নিজস্ব প্রতিবেদন: ১৭ নম্বর এজলাস। বিচারপতির আসনে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। কালো কোটে কোর্টে ঢুকলেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। হাইকোর্ট পাড়ার 'কল্যাণদা'। ব্যাট করবেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হয়ে। শাসকের রক্তচাপ বাড়িয়ে দেওয়া বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখেই অন্য মেজাজে। কিছুটা কুশল বিনময়, ঈষৎ খোঁচা, অনেকটা সম্ভ্রম। এজলাসে শুরু কুশল-কথন।
কোর্টে 'কল্যাণ-কুশল'
শুক্রবার এজলাসে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় প্রশ্ন করেন "আরে কল্যাণদা কেমন আছেন? "
উত্তরে তৃণমূল সাংসদ তথা আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন "আপনি যেমন রেখেছেন।"
বিচারপতি বলেন "আপনি আমার নামে কী সব বলছেন শুনলাম!"
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "হ্যাঁ বলেছি। আমাকে পাড়লে জেলে ঢুকিয়ে দিন।"
অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, "আরে না না! এমনি বললাম। আমি তো আপনার ভক্ত। আপনার মতো লোক ক'জন আছে?"
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, "এ ভাবে বলবেন না। এটাই আজকে ব্রেকিং নিউজ হয়ে যাবে।
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়, "আমি যখন বার অ্যাসোসিয়েশনে ছিলাম, তখন থেকেই আপনাকে আমি পছন্দ করি। আপনি জানেন তো?"
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, "আমরা কোনও ব্যক্তিগত বিষয় নয়। ব্যক্তিগত সম্পর্ক ভাল রাখাই উচিত। আমি আপনার বিরুদ্ধে যা বলেছি, তা ডিভিশন বেঞ্চে।"
বিচারপতি, "সেটা আপনার অধিকার। অবশ্যই বলবেন।"
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, "রাজনীতি ও ওকালতি দুই ছাড়তে চাই। কিন্তু উপায় নেই। আমার তো টাকা রোজগারের ধান্দা নেই। আমি শ্রীরাধার ভক্ত, যাঁরা জয় শ্রীরাম বলেন তাঁরাও আমার মতো রাম স্তুতি করে না। যাঁদের জন্য জীবনভর করেছি, তাঁদের কাছে আমি খারাপ। যাঁদের জন্য করিনি তাঁদের কাছে ভাল।"
উত্তরে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, "এ ভাবে বলবেন না। যাঁরা জনপ্রতিনিধি তাঁদের আমি ভীষণ গুরুত্ব দিই। আপনি, সুখেন্দুশেখর রায় বা বিকাশদা এটা বলতে পারবেন।"
সিঙ্গুর থেকে শুরু করে একাধিক মামলায় শাসকের ভরসা কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। গ্রুপ ডি'র নিয়োগ দুর্নীতি মামলাতেও কি সেই রেকর্ড ধরে রাখতে পারবেন তিনি? হাইকোর্ট পাড়ায় কান পাতলে এখন সেই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে।