি প্রায়শই তখন তৈরি হয় যখন হৃদপিণ্ড স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি কাজ করে বা উচ্চ রক্তচাপের কারণে এমনটা হয়ে থাকে। অন্যদিকে, ইস্কেমিক হার্ট ডিজিজ হলো এমন একটি অবস্থা যেখানে হৃদপিণ্ডের পেশী পর্যাপ্ত রক্ত ও অক্সিজেন পায় না, সাধারণত সরু ধমনীর কারণে এমনটা ঘটে।
রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে, "কর্নারস অ্যান্ড জাস্টিস অ্যাক্ট ২০০৯-এর ধারা ৪ অনুযায়ী তদন্ত এখন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে... কোনো ইনকোয়েস্ট বা বিচার বিভাগীয় তদন্তের প্রয়োজন নেই।"এই রিপোর্টের পর সঞ্জয় কাপুরের স্ত্রী প্রিয়া কাপুরের ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে যে এটি প্রমাণ করে যে কোনো ‘ফাউল প্লে’ বা অসৎ উদ্দেশ্য ছিল না। তারা আরও জানায়, এই রিপোর্টটি কয়েক দিন আগে সঞ্জয় কাপুরের মা রানি কাপুরকে জানানো হয়েছিল। এরপরও রানি কাপুরের এই দাবি—যে তাকে ‘আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে হত্যা করা হয়েছে’—যা সত্যিই বিভ্রান্তিকর।
উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে রানি কাপুর সারে পুলিসকে একটি চিঠি লিখেছিলেন। সেখানে তিনি বলেছিলেন, তাঁর কাছে “বিশ্বাসযোগ্য ও উদ্বেগজনক প্রমাণ রয়েছে... যা থেকে ধারণা করা যায় যে তাঁর ছেলের মৃত্যু আকস্মিক বা স্বাভাবিক নয়, এর পেছনে ফাউল প্লে থাকতে পারে..."।
রানি কাপুরের চিঠি দেখে অনেকেই মনে করেন যে এটি আসলে তাঁদের পারিবারিক বিবাদ। এই ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল সোনা কমস্টার বোর্ডের কাছে ইমেল করে বার্ষিক সাধারণ সভা স্থগিত করার দাবি জানান সঞ্জয়ের মা। তিনি নিজেকে ‘সোনা গ্রুপের সংখ্যাগরিষ্ঠ শেয়ারহোল্ডার’ হিসেবে পরিচয় দিয়েছিলেন, যার মধ্যে সোনা কমস্টার এবং সোনা বিএলডব্লিউ প্রিসিশন ফোরজিংস লিমিটেডও রয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন যে, ছেলের শোকের সময় তাকে “কিছু নথিতে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করা হয়েছিল"। তিনি “কিছু নির্দিষ্ট ব্যক্তি (অর্থাৎ, প্রিয়া সচদেব কাপুর)-কে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন। প্রকৃতপক্ষে, তিনি কোম্পানির কার্যকলাপে “গুরুতর অবৈধতা"ও তুলে ধরেন।
রানি কাপুরের এই বিবৃতির পরপরই কোম্পানি এর প্রতিক্রিয়া জানায় এবং বলে যে, রানি কাপুর কোনও শেয়ারহোল্ডার নন, সংখ্যাগরিষ্ঠ তো দূরের কথা। ২০১৯ সাল থেকে তিনি কোনও শেয়ারহোল্ডার ছিলেন না। কোম্পানি জানায়, ২০১৯ সালের মে মাসে একটি “গুরুত্বপূর্ণ মালিকানা ঘোষণাপত্র"-এ সঞ্জয় কাপুরকে “একমাত্র মালিক" হিসেবে নাম দেওয়া হয়েছিল। বোর্ড তাঁর এই অভিযোগও অস্বীকার করে যে তাঁকে জোর করে গোপনীয়ভাবে কিছু নথিতে স্বাক্ষর করানো হয়েছিল। বোর্ড জানায়, "সঞ্জয় কাপুরের মৃত্যুর পর থেকে তাঁর কাছ থেকে কোনো নথিতে স্বাক্ষর করানো বা কোনো নথি সংগ্রহ করা হয়নি।"
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)