শ্রেয়সী গঙ্গোপাধ্যায়: ফের শাসকদলের আক্রমণ বিজেপিকে। এবার শাসকদল তৃণমূলের মুখপত্র জাগোবাংলায় সরাসরি আক্রমণ করা হল বিজেপি নেতা স্বপন দাশগুপ্তকে। পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস সম্পর্কে বিজেপি নেতা স্বপন দাসগুপ্তের করা মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে জাগোবাংলার সম্পাদকীয়তে লেখা হয়েছে ‘বিলো দ্য বেল্ট’।
সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে যে এই ধরনের আক্রমণ বেনজির এবং সেটা বিলো দ্য বেল্ট। এই সম্পাদকীয়তে আরও বলা হয়েছে যে আগের রাজ্যপালের সময় রাজভবনকে বিজেপির পার্টি অফিস বলে মনে হতো। তিনি চলে যাওয়ার পরেই বিজেপির অন্তঃসারশূন্য চেহারাটা বেরিয়ে পড়েছে। তৃণমূলের তরফে প্রশ্ন করা হয়েছে যে সে কারণেই কি এই দিল দা বেল্ট আক্রমণ?
জাগোবাংলার সম্পাদকীয়তে লেখা হয়েছে, ‘বিজেপির ঝুলি থেকে বেরিয়ে পরেছে বিড়াল। বর্তমান রাজ্যপালকে যে ভাষায় আক্রমণ করা হয়েছে, তা বেনজির। রাজ্যপালের কী কী করা উচিত তার বিরাট তালিকা দিয়েছেন সেই প্রাক্তন সাংসদ’।
এই সঙ্গে রাজ্যপালের বাংলা শেখার হাতেখড়ির বিষয়ে স্বপন দাশগুপ্তের আক্রমণের বিষয়েও মন্তব্য করা হয়েছে এখানে। সম্পাদকীয়তে আরও বলা হয়েছে, ‘মনোনীত রাজ্যপালকে যে ব্যারিকেডের মধ্যে থাকতে হয় সেটা জানার পরেও প্রাক্তন রাজ্যপাল রাজনৈতিক নেতার মতো আচরণ করে গিয়েছেন। জনবিচ্ছিন্ন বিরোধী দল তাঁকে সামনে রেখেই নানা ফায়দা তোলার চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছে’।
রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের বাংলায় হাতেখড়ি হচ্ছে সরস্বতী পুজোর দিন। বহুদিন থেকেই তিনি বাংলা শেখায় আগ্রহী। তাই এর আনুষ্ঠানিক সূচনা সরস্বতী পুজোর দিনই করার পরিকল্পনা করেছেন তিনি। সেই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত মুখ্যমন্ত্রী। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যপালের ওই হাতেখড়ির অনুষ্ঠান ও তাঁর নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিলেন বিজেপি নেতা স্বপন দাসগুপ্ত।
স্বপন দাসগুপ্ত বলেন, একজন বয়স্ক মানুষ বাংলা শিখছেন। খুবই ভালো কথা। কিন্তু এটার মধ্যে একটা রাজনৈতিক বার্তা রয়েছে। এই বার্তাটা হল, পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষাক্ষেত্রে সবই যেন ঠিক আছে। অথচ পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষাক্ষেত্রটা ঠিক নেই। দুর্নীতির কথা তো বলাই হয়েছে। গোটা শিক্ষা দফতরটা এখন প্রায় জেলে। এরকম একটা সময়ে হাতেখড়ি নেওয়াটা একটা দেখনদারি বলে মনে হচ্ছে। এটা একটা স্টান্ট। এই স্টান্টের মধ্যে রাজ্যপালের পড়া উচিত নয়। উনি এখানে একটা দায়িত্ব নিয়ে এসেছেন।
জি ২৪ ঘণ্টাকে দেওয়া এক সাক্ষতকারে বিজেপি নেতা স্বপন দাসগুপ্ত বলেন, প্রাক্তন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে রাজ্যে সরকারের সংঘাতের জমানা শেষ। বর্তমান রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের সঙ্গে রাজ্য সরকারের একটা সুসম্পর্কের বাতাবরণ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কিন্তু রাজ্য-রাজ্যপাল পারস্পরিক শ্রদ্ধার সম্পর্ক নিয়ে খুশি নয় রাজ্য গেরুয়া শিবির। এনিয়ে বিস্ফোরক বিজেপি নেতা স্বপন দাসগুপ্ত। ওই সাক্ষাতকারে স্বপন দাসগুপ্ত এনিয়ে বলেন, রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের সঙ্গে রাজ্যের নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রীর একটা সম্পর্ক থাকা উচিত। পাশাপাশি সাংবিধানিক প্রধানের একটা নিরপেক্ষতাও থাকা উচিত। কিন্তু দেখতে হবে পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে ওই সম্পর্ক কতটা প্রাসঙ্গিক।