জ্যোতির্ময় কর্মকার ও মৌমিতা চক্রবর্তী: তৃণমূল নেতাদের সম্পত্তি মামলা আর শুনতে পারবে না কলকাতা হাইকোর্ট। তৃণমূল নেতাদের সম্পত্তি মামলায় স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। কলকাতা হাইকোর্টে শুনানি চলছিল সম্পত্তি মামলার। এখন তৃণমূল বিধায়ক স্বর্ণকমল সাহা এই মামলায় সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। তাঁরও নাম রয়েছে এই ১৯ জনের তালিকায়। তিনি আবেদন জানান, এটা নিয়ে একটা জনস্বার্থ মামলা কলকাতা হাইকোর্টে চলছে। বিষয়টি সুপ্রিম কোর্ট দেখুক। আজকে মামলাটি ওঠে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ইউ ইউ ললিতের বেঞ্চে। কপিল সিব্বল ও ওয়েস্ট বেঙ্গল স্ট্যান্ডিং কাউন্সিল সুহান মুখোপাধ্য়ায় সওয়াল করেন। তারপরই সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ কলকাতা হাইকোর্টে চলা তৃণমূল নেতাদের সম্পত্তি মামলায় স্থগিতাদেশ জারি করে। মামলাটি এবার শুনবে সুপ্রিম কোর্ট।
কীভাবে বাড়ছে শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীদের সম্পত্তি? এই মর্মে ২০১৭ সালে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয় হাইকোর্টে। মামলা দায়ের করেন জনৈক বিপ্লব কুমার চৌধুরী নামে এক ব্যক্তি। সেই মামলাতেই ইডি-কেও পার্টি করার নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। ২০১১ সালে ভোটের সময় শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীরা সম্পত্তির যে খতিয়ান দিয়েছিলেন, ২০১৬ সালে দেখা যায় তাঁদের সম্পত্তির পরিমাণ অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। সেই হলফনামাকে হাতিয়ার করেই, তারপর তাঁদের সম্পত্তির খতিয়ান খতিয়ে দেখতে দায়ের হয় জনস্বার্থ মামলা।
কে কে আছেন এই ১৯ জন নেতা-মন্ত্রীর তালিকায়? বর্তমান অনেক মন্ত্রী আছেন। আবার কেউ কেউ প্রাক্তন মন্ত্রী। তালিকায় আছে ফিরহাদ হাকিম, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, মলয় ঘটক, গৌতম দেব, অরূপ রায়, শিউলি সাহা, ব্রাত্য বসু, শোভন চট্টোপাধ্য়ায়, অর্জুন সিং, ইকবাল আহমেদ, স্বর্ণকমল সাহা, জাভেদ আহমেদ খান, অমিত কুমার মিত্র, আব্দুর রজ্জাক মোল্লা, রাজীব বন্দ্যোপাধ্য়ায়, সবস্যাচী দত্ত, বিমান বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের নাম। সেইসঙ্গে সুব্রত মুখোপাধ্য়ায় ও সাধন পান্ডের নামও ছিল। তবে দুজনেই প্রয়াত।
আরও পড়ুন, Anubrata Mondal: নেই তথ্যপ্রমাণ, বেকসুর খালাস পেলেন অনুব্রত!
এদিন সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, 'এটা আমাদের নৈতিক জয়। আইনের উপর আমাদের ভরসা আছে। আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ এনেছিল। কেউ কেউ তৃণমূল কংগ্রেসকে কালিমালিপ্ত করতে চেয়েছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় ও তাঁর মন্ত্রীদের গায়ে কাদা ছেটাতে চেয়েছিল। তাদের সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট জানিয়েছে, এটা হয় না। এটা করা যায় না। এই বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্বাচন কমিশনের এক্তিয়ারভুক্ত। তাই নির্বাচন কমিশন যেটা মনে করবে, সেটা করবে। এই সবটার পিছনেই রয়েছে বিজেপির ইন্ধন। প্রত্যেকের সম্মান আছে। কাউকে অসম্মানিত করার অধিকার কারও নেই।'