জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল: জলকামান দেগে, লাঠিচার্জ করে, কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটিয়ে বিজেপির নবান্ন অভিযান ভেস্তে দিলেও সুযোগ পেয়ে পুলিসকেও প্রবল মারধর করার অভিযাগে উঠেছে বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে। লাঠির আঘাত ভেঙেছে এসিপি দেবজিত চট্টোপাধ্য়ায়ের। আহত কমপক্ষে ৩০ পুলিস কর্মী। কোথাও পুলিকে লাঠি হাতে তাড়া করেছে বিজেপি কর্মীরা। ইট, বোতল ছুটে গিয়েছে পুলিসকে লক্ষ্য করে। কলকাতার তিন প্রান্ত থেকে ৩টি মিছিল যাওয়ার কথা থাকলেও আগাম নোটিস ছাড়াই বেশকিছু বিজেপি কর্মী লালবাজার অভিযান শুরু করে। পুলিস প্রথমে তা আন্দাজ করতে পারেনি। এর মধ্যেই এমজি রোড ও রবীন্দ্র সরনীর সংযোগস্থলে কলকাতা পুলিসের একটি পিসিআর ভ্যানে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এনিয়ে ট্যুইটারে সরব হলেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন- 'আদালতের নির্দেশে বেরোলাম', লালবাজার থেকে ছাড়া পেলেন শুভেন্দু
বিজেপি কর্মী সমর্থকদের নিশানা করে অভিষেক লিখেছেন, আজ শুধু রাজ্য নয় গোটা দেশ দেখল বিজেপির হুলিগানরা এই শহরের কী দশা করতে পারে। এই যদি অবস্থা হয় তাহলে ভেবে দেখুন এরা ক্ষমতায় এলে কী করবে! বিজেপিকে প্রত্য়াখান করায় বাংলার মানুষকে ধন্যবাদ। এবার সময়ে এসেছে, গোটা দেশের মানুষ এদের প্রত্যাখান করুক।
Today, not just Bengal but the nation saw a glimpse of what @BJP4Bengal hooligans are capable of doing to our City of Joy.
— Abhishek Banerjee (@abhishekaitc) September 13, 2022
We shudder to imagine what they would’ve done had they come to power.
WB, thank you for rejecting them!
Now, it’s TIME FOR INDIA TO REJECT THEM! pic.twitter.com/zH7IZnEoK1
মঙ্গলবার খড়গপুরে দলীয় সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, 'মিছিলে লোক হয়নি। ওদের বেলুন ফুটো হয়ে গিয়েছে। ওদের বেশি গুরুত্ব দেওয়ার দরকার নেই'। মমতা যাই বলুন না কেন, হেস্টিংসে, নবান্নের কাছাকাছি ও হাওড়ায় বিজেপি কর্মীদের সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয়ে পুলিসকে। বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা গোলমাল না করে পুলিসের গাড়িতে উঠে গেলেও শুভেন্দু অধিকারী ও লকেট চট্টোপাধ্য়ায়কে আটক করতে পুলিসকে খানিকটা বেগ পেতে হয়। ব্যারিকেডে ধাক্কাধাক্কি ও পুলিসের সঙ্গে বচসার পর শুভেন্দু পুলিসের গাড়িতে উঠে পড়েন। তবে মহিলা পুলিস কর্মীদের বিরুদ্ধে তাঁর বার্তা, "ডোন্ট টাচ মাই বডি। ইউ আর লেডি আই অ্যাম মেল। মহিলা পুলিস আমার গায়ে হাত দিয়েছেন...আমার গায়ে হাত দেবে কেন...মমতা লেডি কিম...মহিলা পুলিস আমার গায়ে হাত দিয়েছে।" অন্যদিকে, অন্য একটি মিছিলের নেতৃত্ব দিতে এসে পুলিসের কথাতেই শান্তিপূর্ণ ভাবে গ্রেফতার বরণ করেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেন, 'আমাদের শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে পুলিস ও প্রশাসন নিষ্ঠুরতার সঙ্গে দমন ও পীড়ন করেছে। আজ এমন একধরনের ব্যারিকেড তৈরি করা হয়েছিল, যে ব্যারিকেড ইন্দিরা গান্ধী যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, তখন জরুরি অবস্থার সময় সিদ্ধার্থশঙ্কর রায় এখানে তৈরি করেছিলেন। হাওড়া সহ আরও নানা জায়গায় বিজেপিকে আটকাতে এই ব্যারিকেড বানানো হয়। তারপর জলকামান দাগা হয়। এখন ভিজে অবস্থাতেই শিবপুর থানায় বসে আছি। পুলিস আমাদের গ্রেফতার করে নিয়ে এসেছে। পুলিসের কথামতো আমরা শান্তিপূর্ণভাবে গ্রেফতার বরণ করেছি।'
এদিকে, এদিন বড়বাজার থেকে নবান্নগামী একটি মিছিলে ছিলেন বিজেপি নেত্রী মীনাদেবী পুরোহিত। সেই মিছিল আটকাতেই পুলিসের সঙ্গে বিজেপি কর্মীদের খন্ডযুদ্ধ বেধে যায়। মাথা ফাটে মীনাদেবীর। ওই ঘটনায় পুলিসেকই দায়ী করেছে বিজেপি। পাশাপাশি ওই ঘটনার উল্লেখ করে কলকাতা পুলিস কমিশনারকে চিঠি লিখেছে জাতীয় মহিলা কমিশন।