মৈত্রেয়ী ভট্টাচার্য: অনেকটাই ভালো আছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। সোডিয়াম, পটাসিয়াম, ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। গতকাল জানা গিয়েছিল তাঁর বাইপ্যাপ সাপোর্ট মাঝেমধ্যে বন্ধ করে দেখা হচ্ছে। বাইপ্যাপ ছাড়াই শ্বাস নিতে পারছেন বুদ্ধবাবু। গতকাল রাতে ঠিকমতো ঘুমিয়েছেন তিনি। তবে সারারাত টানা চলছে বাইপ্যাপ।
আরও পড়ুন-টার্গেট নিঃসন্তান দম্পতিরা, খাস কলকাতায় শিশু পাচার চক্রের হদিশ!
হাসপাতাল সূত্রে খবর, বুধবার সকালে বুদ্ধদেববাবুর রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। পাশাপাশি, তাঁর স্বাস্থ্য নিয়ে পর্যালোচনা করার জন্য আজ বেলা বারোটা থেকে সাড়ে বারোটার মধ্যে বসবে মেডিক্যাল বোর্ড। জানা যাচ্ছে বুদ্ধবাবুর রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কম রয়েছে। সেকথা মাথায় রেখেই আজ তাঁকে রক্ত দেওয়া হবে।
মঙ্গলবার সকালে বেশকিছু রক্তপরীক্ষা হয় বুদ্ধবাবুর। সেই রিপোর্ট সন্তোষজনক বলে জানিয়েছেন চিকিত্সকেরা। ক্রিয়েটিনিন অনেকটাই কমেছে। অ্যান্টিবায়োটিক, স্টেরয়েডের সঙ্গে চলছে নেবুলাইজারও। চলছে পালমোনারি ফিজিওথেরাপিও করা হচ্ছে। কাশি এখনও বন্ধ হয়নি বুদ্ধবাবুর। তাই তাঁকে এখনও তরল কোনও খাবার দেওয়া হচ্ছে না। আচ্ছন্ন ভাব কেটে গিয়ে এখন মাঝে মধ্যে ডাক্তারদের সঙ্গে কথাও বলছেন ইশারায়। এমনটাই সূত্রের খবর।
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মোডিক্যাল টিমের ৩ সদস্য চিকিত্সক কৌশিক চক্রবর্তী, সুস্মিতা দেবনাথ ও সেমন্তী চক্রবর্তীর কথায় প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কখনও বাচ্চদের মতো শর্ত রেখে কথা বলেন, কখনও চিকিত্সকদের সব যুক্তি মেনে নেন। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর চিকিত্সা নিয়ে ডা কৌশিক চক্রবর্তী বলেন, লড়াই এখনও জারি রয়েছে। এখন ওঁর অ্যান্টি বায়োটিকের গোটা কোর্সটা শেষ করতে হবে। দেখতে হবে ইনফেকশন কমলো কিনা। কোনও সিওপিডি রোগীকে ভেন্টিলেশন থেকে বের করে আনার পর ফের তাঁকে ভেন্টিলেশনে দিতে হতে পারে। সেই জায়গায় যেন যেতে না হয় তা দেখাই চ্যালেঞ্জ। গত পাঁচ বছরে ওঁর সঙ্গে প্রায় ব্যক্তিগত সম্পর্ক হয়ে গেল। এখন ওঁকে যা বলি তা ওঁর পছন্দ হোক বা না হোক উনি বলেন, আপনি যেটা বলছেন তা বুঝলাম। কিন্তু আমার এই অসুবিধা হচ্ছে। এভাবেই উনি বলেন।
গতকাল হাসপাতালে বুদ্ধবাবুকে দেখতে আসেন অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা দাসগুপ্ত। হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে এসে তিনি বলেন, ওঁকে এসে দেখার খুব ইচ্ছে ছিল। খুব শ্রদ্ধা করি ওঁকে। আমার বিয়েতেও এসেছিলেন উনি। দেখা হয়েছে। কথা উনি এখন বলছেন না। আমরা মনে হয় খুব শীঘ্রই উনি ভালো হয়ে যাবেন।