জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: অখিল বিতর্কে সরব মুখ্যমন্ত্রী। ক্ষমা চেয়ে নিলেন তিনি। নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট ভাষায় সাফ জানালেন, 'অখিলের মন্তব্য করা ঠিক হয়নি। অখিলকে দলের তরফে সতর্ক করা হয়েছে। অখিলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে দল। ভবিষ্যতে একই কাজ করলে একই ব্যবস্থা।' পাশাপাশি, অখিলের কুমন্তব্য প্রসঙ্গেই নাম না করে একহাত নিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকেও। সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় উল্লেখ করেন বীরবাহ হাঁসদার নাম। তুলনা টেনে বলেন, 'ঝাড়গ্রামের মেয়ে। সাংস্কৃতিরক বাড়ির মেয়ে। আদিবাসী মেয়ে। তাঁকে যদি কেউ বলে জুতোর নীচে রেখে দেওয়ার মত! সেটা কি খুব রুচিকর? নাকি কাউকে দাঁড়কাকের মত দেখতে বলাটা রুচিকর?' প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েই কড়া ভাষায় তোপ দাগেন বিজেপির উদ্দেশে। বলেন, 'একতরফভাবে ভাষা আক্রমণ করছে বিজেপিও। কুৎসিত কথা বলছে।'
মমতা বলেন, 'আমরা রাষ্ট্রপতিকে সন্মান করি। হাইলি রেসপেক্টেড। অখিলের এমন মন্তব্য করা ঠিক হয়নি। অখিল এটা অন্যায় করেছে। আমি কনডেম করছি। আমি এর জন্য লজ্জিত। আমি ক্ষমা চাইছি। অখিলকে দলের তরফ থেকে সতর্ক করা হয়েছে। এটা আমাদের দলের সংস্কৃতি নয়। যদি ভবিষ্যতে আবার এই ধরনের কিছু হয়, তাহলে দলের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করেই অ্যাকশন নেওয়া হবে। রাষ্ট্রপতিকে আমরা সম্মান করি, রাষ্ট্রপতিকে অবমাননাকর মন্তব্য, অখিলের এই মন্তব্য করা ঠিক হয়নি, অন্যায় করেছে অখিল গিরি।' প্রসঙ্গত, আগেই তৃণমূল দলের তরফে অখিল গিরির মন্তব্যের নিন্দা করে কড়া টুইট বিবৃতি দেওয়া হয়। স্পষ্ট করে দেওয়া হয় যে, তাঁর এই মন্তব্যে অখিল গিরির পাশে নেই দল। টুইটে পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয় যে, দল এই মন্তব্যকে সমর্থন করে না। মহিলাদের বিষয়ে এধরনের কুরুচিকর মন্তব্য একদমই অভিপ্রেত নয়।
শুক্রবার নন্দীগ্রামে অখিল গিরি বলেন, “কী রূপসী! কী দেখতে ভাল! আমরা রূপের বিচার করি না। তোমার রাষ্ট্রপতির চেয়ারকে আমরা সম্মান করি। কিন্তু তোমার রাষ্ট্রপতি কেমন দেখতে বাবা?” যদিও এই মন্তব্য়ের জন্য পরবর্তীতে অনুতপ্ত হন অখিল গিরি। রাষ্ট্রপতিকে নিয়ে বেফাঁস মন্তব্য করে বেকায়দায় পড়ে ক্ষমা প্রার্থনাও করেন রাজ্যের মন্ত্রী। ক্ষমাপ্রার্থী হয়ে তিনি সাফাই দেন, শুভেন্দু অধিকারী তাঁর সঙ্গে এতবার কুমন্তব্য করেছেন যে ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে তিনি একথা বলেছেন। তবে এই মন্তব্যের জন্য তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমাপ্রার্থী।
আরও পড়ুন, TET: প্রভাব খাটিয়ে নম্বরে বদল, চাকরিপ্রার্থীদের গ্রেফতারির পক্ষে মত বিচারকের!
কিন্তু রাষ্ট্রপতির চেহারা নিয়ে অখিল গিরির কটূক্তিতে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। এমনকি জাতীয় স্তরেও সমালোচনার ঝড় উঠেছে। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে নিয়ে কুমন্তব্যের জেরে অখিল গিরিকে চিঠি ধরিয়েছে জাতীয় মহিলা কমিশন। চিঠিতে নিজের মন্তব্যের জন্য লিখিত ক্ষমা চাইতে বলা হয়েছে অখিল গিরিকে। কমিশন যে শুধু অখিল গিরিকে চিঠি ধরিয়েছে, এমনটাই নয়। কমিশন ডিজিপি ওয়েস্ট বেঙ্গলকেও চিঠি দিয়েছে। যেখানে এই ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করে কঠোর ব্যবস্থা নিতেও বলা হয়েছে।