জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: সম্পত্তি মামলায় এবার বিরোধীদের পাল্টা আক্রমণে আসরে নামল তৃণমূল। ফিরহাদ হাকিম, ব্রাত্য বসু, মলয় ঘটক, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক থেকে শিউলি সাহা- যুগ্ম সাংবাদিক সম্মেলন করে চড়া সুরে আক্রমণ শানালেন বিরোধীদের উদ্দেশে। নাম ধরে ধরে ব্রাত্য বসু এদিন বলেন, সম্পত্তি মামলায় শুধু যে তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীদের নাম আছে, এমনটা নয়। নাম রয়েছে আরও অনেকের। প্রথম নাম হচ্ছে অধীর রঞ্জন চৌধুরীর। দ্বিতীয় নাম সূর্যকান্ত মিশ্রের। তৃতীয় নাম অশোক ভট্টাচার্য, চতুর্থ নাম কান্তি গাঙ্গুলির। এছাড়া আবু হেনা, ফণীভূষণ মাহাত, ধীরেন বাগদি সহ আরও অনেকের নামই রয়েছে আদালতের কপিতে। তৃণমূল কংগ্রেস, কংগ্রেস, কংগ্রেস, সিপিআইএম সব দলের নেতাদের নাম-ই আছে।
তাই শুধু তৃণমূল কংগ্রেসের নামেই বক্রোক্তি কেন? শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীদের উদ্দেশ করেই কটূক্তি কেন? কেন তৃণমূলকে উদ্দেশ করেই শুধু আক্রমণ? চড়া সুরে প্রশ্ন তোলেন ব্রাত্য বসু। তোপ দাগেন, তৃণমূল কংগ্রেসকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা চলছে। তৃণমূলের লোক মানেই দুর্নীতিগ্রস্ত। এটাই দেখানো হচ্ছে। একপেশে বক্তব্য তৈরির চেষ্টা চলছে। সামাজিক ন্যায় দেখানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু, শাসকদলের ১৯ জন নেতা-মন্ত্রীর নামের পাশাপাশি আরও তো কিছু নাম আছে! কটাক্ষ করেন, ২০১৬ সালে বিজেপির যেই প্রার্থীরা জিতেছিলেন, ২০২১-এ তাঁদের কেউ নেই। তাই 'ব্যাকট্র্যাক' করার কোনও জায়গা নেই। এবার ২০২৬ আসছে। ২০২৬-এ বিজেপি যাদের প্রার্থী করবে, তাঁদের সম্পত্তির দিকেও নজর থাকবে। তৃণমূলও সেটা মিলিয়ে দেখবে।
এখন ব্রাত্য বসু সাংবাদিক সম্মেলনে সম্পত্তি মামলায় তাঁদের দিকে আঙুল তোলার পর পাল্টা কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন প্রাক্তন মন্ত্রী কান্তি গাঙ্গুলিও। তিনি বলেন, 'প্রাক্তন বিধায়ক হিসাবে যা পাই, সেটাই আমার রোজগার। ভোটে লড়ার সময়ে সব তথ্য নিয়মিত দিয়েছি। আমার লুকানো কিছু নেই। এসব ফালতু কথার কোনও উত্তর হয়! নিজের দোষ ঢাকার জন্য এসব বলছেন। সরকারি দফতরে সব কাগজ আছে। ওরা দেখুক না।' পাশাপাশি, অশোক ভট্টাচার্য বলেন, 'এইসব কথা শুনে আমার প্রচণ্ড হাসি পাচ্ছে। মানুষ যখন চোর, চোর বলে চেঁচায় না, তখন চোরগুলোও চোর-চোর বলে চেঁচাতে শুরু করে। নজর ঘোরানোর জন্য। এদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ আছে। টপ টু বটম, কেউ বাদ নেই। তাই এরা দিশেহারা হয়ে যাচ্ছে। ২০ বছর মন্ত্রী ছিলাম। ৫ বছর বিধায়ক ছিলাম। ৫ বছর মেয়রও ছিলাম। একটা আঙুলও কেউ তুলতে পারেনি। রোজগারের সবটাই দলকে দিয়ে দিতাম। তারপর সেখান থেকেই পার্টি আমাদের দিত। বাবার বানানো বাড়িতে থাকি। সম্পত্তি বলতে নিজের করা কিছু-ই নেই।'
প্রসঙ্গত, কীভাবে বাড়ছে নেতাদের সম্পত্তি? ২০১৭ সালে রাজ্যের ১৯ নেতা-মন্ত্রীর সম্পত্তির উৎস জানতে চেয়ে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। মামলা দায়ের করেন বিপ্লব কুমার চৌধুরী নামে এক ব্যক্তি। জানা গিয়েছে, ২০১১ সালে ভোটের সময় শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীরা সম্পত্তির যে খতিয়ান দিয়েছিল, ২০১৬ সালে দেখা যায় তাঁদের সম্পত্তির পরিমাণ অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। সেই হলফনামাকে হাতিয়ার করেই, তারপর তাঁদের সম্পত্তির খতিয়ান খতিয়ে দেখতে দায়ের হয় জনস্বার্থ মামলা। সোমবার সেই মামলায় ইডিকে যুক্ত করতে নির্দেশ দেয় আদালত।