জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: পহেলগাঁও কাণ্ডের জেরে 'অপারেশন সিঁদুর' (Operation Sindoor) নিয়ে পাকিস্তানের (Pakistan) উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে ভারত। অপারেশন সিঁদুরের দ্বিতীয় দিনে লাহোর ও করাচিতে তীব্র আক্রমণ হানে ভারত। আর সেই আক্রমণ সে শানায় ইজরায়েলের তৈরি হারপ ড্রোন (Israeli-made Harop drones) দিয়ে।
কী এই হারপ ড্রোন?
এই ড্রোনের ১০০০ কিমি পর্যন্ত অপারেশনাল রেঞ্জ। হারপ একসঙ্গে ২৩কেজি বিস্ফোরক বহন করতে পারে। মারণ এই হারপে রয়েছে ইলেকট্রো-অপটিক্যাল, ইনফ্রা রেড, ফরওয়ার্ড-লুকিং ইনফ্রা রেড সেন্সর, কালার সিসিডি ক্যামেরা এবং অ্যান্টি-ব়্যাডার হোমিং প্রযুক্তি। উন্নত প্রযুক্তির কারণে হারপ লয়টারিং মিউনিশন স্বয়ংক্রিয়ভাবে লক্ষ্যস্থান খুঁজে বের করতে পারে এবং ট্র্যাক করতে পারে। অপারেটর চাইলে যুদ্ধ-পরিস্থিতি বুঝে যে কোনও সময় এর হামলা বাতিল করতে পারে এবং পরে সেটা আবার ওড়াতেও পারে।
অপারেশন সিঁদুর
মঙ্গলের রাতে ভারতের আক্রমণ আছড়ে পড়ে পাকিস্তানের মাটিতে। পাকিস্তান কিছু বুঝে ওঠার আগেই মাত্র ২৫ মিনিটের অপারেশনে কাজ শেষ করে ভারত। ভারতের অপারেশনের পরে পাকিস্তানও পালটা হামলা করে। লাভ হয়নি! ভারতীয় সেনাবাহিনী পাকিস্তানের সব আক্রমণই ব্যর্থ করে দেয় বলে খবর।
বুধবার রাতে এবং বৃহস্পতিবার সকালেও ভারতের কয়েকটি জায়গার সেনা ছাউনিতে ড্রোন এবং মিসাইল হামলার ছক কষে পাকিস্তান। ভারতের ১৫টি শহরকে টার্গেট করে তারা। কিন্তু ভারতীয় সেনাবাহিনীর সতর্কতার কারণে তাতেও ব্যর্থ হয় পাকিস্তান! কী করে? ভারতীয় সেনাবাহিনী রাশিয়ার S-400 অর্থাৎ 'সুদর্শন চক্র এয়ার ডিফেন্স মিসাইল সিস্টেমে'র সাহায্যে পাকিস্তানের সব ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করে দেয়।
সুদর্শন চক্র
কী এই সুদর্শন চক্র, এস-৪০০ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম?
বায়ুসেনার S-400 ট্রায়াম্ফ এয়ার ডিফেন্স এই সিস্টেমটি ভারত কিনেছে রাশিয়া থেকে। এর নাম দিয়েছে-- 'সুদর্শন চক্র'! সিস্টেমটি ১৯৯০-এর দশকে রাশিয়ার আলমাজ সেন্ট্রাল ডিজাইন ব্যুরোর তৈরি। ২০০৭ সাল থেকে রাশিয়ান সেনাবাহিনীতে রয়েছে।
ভারত ২০১৮ সালে রাশিয়ার সঙ্গে ৫.৪৩ বিলিয়ন ডলারের এক চুক্তির মাধ্যমে এটি কিনেছে। ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ৩৫,০০০ কোটি টাকা! অন্তত ৬০০ কিলোমিটার দূর থেকে উড়ে আসা ক্ষেপণাস্ত্র চিহ্নিত করতে পারে এই সুদর্শন চক্র। ৪০০ কিলোমিটার দূর থেকে ক্ষেপণাস্ত্র নিষ্ক্রিয় করতে পারে। ভারতের চার জায়গায় এই সিস্টেম মোতায়েন রয়েছে। রয়েছে পঞ্জাবে এবং পাঠানকোটে, রাজস্থান এবং গুজরাতে।
পাকিস্তান ও 'পাক অধিকৃত কাশ্মীরে' হামলা
পরশু রাতে পাকিস্তান ও 'পাক অধিকৃত কাশ্মীরে' হামলা চালিয়েছিল ভারত। বেছে বেছে পাকিস্তানের জঙ্গিঘাঁটিগুলি উড়িয়েছে তারা। জৈশ লস্কর, হিজবুল মুজাহিদিনের ডেরায় হামলা চালিয়েছে। বড় রকমের স্ট্রাইক ঘটেছে ভাওয়ালপুর মুরিদকে অঞ্চলে। যেখানে প্রাথমিক ভাবে ২৫ থেকে ৩০ জঙ্গি নিকেশ হয় ভোরের দিকে। মাত্র ২৫ মিনিটে ভারত ঝাঁপিয়ে পড়ে পাকিস্তানের উপর। হামলা মোট ন'টি জায়গায়। ভারত তার আক্রমণে খুবই সংযম দেখিয়েছে। সাধারণ মানুষের বসবাসের কোনও জায়গায় তারা আক্রমণ শানায়নি। সবটাই বেছে-বেছে, জঙ্গিদের ঘাঁটিতে। শীর্ষ সূত্র বলছে, এই স্ট্রাইকে মারা গিয়েছে জৈশ-ই-মহম্মদ, লস্কর-ই-তৈবা, হিজবুল মুজাহিদিনের জঙ্গিরা। খবর তেমন মিলছে না। তবে, যতটুকু জানা যাচ্ছে, পাকিস্তানে ১০০-র কাছাকাছি মৃত্যু ঘটেছে। আর ক্রস-ফায়ারের জেরে ভারতের অন্তত তিনজন মারা গিয়েছেন। পোস্ট-স্ট্রাইক এক বিবৃতি দিয়েছে ভারতীয় সেনা। এক্স হ্যান্ডেলে একটি ভিডিয়োও শেয়ার করেছে তারা এবং লিখেছে 'জাস্টিস ইজ সার্ভড'! ইনটেলিজেন্স এজেন্সি কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তার হিসেব করছে। টার্গেট লোকেশনও খুঁজে দেখছে। প্রাথমিক হিসেবে ৮০-৯০ জন জঙ্গি মারা গিয়েছে। তবে অপারেশন সিন্দুরের জেরে মাসুদ আজহারের পরে মারা গিয়েছে আব্দুল মালিক মুদাসসিরের মতো ভয়ংকর জঙ্গিরাও। এদের পোশাকি নাম এইচভিটি-- এরা লস্কর-ই-তৈবার হাই ভ্যালু টেররিস্ট।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)