জ্যোতির্ময় কর্মকার ও পিয়ালি মিত্র: ঝাড়খণ্ডের ৩ বিধায়ক গ্রেফতার কাণ্ডে রাজ্য সিআইডির তদন্ত নিয়ে উত্তাল রাজ্যসভা। অভিযুক্তের বাড়িতে তল্লাশির এক্তিয়ার নিয়ে রাজ্য পুলিসের সঙ্গে সংঘাতে দিল্লির পুলিস। রাজধানীতে সিআইডির তদন্তে বাধা দিল দিল্লি পুলিস। এর প্রতিবাদে রাজ্যসভা থেকে ওয়াক আউট করেছে তৃণমূল কংগ্রেস।
গত শনিবার হাওড়ার পাঁচলায় ৪৯ লাখ টাকা-সহ গ্রেফতার করা হয় ঝাড়খণ্ডের ৩ বিধায়ককে। অভিযোগ ওই ৩ কংগ্রেস বিধায়ক ঝাড়খণ্ডে সরকার ফেলার চক্রান্ত করছিলেন। এর জন্য তাঁরা দেখা করেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার সঙ্গে। এক্ষেত্রে মধ্যস্থতা করেছিলেন দিল্লির বাসিন্দা সিদ্ধার্থ মজুমদার। সেই সিদ্ধার্থ মজুমদারের খোঁজে দিল্লি গিয়েই রাজধানীর পুলিসের কাছে বাধা পেল রাজ্য সিআইডি।
বুধবার সার্চ ওয়ারেন্ট নিয়ে দক্ষিণ দিল্লিতে সিদ্ধার্থ মজুমদারের বাড়িতে অভিযান চালাতে যায় সিআইডি। এর জন্য সিআইডি অফিসাররা যোগাযোগ করেন আর কে পুরম পুলিসের সঙ্গে। তারা সিআইডিকে এসকর্টও করেন। কিন্তু যখন তারা রেইড করতে বেরিয়ে পড়েন সেই সময় দিল্লি পুলিসের তরফে ফোন করে সিআইডিকে বলা হয় তল্লাশির অনুমাদন প্রত্যাহার করা হল। সিআইডির তদন্তকারীরা এখন আর কে পুরম থানায়। তাঁদের দাবি, এরকম হলে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যপ্রমাণ আর পাওয়া যাবে না।
আজ গোটা বিষয়টি রাজ্য সভায় তোলেন তৃণমূল সাংসদরা। তাঁদের দাবি, একবারে নিয়ম মেনেই সিদ্ধার্থ মজুমদারের বিরুদ্ধে অভিযান হয়েছিল। আর কে পুরম থানাকে ওই তল্লাশির ব্যাপারে আগাম খবর দেওয়া হয়েছিল। থানা থাকে এসকর্টও দেওয়া হয়। কিন্তু রেইডের আগেই তল্লাশির অনুমোদন বাতিল করা হয়। আজ রাজ্যসভায় ইউএপিএ নিয়ে আলোচনা চলছিল। সেইসময় বিষয়টি তোলার চেষ্টা করেন তৃণমূল সাংসদরা। কিন্তু রাজ্যসভার অধ্যক্ষ বিষয়টি তোলার কোনও সুযোগ দেননি। এর প্রতিবাদেই রাজ্যসভা থেকে ওয়াকআউট করেন তৃণমূল সাংসদরা।
সার্চ ওয়ারেন্ট থাকার পরও অভিযানে বাধা দিয়েছে। বিষয়টি ট্যুইট করে জানিয়েছে রাজ্য সিআইডি। তাদের কার্যত দিল্লি পুলিস আটক করেছে এমন কথাও উঠছে। এনিয়ে দিল্লি পুলিস তেমন কিছু বলেনি। তবে গোটা ঘটনা নিয়ে দিল্লি রওনা দিয়েছেন সিআইডির ৩ অফিসার।
কে এই সিদ্ধার্থ মজুমদার?
উল্লেখ্য, ঝাড়খণ্ডে সোরেন সরকারকে ফেলে দেওয়ার জন্য জন্য পাঁচলায় গ্রেফতার ৩ বিধায়ক চেষ্টা করছিলেন। এমনটাই অভিযোগ উঠছে।ঝাড়খণ্ডের এক কংগ্রেস বিধায়কের অভিযোগ, সরকার ভাঙার জন্য তাঁকে ১০ কোটি টাকা টোপ দেওয়া হয়েছিল। ওই দশ কোটির অগ্রিম দেওয়ার জন্যই তাঁকে কলকাতায় ডাকা হয়েছিল। ঝাড়খন্ডে সরকার ফেলতে সেই 'ষড়যন্ত্র' মামলায় মঙ্গলবার সিদ্ধার্থ মজুমদারের নামে লুক আউট সার্কুলারও ইস্যু করেছে সিআইডি। ধৃত তিন বিধায়ককে জেরা করেই উঠে আসে সিদ্ধার্থ মজুমদারের নাম। ২০ জুলাই ও গত শুক্রবার গুয়াহাটিতে যে বৈঠকে হয়, সেখানে মধ্যস্থতাকারী হিসাবে ছিলেন দিল্লির বাসিন্দা এই সিদ্ধার্থ মজুমদার।
রাজ্য সিআইডির অফিসার অরিজ্ত ভট্টাচার্য এনিয়ে জি ২৪ ঘণ্টাকে বলেন, সার্চ ওয়ারেন্ট নিয়ে এসেছিলাম। সেই অনুযায়ী আমরা এখানে দিল্লি পুলিসকে জানাই। তাদের কাছে থেকে এসকর্ট নিয়ে সিদ্ধার্থ মজুমদারের বাড়িতে যাই। সার্চ যথন শুরু হতে যাচ্ছে সেইসময় ফোন করে থানা থেকে ডাকা হয়। দিল্লির কোনও সিনিয়র পুলিস অফিসার আমাদের ডেকে পাঠান। আমাদের বলা হয় এখন থানায় চলুন, পরে আসবেন।
আরও পড়ুন-নতুন মন্ত্রীদের শপথে উপস্থিত থাকবেন শুভেন্দু? জোর গুঞ্জন