পিয়ালী মিত্র: 'তদন্তে সহযোগিতা করছেন না'। এসএসসি নিয়োগকাণ্ডে ফের জেল হেফাজতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সঙ্গে কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়ও। কতদিন? ৫ অক্টোবর পর্যন্ত। তবে, সংশোধানাগারে গিয়ে অভিযুক্তদের জেরা করার যে আর্জি জানিয়েছিল সিবিআই, সেই আর্জিটি অবশ্য গ্রহণ করল না আদালত।
এসএসসি নিয়োগকাণ্ডে গ্রেফতারির পর প্রথমে ইডি হেফাজতে ছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এমনকী. দু'দফায় বেশ কয়েকদিন কাটিয়েছেন প্রেসিডেন্সি সংশোধানাগারেও। এরপর যেদিন প্রাক্তন পর্ষদ সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করে সিবিআই, সেদিন পার্থ চট্টোপাধ্যায়কেও হেফাজতে নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন জানায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারক।
আরও পড়ুন: Primary Teacher Recruitment: পরীক্ষা না দিয়েই হাতে নিয়োগপত্র! 'বিস্ময়কর' দুর্নীতি প্রাথমিকে
এদিন ফের আদালতে পেশ করা হয় পার্থ চট্টোপাধ্যায়, কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়কে। জামিনের আবেদন জানিয়েছিলেন দু'জনকেই। কিন্তু সেই আবেদন খারিজ করে ধৃতদের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। কেন? শুনানিতে সিবিআইয়ের আইনজীবী জানান, 'তদন্ত সহযোগিতা করছে না পার্থ ও কল্য়াণময়'। ৫ অক্টোবর ফের মামলায় শুনানি। এর আগে, সিবিআই হেফাজতে থাকাকালীন নিয়োগ দুর্নীতির দায় কার্যত কাঁধ থেকে ঝেড়ে ফেলার চেষ্টা করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। জেরায় প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর দাবি, 'ডিপার্টমেন্ট থেকে ফাইল আসত। আমি শুধু সই করতাম। আমার খুব সীমিত ক্ষমতা ছিল। তাঁদের উপর ভরসা রেখেছিলাম'। 'তাঁরা' কারা? কাদের দিকে ইঙ্গিত করছেন পার্থ? তা প্রশ্ন উঠেছিল।
এদিকে এসএসসি নিয়োগকাণ্ডে ইতিমধ্যেই চার্জশিট জমা দিয়েছে ইডি। ইডি-র চার্জশিটে উল্লেখ, 'যেদিন পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করা হয়, সেদিন তাঁর নাকতলার বাড়িতে তল্লাশি। তৎকালীন শিল্পমন্ত্রীর মোবাইল ফোনটি বাজেয়াপ্ত করেন তদন্তকারীরা। ফরেন্সিক পরীক্ষার পর ওই মোবাইল থেকে একটি মেসেজ পাওয়া গিয়েছেন। কোনও এক ব্যক্তি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে অভিযোগ করেছেন, মানিক ভট্টাচার্য যাতা ভাবে টাকা নিচ্ছে। কোভিডের সময়ে কলেজ বন্ধ থাকা সত্ত্বেও ছাত্রদের কাছ থেকে প্রাইভেটে বেড প্রতি ৫০০ টাকা করে নিচ্ছে। নদীয়াতে প্রাইমারি টেট ইন্টারভিউ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু মানিক ভট্টাচার্য চেয়ারম্য়ানকে মার্কস ছাড়া ব্ল্যাঙ্ক ডকুমেন্ট দেওয়ার জন্য় চাপ দিচ্ছে। আবার টাকা নিয়ে করবে। আবার কেস হবে'।
আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: বাংলায় উৎসব শুরু! মহালয়ার ৩ দিন আগেই পুজোর উদ্বোধনে মুখ্যমন্ত্রী
এদিকে গোরুপাচারকাণ্ডে অনুব্রত মণ্ডলকেও ফের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আসানসোল সিবিআই আদালত। এদিন শুনানিতে জামিনে আবেদন জানিয়ে কেষ্ট বলেন, 'আমার বাড়িতে পুজো হয়। আমাকে ধর্মাচরণ করতে দেওয়া হোক। জামিন দেওয়া হোক'। শুধু তাই নয়, শুনানি শেষে আদালত কক্ষে দাঁড়িয়েই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের খোঁজখবরও নেন অনুব্রত। মামলার তদন্তকারী অফিসার সুশান্ত ভট্টাচার্য তাঁকে জানান, 'চা 'বিক্রেতা চন্দনের সঙ্গে মাঝে খারাপ ব্যাবহার করতেন পার্থ। এখন চন্দন ছাড়া চলে না'। এরপর তদন্তকারী অফিসারের কাছে অনুব্রত জানতে চান, 'আপনি কি বোলপুর ভারত সেবাশ্রমকে কোনও নোটিস দিয়েছেন'? এবার মুচকি হেসে উত্তর এড়িয়ে যান তিনি।