সৌমিত্র সেন
প্রাচীনকাল থেকেই চলে আসছে পৌষ সংক্রান্তির উৎসব। স্পষ্টভাবে এ সংক্রান্ত কোনও তথ্যনিষ্ঠ ইতিহাস পাওয়া যায়নি। তবে মোটামুটি হাজার বছর ধরে বা তারও আগে থেকে চলে আসছে এই উৎসব। ভারতীয় পুরাণেও এর উল্লেখ আছে।
মকর সংক্রান্তির এই মহা পুণ্যতিথিতেই মহাভারতে পিতামহ ভীষ্ম শরশয্যায় ইচ্ছামৃত্যু বরণ করে নিয়েছিলেন। অন্য মত অনুযায়ী, এই দিনেই দীর্ঘ সময় ধরে চলা দেবতাদের সঙ্গে অসুরদের যুদ্ধ শেষ হয়েছিল। বিষ্ণু অসুরদের বধ করে তাদের কাটা মুন্ডু মন্দিরা পর্বতে পুঁতে দিয়েছিলেন। তাই মকরসংক্রান্তির দিনে সমস্ত অশুভ শক্তির বিনাশ হয়ে শুভ শক্তি প্রতিষ্ঠিত হয় বলে বিশ্বাস করা হয়। আছে আরও এক মত। সূর্য এ দিন নিজের ছেলে মকর রাশির অধিপতি শনির বাড়ি এক মাসের জন্য ঘুরতে গিয়েছিলেন। তাই এই দিনটিকে বাবা-ছেলের সম্পর্কের ক্ষেত্রে অতি তারপর্যপূর্ণ একটি দিন বা মুহূর্ত হিসাবে ধরা হয়।
আসলে 'সংক্রান্তি'র অর্থ সঞ্চরণ বা গমন। সূর্যের এই এক রাশি থেকে অন্য রাশিতে সঞ্চরণ বা গমন করাকেই 'সংক্রান্তি' বলা হয়। সূর্য এ দিনই ধনু রাশি থেকে মকর রাশিতে প্রবেশ করে। আর তার পর থেকেই মকর সংক্রান্তির পর্ব।
পৌষ বা মকরসংক্রান্তি ভারতীয় সংস্কৃতির সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে গিয়েছে। এটি আলাদা করে জড়িয়ে গিয়েছে বঙ্গ সংস্কৃতির সঙ্গেও। পিঠেপুলি উৎসব বা ঘুড়ি ওড়ানোর আচার যোগ হয়ে গিয়েছে এর সঙ্গে। তবে এই লগ্নে ভীষ্মের মৃত্যুবরণ আজও বিশ্বাসীর মনকে বিধুর করে দেয়।
আরও পড়ুন: #মকরসংক্রান্তি: আউনি-বাউনি কোথাও না যেও, ৩ দিন ঘরে বসে পিঠেপুলি খেও!