জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: বিজনেস পার্টনারকে খুনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত কেরালার নার্স নিমিশা প্রিয়াকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে ইয়েমেন সরকার। সেই ফাঁসি কার্যকর হবে ১৬ জুলাই। ২০২০ সালে ইয়েমেনের ট্রায়াল কোর্ট নিমিশাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার পর থেকেই ভারত কূটনৈতিক পর্যায়ে ইয়েমেনের সঙ্গে দর কাষকাষি করছিল। কিন্তু তার কোনও ফল মেলেনি। এনিয়ে একটি মামলা হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। সেই মামলায় দাবি করা হয় কেন সরকার নিমিশাকে বাঁচাতে কিছু করছে না। সেই মামলায় কেন্দ্র সুপ্রিম কোর্টে আজ জানিয়ে দিল, সরকারের হাত-পা বাঁধা, নিমিশাকে বাঁচাতে বেশি কিছু করার নেই। সরকার তার সাধ্য মতো চেষ্টা করেছে। 'ব্লাড মানি'-র বিষয়টি একবারেই নিমিশার পরিবারের বিষয়।
কেন্দ্র সরকারের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল করেন অ্যাটর্নি জেনারেল আর ভেঙ্কটারামানি। আদালতে তিনি বলেন, সরকারের বেশি কিছু করার নেই। ইয়েমেনের মতাদর্শ অনুযায়ী সরকার অসহায়। আর ব্লাড মানির বিষয়টি একেবারে নিমিশার পারিবারিক বিষয়। একটা জায়গা পর্যন্ত সরকার যাওয়ার এক্তিয়ার ছিল। ততদূর সরকার গিয়েছে। ইয়েমেন দুনিয়ার অন্যান্য জায়গার মতো নয়। বিষয়টিকে প্রকাশ্যে এনে এটিকে জটিল করতে চাই না। আমরা সেখানকার কিছু সেখের সঙ্গে যোগাযোগ করছি ব্যক্তিগত পর্যায়ে।
নিজস্ব ক্লিনিক খোলার জন্য তালাত আবদো মাহদি নামে এক ইয়েমেনিকে পার্টনার হিসেবে নেন নিমিশা। কিন্তু তালাত নিমিশার পাসপার্ট হাতিয়ে নেয়। পাসপোর্ট-সহ অন্যান্য নথি উদ্ধারের জন্য তালাতকে একবার ঘুমের ইঞ্জেকশন দেয় নিমিশা। কিন্তু তার ডোজ বেশি হয়ে যাওয়ায় মৃত্যু হয় তালাতের। এরপর নিমিশা যখন ইয়েমেন ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছিলেন তখন তাকে গ্রেফতার করে পুলিস। এটি ২০১৭ সালের ঘটনা। ওই গ্রেফতারের পর শুরু হয় নিমিশার বিচারপর্ব। ২০১৮ সালে খুনের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয় নিমিশাকে। ২০২০ সালে নিমিশাকে মৃত্যুদণ্ড দেয় ইয়েমেনের ট্রায়াল কোর্ট। ২০২৩ সালে সুপ্রিম কোর্টও মৃত্যুদণ্ডের আদেশ বহাল রাখে। ওই বছরের শেষ দিকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশে সিলমোহর দেন ইয়েমেনের প্রসিডেন্ট রাসাদ আল আলিমি। এর পর খোলা রয়েছে ব্লাড মানি নেওয়ার বিষয়টি।
খুনের মামলার ক্ষেত্রে আদালত মৃত্যুদণ্ড দিলে পড়ে থাকে এই সুযোগ। এক্ষেত্রে মৃতের আত্মীয়রা যদি টাকার বিনিময় সাজাপ্রাপ্তকে ক্ষমা করতে চায় তাহলে তাতে অনুমতি দেয় সরকার। ওই টাকাকেই বলে ব্লাড মানি বা 'দিয়া'।
আরও পড়ুন-ভারী বৃষ্টিতে তোলপাড় হবে এইসব জেলা, দুর্যোগ কমবে কবে?
ইতিমধ্যেই তালাতের পরিবারকে ১ মিলিয়ন ডলার দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ভারতীয় মুদ্রায় ওই টাকার পরিমাণ ৮৫ কোটি ৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা। পাশাপাশি তালাতের এক ভাইকে সৌদি আরব বা আরব আমিরশাহীতে প্রতিষ্ঠিত করে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু ওই টাকা ও ভাইয়ের চাকরির অফারও নিতে রাজি হয়নি তালাতের পরিবার।
আজ সুপ্রিম কোর্টে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ওখানে কী হচ্ছে তা আমরা জানতে পারছি না। এটি এমন একটি বিষয় যেখানে সরকারকে বেশি কিছু করতে বলা যেতে পারে। সবেমিলিয়ে এটি খুবই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)