দেবারতি ঘোষ : জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ মেনে রবীন্দ্র সরোবরে আর ছট নয়। আর তা নিয়ে বেজায় ক্ষুব্ধ কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। রবীন্দ্র সরোবরে ছট বন্ধের পিছনে দিল্লির ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে মনে করছেন তিনি। তাঁর কথায়, দিল্লির নির্দেশেই এবার রবীন্দ্র সরোবরে ছট বন্ধ করতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা। বদলে কলকাতার ১০টি অন্য পুকুরে ছট পুজোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
পরিবেশ আদালত নিযুক্ত বিশেষজ্ঞ কমিটি আগেই রবীন্দ্র সরোবরে ছট বন্ধের সুপারিশ করেছিল। সেই সুপারিশের ভিত্তিতেই রবীন্দ্র সরোবরে ছট সহ যে কোনও পুজো-পার্বণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল জাতীয় পরিবেশ আদালত। কিন্তু তারপরেও গত দু'বছর রবীন্দ্র সরোবরে ছট পালন নয়। আর তা নিয়েই বিতর্কের মুখে পড়ে কেএমডিএ। প্রসঙ্গত, রবীন্দ্র সরোবর পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে কেএমডিএ (কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি)। শেষমেশ এবার রবীন্দ্র সরোবরে সম্পূর্ণরূপে ছট বন্ধের পথে হাঁটল কেএমডিএ।
রবীন্দ্র সরোবরের বদলে তাহলে কোথায় হবে ছট? কলকাতা শহর খুঁজে ১০টি পুকুরকে চিহ্নিত করেছে কেএমডিএ। নোনাডাঙা ৩ নম্বর ঘাট, জোধপুর পার্ক জলাশয়, রামধন পার্ক, গোবিন্দন কুট্টি, মাদুরতলা ঝিল, নববৃন্দাবন ঝিল, ১০ নম্বর পুকুর, লালকা পুকুর, কাটজু নগর পুকুর ও রুবি হাসপাতালের পার্শ্ববর্তী জলাশয়কে ছট পুজোর আচার পালনের জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে। ছট পুজোর জন্য এই পুকুরগুলিতে কেএমডিএ-র তরফে আলো, শৌচালয় ও জামাকাপড় বদলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সাধারণ মানুষকে ওয়াকিবহল করতে ইতিমধ্যেই শহরজুড়ে বিভিন্ন জায়গায় বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে।
কেউ যাতে ভুল করেও ছট পুজোর দিন রবীন্দ্র সরোবরে ঢুকে না পড়ে, তাই সেদিন সরোবরের দায়িত্বে থাকবে কলকাতা পুলিস। সরোবরে প্রবেশের জন্য ১৭টি গেট রয়েছে। সেদিন সমস্ত গেট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এদিকে এসবের ফলে যাতে হিন্দিভাষী মানুষদের মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি না হয়, সেই ব্যাপারেও সচেষ্ট কেএমডিএ। কেএমডিএ-র তরফে তাই বার বার-ই প্রচার করা হচ্ছে একটাই কথা। এবার আপনার ঘরের পাশেই সমস্ত সুযোগ-সুবিধা সহ ছট পুজোর আয়োজন করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন, পুর নির্বাচনের আগে নাগরিকদের অভাব-অভিযোগ শুনতে সাজেশন বক্স দেবাশিস কুমারের
ওয়াকিবহল মহলের মতে, সামনের বছরই পুরনির্বাচন। তার আগে হিন্দি ভোটব্যাঙ্ককে কোনওভাবে চটাতে রাজি নয় শাসকদল। এদিকে আবার আদালতের নির্দেশ অমান্য করলেও সমালোচনার মুখে পড়তে হবে। তাই এই পরিস্থিতিতে দুদিকে ভারসাম্য বজায় রাখার নীতি নিয়েই চলতে চায় তৃণমূল কংগ্রেস।