জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: আমদাবাদ বিমান দুর্ঘটনা (Ahmedabad Plane Crash) বদলে দিয়েছে তাঁর পেশাটাই। দুর্ঘটনার পর থেকে অটোচালনা ছেড়ে শুধু কফিন-ই বানিয়ে চলেছেন নীলেশ ভাঘেলা। বৃহস্পতিবার দুপুরের আগে পর্যন্ত আমদাবাদের রাস্তায় যাত্রীদের নিয়ে অটো চালাতেন। আর এখন অভিশপ্ত বিমানযাত্রী থেকে দুর্ঘটনায় মৃত হতভাগ্য সাধারণ নাগরিকদের জন্য কফিন বানিয়ে চলেছেন।
'৩ দিন ধরে ২১ ঘণ্টা করে কফিন বানাচ্ছি'
নীলেশ ভাঘেলা জানাচ্ছেন, "আমি এখন অটোচালনা ছেড়ে কাঠমিস্ত্রি হয়ে গিয়েছি। এখনও পর্যন্ত আমি ৮০টা কফিন বানিয়ে ফেলেছি। সেগুলি সব পৌঁছে দিয়েছি। আরও ২০টা কফিন আজ সন্ধ্যার মধ্যে পৌঁছে যাবে। লাল চোখ নিয়েই গত ৩ দিন ধরে ২১ ঘণ্টা করে কাজ করে যাচ্ছি। কফিন বানিয়ে যাচ্ছি।" আমদাবাদের হরি নগর সোসাইটির বাসিন্দা ৪৭ বছরের নীলেশ ভাঘেলার বাড়ির প্রতিটি কোণা এখন কফিন তৈরির ধুলোয় ধুলোময়। ভাঘেলা বলছেন, "আমি কাঠ কাটছি। বাক্স তৈরি করছি। হাসপাতাল থেকে আসা নাগাড়ে ফোন ধরছি। হাসপাতালে কফিন পাঠাচ্ছি। ডেলিভারি শেষ না করা পর্যন্ত বিশ্রাম নিতে পারছি না।"
'অতিরিক্ত আয় নয়, মানবতার সেবা'
নীলেশ ভাঘেলা জানান, তিনি হিন্দু হয়েও তাঁর কফিন তৈরি করা নিয়ে অনেকে প্রশ্নও করেছেন। কিন্তু তিনি সেসবে আমল দিতে চান না। তাঁর কথায়, এটা তাঁর কোনও অতিরিক্ত আয় নয়। তিনি মানবতার সেবা করছেন। তাই যে প্রতিশ্রুতি তিনি দিয়েছেন, নিজের সেই প্রতিশ্রুতি তিনি রাখবেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে একটা বিমান দুর্ঘটনা। আর শয়ে শয়ে মৃত্যু। পোড়া দেহের সারি। দেহ শনাক্তকরণের পর চলছে সেই দেহ প্রিয়জনদের হাতে তুলে দেওয়ার পালা। নীলেশ বাঘেলার তৈরি কফিনেই শেষবারের মতো দেহ পৌঁছে যাচ্ছে হতভাগ্য সেইসব বিমানযাত্রীদের বাড়িতে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতের উড়ান ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বিমান বিপর্যয়। বৃহস্পতিবার আমদাবাদের মেঘানিনগরে টেক অফের ২ মিনিটের মধ্যেই ২৪২ জন যাত্রী নিয়ে ভেঙে পড়ে এয়ার ইন্ডিয়ার AI 171। একজন ছাড়া বাকি সব যাত্রীর মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনায় মোট প্রাণহানি এখনও পর্যন্ত ২৭৫।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)