সুতপা সেন: বাংলা যদি না থাকতো তাহলে নবজাগরণ হতো না। স্বাধীনতা আন্দোলনও হতো না। রিফর্মসও হতো না। বুধবার আলিপুর জেলে আলিপুর মিউজিয়াম-এর উদ্বোধনে এমনটাই মন্তব্য করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আলিপুর জেলের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বহু বিখ্যাত মানুষের ইতিহাস। সুভাষ চন্দ্র বসু, চিত্তরঞ্জন দাস থেকে শুরু করে বহু স্বাধীনতা সংগ্রামী ছিলেন এই জেলে। সেই আলিপুর জেলকে হেরিটেজ সাইট হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে। তৈরি হয়েছে একটি মিউজিয়াম। সেই সংগ্রহশালাটির আজ বিকেলে উদ্বোধন করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন- 'এখনও মোটিভেটেড আমি'! আর কতদিন খেলবেন সিআর সেভেন? জানিয়ে দিলেন নিজেই
ওই মিউজিয়াম সম্পর্কে মমতা বলেন, দেশের অসংখ্য মানুষ যারা দেশের স্বাধীনতার জন্য লডাই করেছেন তাদের মধ্যে যদি দেখেন তাহলে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, জওহরলাল নেহরু, ঋষি অরবিন্দ, চিত্তরঞ্জন দাস, যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত, বিধানচন্দ্র রায় থেকে শুরু করে কেউ বাদ নেই। সবাই আলিপুর জেলে কোনও না কোনও সময় থেকেছিলেন। যেসব কুঠুরিগুলিতে তাঁরা থাকতেন সেগুলিও সংরক্ষণ করা হয়েছে। ওইসব কুঠুরিগুলি সবার জন্য খুলে দেওয়া হচ্ছে। সেদিন নিজে গিয়ে দেখেছি আলিপুর জেলের ফাঁসিকাঠ। এখানকার জরাজীর্ণ তাঁতযন্ত্র সংরক্ষণ করেছি। এছাডা়ও বহু মূর্তি, ছবি, বই, ছবি, বিভিন্ন ব্যবহৃত জিনিস সংরক্ষণ করা হয়েছে। সেসব দর্শকদের জন্য খুলে দেওয়া হচ্ছে। দর্শকদের জন্য এখানে কফি হাউস, ফুড কিয়স্ক করছি। আমাদের ইচ্ছে রয়েছে এটিকে ওয়ার্ড হেরিটেজ হিসেবে গড়ে তোলার। কারণ এখানে বহুকিছু রয়েছে।
মমতা এদিন বলেন, পলাশীর যুদ্ধে সিরাজদৌলার পরাজিত হন। বাংলা স্বাধীনতা চলে যায়। তাই ১৭৫৭ থেকে ১৯৪৭ সাল, এইসময়টাকে ধরে একটি সময়ের নাম দেওয়া হয়েছে কারার ওই লৌহ কপাট। আলিপুর জেলে অনেক বিপ্লবী শুধু জেলই খাটেননি বরং তাঁদের ফাঁসিও হয়েছে। স্বাধীনতা আন্দোলন নিয়ে বলতে গেলে অনেক কিছুই বলতে হয়। ববি যা বলছিল তার সঙ্গে আমি একমত। কথাটা হল, নতুন করে আমাদের ভাবতে হচ্ছে। কেন? কারণ রাজনীতির স্বার্থে ইতিহাস বদলে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। নতুন নতুন মতাদর্শ, ব্যাখ্যা চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। উদ্দেশ্য হল, আমাদের তরুণ প্রজন্ম যাতে দেশের স্বাধীনতার লড়াইয়ের কথা জানতে না পারে। তাই এই সময় বড় কাজ হল ইতিহাসকে বাঁচিয়ে রাখা। নেতাজি সম্পর্কিত যত ফাইল ছিল তা ডিজিটাল করা হয়েছে। সেইসব ফাইল সাধারণ মানুষের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে।
দেশের স্বাধীনাতা সংগ্রামের ইতিহাসের কথা বলতে গিয়ে মমতা আরও বলেন, যারা দেশের জন্য বহুকিছু করেছেন তাদের কী স্মরণ করা আমাদের কর্তব্য নয়! নেতায় নেতায় আদর্শে বিরোধ থাকতে পারে কিন্তু সম্মানের দিক থেকে কোনও বিরোধ থাকে বলে আমি মনে করি না। আমার ধর্ম এক, আপনার ধর্ম অন্য হতে পারে কিন্তু আপনার ধর্ম আপনার কাছে, আমার ধর্ম আমার কাছে। কিন্তু মানুষের ধর্ম সবার। নেতারা কেমন হয়? যে নেতা দেশকে লিড করে তিনি নেতা। সব ধর্ম, সব ধর্ম সম্প্রদায়, সব শ্রেণির নেতা হবেন।