ওয়েব ডেস্ক: বিহারের দাগী দুষ্কৃতী। কলকাতায় এসে ভাব জমাচ্ছে পরিচারক সরবরাহ করা লোকেদের সঙ্গে। তাদের হাত ধরেই ঢুকে পড়ছে অভিজাত বাড়ির অন্দরমহলে। তারপর মওকা বুঝে অপারেশন। ভরদুপুরে নিউ আলিপুরে ডাকাতির ঘটনায় উঠে এসেছে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য।
ভর দুপুরে নিউ আলিপুরের অভিজাত এলাকায় ডাকাতির পর পুলিসকে দুষছেন অনেকেই। কিন্তু প্রশ্ন হল, শুধুমাত্র রাস্তায় পুলিসি টহল দিয়ে ঘরের ভিতর ডাকাতি রোখা কি আদৌ সম্ভব? পরিচারক থেকে বিপদ কত ভয়ঙ্কর হতে পারে, বারবার তার সাক্ষী থেকেছে মহানগর। বাড়িতে নতুন কাজের লোক রাখলে থানায় তাঁর বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দিয়ে রাখুন। বারবার সতর্ক করছে লালবাজার। কিন্তু পুলিসকে সহযোগিতার নাগরিক সচেতনতা যে তিমিরে ছিল, সেই তিমিরেই রয়ে গেছে। আর সেই সুযোগটাই কাজে লাগাচ্ছে দুষ্কৃতীরা। নিউ আলিপুরের ঘটনাতেও একই কারণে ভিক্টিম বৃদ্ধা।
সাল ২০০৫-
ক্যামাক স্ট্রিটের মানস সরোবর অ্যাপার্টমেন্টের আটতলায় পরিচারকের হাতে খুন হন বৃদ্ধ বাঙ্কা দম্পতি। খুনী পঞ্চম ওরফে রাই। বাড়ি বিহারের শিমুলতলা। বাঙ্কা দম্পতিকে খুন করে কুড়ি লক্ষ টাকার ডাকাতি সেরে চম্পট দিয়েছিল সে।
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০০৭-
আলিপুরে অভিজাত বহুতলে পরিচারক নিক্কু যাদবের হাতে খুন হন গৃহকর্ত্রী রবিন্দর কউর লুথরা। বিহারের বাঁকা জেলা থেকে এসে লুথরার বাড়িতে পরিচারক হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিল নিক্কু।
১৭ মার্চ ২০০৮-
ম্যান্ডেভিলা গার্ডেনে ডাকাতির উদ্দেশে জোড়া কাঁচি দিয়ে কুপিয়ে খুন ৫৪ বছরের ঊষাচোখানিকে। হত্যাকারী বিহার থেকে আসা পরিচারক কিষাণ।
সাড়া জাগানো এই সব ঘটনার পর কিছুটা হলেও সচেতন হয়েছিল শহরবাসী। শুরু হয়েছিল পুলিস ভেরিফিকেশনের কাজ। সেই উদ্যোগ থিতিয়ে যেতেই উপদ্রব নতুন চেহারায় ফিরে এসেছে। বুধবার নিউ আলিপুরে ডাকাতির তদন্তে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, এর পিছনে কাজ করছে বিহারের মধুবনির একটা গ্যাং।
কীভাবে কাজ করে এই গ্যাং?
শহরের অভিজাত এলাকা বেছে নিয়ে প্রথমে স্থানীয় পরিচারক সার্কেলের সঙ্গে ভাব জমায় দুষ্কৃতীরা।
বাড়িতে পরিচারক সরবরাহ করে, এমন ব্যক্তির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তৈরি করে তারা। সেই সূত্রে জানতে পেরে যায়, কোন বাড়িতে কে কে থাকে, কখন একা থাকে
বিশেষ করে একলা বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের খবর এই সব দুষ্কৃতীদের নখদর্পণে।
গৃহস্থ বাড়ির অন্দরের কত নিখুঁত তথ্য দুষ্কৃতীদের কাছে থাকে, তার বড় প্রমাণ নিউ আলিপুরের ঘটনা। যেখানে প্রথম দিন পরিচারক হিসেবে কাজে যোগ দিয়েই ডাকাতি সেরে ফেলে দুষ্কৃতীরা।