Home> দেশ
Advertisement

Amit Shah: আডবাণীর রেকর্ডে ভেঙে ইতিহাস শাহর! ৩৭০ ধারা থেকে সিএএ, একাধিক মাইলস্টোন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর...

Amit Shah becomes India's longest-serving Home Minister: অমিত শাহ ইতিহাস লিখলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসাবে। তিনি ছাপিয়ে গেলেন লালকৃষ্ণ আডবাণীকে...

Amit Shah: আডবাণীর রেকর্ডে ভেঙে ইতিহাস শাহর! ৩৭০ ধারা থেকে সিএএ, একাধিক মাইলস্টোন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর...

জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ভারতীয় জনতা পার্টির (BJP) সিনিয়র নেতা অমিত শাহ (Amit Shah) ইতিহাস লিখে ফেললেন। মঙ্গলবার অর্থাত্‍ আজ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নয়া নজির গড়লেন তিনি। লালকৃষ্ণ আডবাণীর (Lal Krishna Advani) রেকর্ড ভেঙে শাহ-ই এখন দেশের সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে দায়িত্ব সামলানো স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

১৯৯৮ সালের ১৯ মাার্চ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে আডবাণী দায়িত্ব নিয়েছিলেন। ছিলেন ২০০৪ সালের ২২ মে পর্যন্ত। ২২৫৬ দিনের কার্যমেয়াদ ছিল আডবাণীর। শাহ চেয়ারে বসেছিলেন ২০১৯ সালের ৩০ মে। ৪ অগস্ট ২০২৫ সালে তিনি ২২৫৮ দিন পূর্ণ করলেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পাশাপাশি, শাহ দেশের প্রথম সমবায় মন্ত্রীও! এর আগে তিনি গুজরাতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও হিসেবেও দায়িত্ব সামলেছেন এবং বিজেপি-র জাতীয় সভাপতির পদেও পাওয়া গিয়েছে তাঁকে।

আরও পড়ুন:  এই ট্রেনে বছরে ৫০৯৫১০ জন চাপেন, রেলের আয় ১৭৬০৬৬৬৩৩৯ টাকা, বন্দে ভারত এক্সপ্রেস নয়!

 
দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে সবচেয়ে বেশি দিন দায়িত্ব সামলেছেন যাঁরা:

 
অমিত শাহ -৬ বছর ৬৫ দিন
লালকৃষ্ণ আডবাণী- ৬ বছর ৬৪ দিন
গোবিন্দ বল্লভ পন্থ- ৬ বছর ৫৬ দিন
রাজনাথ সিং- ৫ বছর ৩ দিন
শঙ্কররাও চবন- ৪ বছর ৩৩০ দিন
শিবরাজ পাতিল- ৪ বছর ১৯১ দিন
পি চিদম্বরম- ৩ বছর ২৪৪ দিন
যশবন্তরাও চবন- ৩ বছর ২২৬ দিন
বুটা সিং-৩ বছর ২০৪ দিন
সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল-৩ বছর ১১৯ দিন
গুলজারিলাল নন্দ- ৩ বছর ৬৯ দিন
কৈলাশনাথ কাটজু- ৩ বছর ৬৬ দিন

 
২০১৯ থেকে একাধিক মাইলস্টোন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর
 
৩৭০ ধারা বাতিল: ৩৭০ ধারা বাতিল, সম্ভবত অমিত শাহের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে কার্যকালের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। ৫ অগস্ট ২০১৯ তারিখে, শাহ রাজ্যসভায় ৩৭০ ধারা বাতিলের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছিলেন। যা পূর্ববর্তী জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যকে বিশেষ স্বায়ত্তশাসিত মর্যাদা প্রদান করেছিল। এর সঙ্গেই রাজ্যটিকে দুটি পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিভক্ত করা হয়- জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখ।
 
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ): স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে শাহের মেয়াদের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক ছিল সেই ২০১৯ সালেই। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন পাস করান তিনি। এই আইনের লক্ষ্যই ছিল পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশ থেকে নির্যাতিত অমুসলিম সংখ্যালঘুদের, বিশেষ করে হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি এবং খ্রিস্টানদের, যারা ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৪ বা তার আগে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন, তাদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দ্রুত প্রদান করা।

নকশালবাদ: বামপন্থী চরমপন্থার বিরুদ্ধে শাহের আগ্রাসী নীতি নকশাল সহিংসতাকে ব্যাপকভাবে হ্রাস করেছে। ২০০৯ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে ৫২২৫টি মৃত্যুর ঘটনা ৬০০-রও কমে নেমে আসে। বামপন্থী চরমপন্থার কারণে ২০১৫ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত নিরাপত্তা কর্মীদের হতাহতের সংখ্যাও ৫৬% হ্রাস পেয়েছে। ২০২৬ সালের ৩১ মার্চের আগে নকশালবাদ নির্মূল করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন শাহ। নকশালবাদের বিরুদ্ধে 'জিরো-টলারেন্স' নীতির অংশ হিসেবে, ২০২৫ সালে এখনও পর্যন্ত ৯০ জন নকশাল নিহত হয়েছে, ১০৪ জন গ্রেফতার হয়েছেন এবং ১৬৪ জন আত্মসমর্পণ করেছেন। ২০২৪ সালে ২৯০ জন নকশালকে নিষ্ক্রিয় করা হয়েছিল। ১০৯০ জন গ্রেফতার হয়েছে এবং ৮৮১ জন আত্মসমর্পণ করেছেন।

সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা: সন্ত্রাসবাদের প্রতি শাহের 'জিরো-টলারেন্স' নীতির ফলে জম্মু ও কাশ্মীরে সন্ত্রাস-সম্পর্কিত মৃত্যুর হার ৭০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে, এবং সামগ্রিক সন্ত্রাসী ঘটনা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। এই অঞ্চলে পর্যটকদের আগমনের সংখ্যা অভূতপূর্ব বৃদ্ধি পেয়েছে, যা পাকিস্তানকে ক্ষুব্ধ করেছে বলেই জানা গিয়েছে। এর প্রতিক্রিয়ায় গত ২২ এপ্রিল শান্তি বিঘ্নিত করার জন্য পহেলগাঁওয়ে নিরীহ পর্যটকদের উপর হামলা চালানো হয়। উপত্যকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে পাথর ছোঁড়ার কোনও ঘটনা ঘটেনি।
 
তিন তালাক এবং ইউসিসি: শাহ তিন তালাক বিলুপ্তি এবং অভিন্ন দেওয়ানি বিধি (ইউসিসি) প্রবর্তনের তত্ত্বাবধানও করেছিলেন।
 
নতুন ফৌজদারি আইন: অমিত শাহ ভারতের ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থার সংস্কারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন, তিনটি যুগান্তকারী আইন প্রণয়নের নেতৃত্ব দিয়েছেন। ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (বিএনএস) ২০২৩, ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা (বিএনএসএস) ২০২৩, এবং ভারতীয় দক্ষ অধিনিয়ম (বিএসএ) ২০২৩। এগুলি যথাক্রমে ঔপনিবেশিক যুগের ভারতীয় দণ্ডবিধি (আইপিসি), ফৌজদারি কার্যবিধি (সিআরপিসি) এবং ভারতীয় প্রমাণ আইন প্রতিস্থাপন করেছে।
 
রাম মন্দির: রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ বিরোধে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের শান্তিপূর্ণ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে শাহ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন এবং অযোধ্যায় রাম মন্দিরের সুশৃঙ্খল পুনর্নির্মাণের তত্ত্বাবধান করেছিলেন।

পুলিস আধুনিকীকরণ: তিনি স্মার্ট পুলিসিং মিশনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, যার লক্ষ্য ছিল পুলিস বাহিনীর মধ্যে সংবেদনশীলতা, গতিশীলতা, জবাবদিহিতা এবং প্রযুক্তি বৃদ্ধি করা। এই ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ করা হয়েছে। ২০১৯ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে ৮,২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে, যা দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করেছে।

জম্মু ও কাশ্মীরের সীমানা নির্ধারণ: ৩৭০ ধারা বাতিলের পর, শাহ জম্মু ও কাশ্মীরের সীমানা নির্ধারণ প্রক্রিয়া তত্ত্বাবধান করেন, যা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিধানসভা নির্বাচন পরিচালনার জন্য একটি অপরিহার্য পদক্ষেপ।

আরও পড়ুন: ভারতের অর্থনীতিতে ট্রাম্পের শুল্ক-গুঁতো! কীসের দাম বাড়বে, কীসেরই বা কমবে?
 
এনপিআর এবং এনআরসি: তিনি জাতীয় জনসংখ্যা নিবন্ধন (এনপিআর) আপডেট করার উপর জোর দিয়েছিলেন, যা দেশব্যাপী জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন (এনআরসি) বাস্তবায়নের দিকে একটি মৌলিক পদক্ষেপ হিসাবে বিবেচিত হয়েছিল।
 
অন্যান্য: ঘন ঘন বোমা বিস্ফোরণের যুগের অবসান ঘটেছে, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে জম্মু ও কাশ্মীরের বাইরে কোনও বড় সন্ত্রাসী হামলার খবর পাওয়া যায়নি। উত্তর-পূর্বে অসংখ্য শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে, যা কয়েক দশক ধরে চলা বিদ্রোহের অবসান ঘটিয়েছে এবং এই অঞ্চলে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে এনেছে।

 

(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)

 

Read More