জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: দীঘা ( Digha) বনাম পুরী (Puri)। ধাম নাকি মন্দির, জগন্নাথের মূর্তি তৈরির কাঠই বা কোথা থেকে এসেছে? অক্ষয় তৃতীয়ায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) দীঘার জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনের পরই এসব বিতর্ক দানা বাঁধতে শুরু করেছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকার দীঘার জগন্নাথ মন্দিরকে 'জগন্নাথ ধাম' হিসাবে উল্লেখ করার পরেই বাংলা বনাম ওড়িশার মহাসংগ্রাম শুরু হয়েছে। এমনকী ওড়িশা সরকার (Odisha government) তদন্তের নির্দেশও দিয়েছে।
কী নিয়ে এত বিতর্ক?
সারা দেশে চারটি ‘ধাম’ ধর্মীয় এবং ঐতিহাসিক ভাবে স্বীকৃত। কেন দিঘার মন্দিরকে ধাম বলা হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ওডিশার মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন সেখানকার বিশিষ্টজনেদের একাংশ। দীঘার মন্দিরের প্রতিমা নির্মাণে পুরীর নবকলেবরের অতিরিক্ত কাঠ ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে, ২০১৫ সালের 'নবকালেবর' -এর থেকে অবশিষ্ট 'নিম' কাঠও ব্যবহার করেছিলেন। তারপরেই এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করলেন ওড়িশার আইনমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ হরিচন্দন।
নির্দেশে বলা হয়েছে, ‘যদি এই ঘটনায় কেউ দোষী প্রমাণিত হন বা জেনেশুনে এমন কাজ করে থাকেন, তবে রাজ্য সরকারের অনুমতি নিয়ে শাস্তির বিধান দেওয়া যেতে পারে।’ এদিকে 'ধাম' শব্দটি হিন্দু ধর্মতত্ত্বে কেবলই সম্মানসূচক নয়। ঐতিহ্যগতভাবে, এটি হিন্দু ধর্মের সঙ্গে সম্পর্কিত পবিত্র স্থানগুলিকেও বোঝায়। অষ্টম শতকের দার্শনিক এবং ধর্মতত্ত্ববিদ আদি শঙ্করাচার্য পুরীকে, ভারতের চার ধামের একটি। বাকিগুলি-বদ্রীনাথ, দ্বারকা এবং রামেশ্বরম। এই ধাম তকমা বিনিময় করা যায় না।
চিঠিতে কী লেখা?
শ্রী জগন্নাথ মন্দির প্রশাসনের প্রধান প্রশাসক অরবিন্দ কুমার পাধীকে লেখা এক চিঠিতে ওড়িশার আইনমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ হরিচন্দন, 'নবনির্মিত দীঘা মন্দিরের নাম জগন্নাথ ধাম রাখা, নতুন মন্দিরের অভিষেক অনুষ্ঠানে পুরীর সেবাকারীদের অংশগ্রহণ এবং নবকলেবার রীতিনীতির উদ্বৃত্ত পবিত্র নিম কাঠ ব্যবহার করে নতুন মন্দিরের জন্য প্রতিমা তৈরির' বিষয়ে "অভ্যন্তরীণ তদন্ত" করার আহ্বান জানিয়েছেন। এই বিষয়গুলিকে "সম্পূর্ণরূপে অগ্রহণযোগ্য" বলে অভিহিত করে তিনি বলেন যে "জগন্নাথ সংস্কৃতি সম্পর্কে পরস্পরবিরোধী তথ্য" ভক্ত এবং ৪.৫ কোটি ওড়িয়া মানুষের অনুভূতিতে আঘাত করেছে। তিনি পুরী মন্দির প্রশাসনকে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বিবেচনা করার জন্য অনুরোধ করেছেন।
এ বিষয়ে 'দ্বৈতাপতি নিযোগ'-এর সম্পাদক রামকৃষ্ণ দাসমহাপাত্র বা রাজেশ দ্বৈতাপতি বলেন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমন্ত্রণে আমি দিঘা মন্দিরে অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলাম। আমি পুরো প্রক্রিয়াটি পর্যবেক্ষণ করেছি। কিন্তু আমি কখনও বলিনি যে পুরীর মন্দিরের কাঠ দিঘায় প্রতিমা তৈরির জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল।' তাঁর দাবি, পরিকল্পিতভাবে বিকৃত করে খবর করা হয়েছে।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)