নিজস্ব প্রতিবেদন: সুন্দর মেদহীন শরীর কে না চায়! শরীর সুস্থ সবল রাখতে, শরীরের নমনীয়তা ও স্ফূর্তি অটুট রাখতে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখাটা অত্যন্ত জরুরি। শরীরের ওজন যদি খুব বেড়ে যায়, সে ক্ষেত্রে নানা সমস্যা দেখা দেয়। অনেক চেষ্টা করে, জিম গিয়ে এবং ডায়েট কন্ট্রোল করলেও অনেক সময় ভুঁড়ি কমতে চায় না। তবে নিয়মিত কয়েকটি মশলা খাতে পারলে তা আমাদের ওজন দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনতে সাহায্য করে।
আমরা রান্নায় নানা রকম মসলা ব্যবহার করি। আমাদের ব্যবহৃত এই সব মসলাগুলোতে রয়েছে বিস্ময়কর কিছু ওষধিগুণ। মসলা শুধু আমাদের খাবারের স্বাদ আর গন্ধই বাড়ায় না, এগুলোতে রয়েছে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতাও যা মেটাবলিজম বাড়াতে সাহায্য করে। আসুন জেনে নেওয়া যাক, কোন কোন মসলা আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করে...
১) দারচিনি: ওজন কমাতে দারচিনি অত্যন্ত কার্যকরি! নিয়মিত একটি নির্দিষ্ট পরিমাণে দারচিনি খেলে খিদে কমে যায়। শুধু তাই নয়, দারচিনি শরীরের জমে থাকা মেদ গলাতে সাহায্য করে। এটি শরীরের সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, তাই ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য এটি অত্যন্ত উপকারি। এ ছাড়াও পেটের রোগ, ইনফ্লুয়েঞ্জা, টায়ফয়েড, টিবি ও ক্যান্সার প্রতিরোধে দারুচিনি অত্যন্ত কার্যকরি।
২) এলাচ: এলাচে রয়েছে নানা রকম রাসায়নিক উপাদান। যেমন: টর্পিন, টপিনিনোল, সিনিওল, এসিটেট, টপিনিল ইত্যাদি। এইসব উপাদান শরীরের ফ্যাটবার্ন করার ক্ষমতা বাড়ায়। ফলে শরীরে ফ্যাট জমে না।
৩) আদা: আদা যে শুধু সর্দি-কাশিতেই উপকারি, তা কিন্তু নয়! এতে রয়েছে আরও অনেক ওষধিগুণ। পেট পরিষ্কার করার ক্ষেত্রে আদা অত্যন্ত কার্যকরি। এটি পাচনতন্ত্রে জমে থাকা খাবার পরিষ্কার করে দেয় ফলে ফ্যাট জমতে পারে না। ফ্যাট না জমলে ওজন এমনিতেই নিয়ন্ত্রণে থাকবে। এ ছাড়া আদার রস শরীরের জমে থাকা চর্বি দূর করতে সহায়তা করে।
৪) হলুদ: হলুদের বিশেষ গুণ এই যে, এটি ফ্যাট টিস্যু তৈরি হতে দেয় না। ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
৫) মৌরি: মৌরি পাচনতন্ত্রের উপকার করে, খিদে কমায়। আর এটি লিভারেরও ক্ষেত্রেও খুব উপকারী। মৌরি মাউথ ফ্রেশনার হিসেবেও অত্যন্ত কার্যকরি।
৬) কাঁচালঙ্কা: কাঁচালঙ্কায় রয়েছে কিউনিক অ্যাসিড, অ্যাকজেলিক অ্যাসিড, অ্যামিনো অ্যাসিড, সাক্সিনিক অ্যাসিড, এস্কার্বিক অ্যাসিড, শিকিমিক অ্যাসিড, ফোলিক অ্যাসিড, সাইট্রিক অ্যাসিড, ম্যালিক অ্যাসিড, মেলানিক অ্যাসিড, আল্ফা-এমিরন, ক্যান্সিডিনা, ক্যারোটিন্স, ক্রিপ্টোক্যানসিন, ফ্ল্যাভনয়েডস প্রভৃতি। এগুলো ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। আর কাঁচালঙ্কার ক্যাপসিসিন খিদেও নিয়ন্ত্রণ করে। একাধিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, কাঁচালঙ্কা বিপাকক্রিয়ার গতি বাড়িয়ে অতিরিক্ত ক্যালরি বার্ন করতে সহায়তা করে।
আরও পড়ুন: প্রতিদিন কফি খাওয়ার অভ্যাস কমায় হৃদরোগ, স্নায়ুরোগের ঝুঁকি, দাবি গবেষকদের
৭) জিরা: বদহজম, খাবারে অরুচি বা হজমের সমস্যায় জিরা অত্যন্ত উপকারি! পাইলসের সমস্যায় মিছরির সঙ্গে জিরা মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়। নিয়মিত জিরা খেলে ওজন কমে। বেশি খাবার খাওয়ার অস্বস্তি থেকেও জিরা-জল মুক্তি দেয়।
৮) ইসবগুল: ইসবগুল পেট পরিষ্কার রাখে, হজম শক্তি বাড়ায়। আর ক্ষুধা অনুভব কমায়। প্রতি রাতে শোয়ার আগে ইসবগুল খেলে ওজন কমবে। অনেক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ দিনে দুবেলা খাবারের ১০ মিনিট পূর্বে তিন চামচ ইসবগুল খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।