জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: হাসপাতালে ঢুকে আইসিইউ-তে শুয়ে থাকা রোগীকে গুলিতে ঝাঁঝরা। সেই চন্দন মিশ্র খুনেই নতুন তথ্য সামনে এসেছে। চন্দন মিশ্র নিজেও এক সাজাপ্রাপ্ত খুনি ও গ্যাংস্টার, যাকে বৃহস্পতিবার পটনার পারস হাসপাতালে দিনে-দুপুরে গুলি করে হত্যা করা হয়। তদন্তকারীদের মতে, মোট ছয়জন হামলাকারী দুটি মোটরসাইকেলে করে হাসপাতালে পৌঁছায় চন্দন মিশ্রকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে। তাদের মধ্যে পাঁচজন, যারা প্রত্যেকেই অস্ত্রধারী ছিল। তারা হাসপাতালের ভেতরে ঢোকে আর একজন সহযোগী বাইরেই অপেক্ষা করতে থাকে।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, হামলার আগে ছয়জন হামলাকারী হাসপাতালের কাছের একটি গলিতে জড়ো হয়ে পরিকল্পনা করছে। যে বাইরের দায়িত্বে ছিলেন, তাকে হেলমেট পরা অবস্থায় দেখা গিয়েছে। হাসপাতালের মধ্যেকার একটি ফুটেজ ভাইরাল হয়েছে। সেখানে দেখা গিয়েছে, পারস হাসপাতালের করিডোরে পাঁচজন সশস্ত্র ব্যক্তি চন্দন মিশ্রের ঘরে ঢুকছেন। তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালাচ্ছে। হামলার পর, পাঁচজন হামলাকারীই হাসপাতাল চত্বর থেকে পালিয়ে গেল। চন্দন মিশ্রের শরীরে একাধিক গুলি লেগেছে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর।
Patna, Bihar: CCTV footage from Paras Hospital shows five armed assailants entering the facility, shooting dead Chandan Mishra, an accused in multiple murder cases, who was on parole and undergoing treatment, and then fleeing the scene pic.twitter.com/1XJe26gge3
— IANS (@ians_india) July 17, 2025
এক জাতীয় সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, এই ঘটনা নেতৃত্ব দেয় তৌসিফ বাদশা নামের এক পরিচিত অপরাধী। যার বিরুদ্ধে আগেও জেল খাটার রেকর্ড রয়েছে। জানা গিয়েছে, তৌসিফ বাদশা হাসপাতালের প্রতিটি কোনা ভালোভাবে চিনত, কারণ তার এক ঘনিষ্ঠ সঙ্গীর দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসার সময় সে বারবার ওই হাসপাতালে যাতায়াত করেছে।
হাপাতালের ইমারজেন্সি গেট দিয়ে ঢোকার সময়েই নিরাপত্তারক্ষীরা তাদের থামায়, গেট পাস চায়। কিন্তু পাঁচজনের কারোর কাছেই কোনও গেট পাস ছিল না। এরপর তারা চুপিসারে ওপিডি-র রাস্তা দিয়ে ভিতরে ঢুকে সরাসরি রুম নম্বর ২০৯-এ চলে যায়, যেখানে চন্দন মিশ্র ভর্তি ছিল। সূত্র আরও জানায়, হামলাকারীরা চন্দন মিশ্র কোন রুমে রয়েছেন এবং হাসপাতালের ভিতরের নকশা আগে থেকেই বিশদভাবে অবগত ছিল।
তারা আরও জানায়, রুম ২০৯-এর তালা আগেই খারাপ ছিল এবং ভেতর থেকে সঠিকভাবে বন্ধ করা যেত না, ফলে হামলাকারীদের জন্য ভিতরে ঢোকা আরও সহজ হয়ে যায়। পুরো ঘটনাটি অত্যন্ত সুচারুভাবে পরিকল্পিত ছিল বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। পরবর্তী সময়ে উদ্ধার হওয়া সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, হামলাকারীরা হাসপাতালে গুলি চালিয়ে বেরিয়ে এসে বাইরে দাঁড়িয়ে উল্লাস করছে, তারপর সকাল ৭টা ১৫ মিনিট নাগাদ মোটরসাইকেলে করে দ্রুত পালিয়ে যায়।
ঘটনার পর কেন্দ্রীয় রেঞ্জ (পাটনা)-এর ইনস্পেক্টর জেনারেল জিতেন্দ্র রানা বলেন, "চন্দন মিশ্র নামে এক অপরাধী হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি ছিলেন এবং প্রতিদ্বন্দ্বী গ্যাংয়ের সদস্যরা তাকে গুলি করে হত্যা করে। নিরাপত্তারক্ষীরা এতে জড়িত ছিল কি না, তা এখনই উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। এই দিকটিও আমরা গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করব।" ৩৬ বছর বয়সী চন্দন মিশ্র, বক্সার জেলার বাসিন্দা, বেউর জেলে সাজা খাটছিলেন এবং চিকিৎসার জন্য প্যারোলে মুক্তি পেয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। হাসপাতালের ঘরের মধ্যেই তাকে একাধিকবার গুলি করা হয় এবং ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)