বিক্রম দাস: সিবিআই-এর নজরে এবার অনুব্রত ঘনিষ্ঠ রাজীব ভট্টাচার্য। নজরে তাঁর অ্যাকাউন্টে ৬৬ লাখ টাকার একটি লেনদেন। কে এই রাজীব ভট্টাচার্য? বোলপুরের চালকল ব্যবসায়ী রাজীব ভট্টাচার্য। অনুব্রত মণ্ডলের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত সে। সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, নিউটাউনের একটি ক্যানসার হাসপাতালকে রাজীব ভট্টাচার্যের অ্যাকাউন্ট থেকে এই ৬৬ লাখ টাকা দেওয়া হয়। যে সময় এই টাকা দেওয়া হয়, ঠিক সেই সময়ই ওই হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন অনুব্রত মণ্ডলের ক্যানসার আক্রান্ত স্ত্রী।
সিবিআই সূত্রে খবর, তাঁকে ইতিমধ্যেই একদফা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাঁকে ২-৩ বার নোটিসও পাঠানো হয়। বেশকিছু নথিও বাজেয়াপ্ত করেছে সিবিআই। যে নথি থেকেই এই ৬৬ লাখ টাকা লেনদেনের সূত্র মেলে। আর সেখানেই উঠছে প্রশ্ন। কেন এই রাজীব ভট্টাচার্য ক্যানসার হাসপাতালকে ৬৬ লাখ টাকা দিলেন? তাঁর কোনও আত্মীয় কি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন? নাকি অনুব্রত মণ্ডলের স্ত্রীর চিকিৎসার জন্যই এই ৬৬ লাখ টাকা পাঠানো হয়? যদি তাই হয়ে থাকে, তাহলে সেই টাকার উৎস কী? উঠছে প্রশ্ন। তদন্তে সবদিকই খতিয়ে দেখছেন সিবিআই আধিকারিকরা। সিবিআই সূত্রে খবর, এই প্রসঙ্গে তাঁকে আবারও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। প্রসঙ্গত, অনুব্রত মণ্ডলের হয়ে বিভিন্ন রাইস মিল দেখাশোনা করতেন চালকল মালিক এই রাজীব ভট্টাচার্য।
অনুব্রতর আরেক ঘনিষ্ঠ বোলপুরের কালিকাপুরে বাসিন্দা বিদ্যুত্ গায়েন আগেই সিবিআই-এর নজরে পড়েছে। অনুব্রতর সাম্রাজ্য যাঁরা সামাল দিতেন, তাদের মধ্যে একজন এই বিদ্যুৎ গায়েন। পেশায় বোলপুর পুরসভার সামান্য একজন সাফাইকর্মী থেকে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক হয়ে ওঠেন তিনি। বোলপুর পুরসভায় ২০০৮-২০০৯ সালে চাকরি পান বিদ্যুৎ গায়েন। প্রথমে অস্থায়ী কর্মী হিসাবে গাড়ির খালাসি হিসাবে কাজে যোগ দিয়েছিলেন। পরে ২০১২ সাল নাগাদ অনুব্রত মণ্ডলের হাত ধরেই স্থায়ী পদে নিয়োগ পান তিনি। আগে ছিলেন খালাসি, পরে স্থায়ী হওয়ার পর হন ড্রাইভার।
সিবিআই সূত্রে খবর, অনুব্রত মণ্ডলের মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলের যে সকল সম্পত্তি রয়েছে তাতে সবেতেই রয়েছে এই বিদ্যুৎ গায়েনের নাম। এমনকি ভোলে ব্যোম রাইস মিলও রয়েছে এই বিদ্যুৎ-এর নামে। পাশাপাশি অনুব্রত একটি ইনোভা ক্রিস্ট গাড়িতে চাপতেন। সেটিও ছিল এই বিদ্যুৎ-এর নামে কেনা। অনুব্রতর ছায়াসঙ্গী বিদ্যুৎ-এর ব্যাক্তিগত সম্পত্তিও কম না। বোলপুর শহরে মোট ৪টি বাড়ি ও বিপুল জমি রয়েছে তাঁর নামে।