জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ধ্বংসস্তূপে পরিণত কেদার কল্প মন্দির (Kalp Kedar Temple)। কখনও হিমাচল, কখনও উত্তরাখণ্ড। ক্লাউডবার্স্ট, ফ্ল্যাশফ্লাডে, বৃষ্টি-ধসে ব্যতিব্যস্ত বিস্তীর্ণ হিমালয়। মঙ্গলবার ভয়ংকর প্লাবন (devastating flood) ঘটল ক্ষীর গঙ্গায়। ধুয়েমুছে গিয়েছিল ধারালি গ্রাম (Kheer Ganga river in Dharali)। গঙ্গোত্রীধামে যেতে (Gangotri Dham) এখানে থামেন তীর্থযাত্রীরা। হরশিলের কাছেই এই ধারালি।
কোথায় ধস?
ভয়ংকর প্লাবন উত্তরাখণ্ডের ক্ষীরগঙ্গায়। ভয়ংকর ক্লাউডবার্স্টে ভেসে গিয়েছে ধারালি গ্রাম। গঙ্গোত্রী ধামে যেতে গেলে এখানে থামেন তীর্থযাত্রীরা। ভয়াল বন্যায় এই ধারালির ২৫টির মতো হোটেল-হোমস্টে ধ্বংস হয়ে গিয়েছে বলে খবর। ১০ থেকে ১২ জন শ্রমিক এই ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে আছেন বলে আশঙ্কা। এক স্থানীয় ব্যক্তি রাজেশ পানওয়ার বলেছেন, ক্ষীরগঙ্গার ক্যাচমেন্ট এরিয়ায় এই ক্লাউডবার্স্টের ঘটনা ঘটেছে। আর তে থেকেই এই ভয়াল ধ্বংসকামী প্লাবনের সৃষ্টি!
ডুবল মন্দির!
বন্যায় ধারালি মার্কেটের বিপুল ক্ষতি হয়েছে। চারিদিকে শুধু ধ্বংসস্তূপ। লোকজন ঘরবাড়ি ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। ক্ষীরগঙ্গার ধারেই আছে প্রাচীন কল্পা কেদার মন্দির। সেই মন্দিরও ঢাকা পড়ে গিয়েছে। ক্ষীরগঙ্গার ধারের এই মন্দির হিমালয়ের অতি প্রাচীন শিবমন্দির। ঘরবাড়িবাগানের পাশাপাশি মঙ্গলবারের ক্লাউডবার্স্টে ক্ষতি হয়েছে কল্প কেদার মন্দিরেরও।
কল্প কেদার রহস্য
এই মন্দির আগেও দেখেছে ধ্বংস। ১৯৮০ সালে এটি পুনরাবিষ্কৃত হয়েছিল। এখানকার শিবমন্দিরটি এবং শিবের মূর্তিটি ঠিক যেন কেদারের রেপ্লিকা! সেই মহিষপৃষ্ঠের মতো মূর্তি এখানে! এই মন্দিরটিও যেন লোকচক্ষুর অন্তরালে থেকেছে চিরকাল। কিন্তু তাতে তার মাহাত্ম্য় বেড়েছে বই কমেনি। প্রথাসম্মত পঞ্চকেদারের পাঁচমন্দিরের একটি নয় এটি। কিন্তু তা সত্ত্বেও স্থানীয় বাসিন্দা ও তীর্থযাত্রীদের কাছে এর মূল্য এতটুকু কমেনি। বলা হয়, আদি শঙ্করাচার্য এই মন্দির পুনরুদ্ধার ও পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এবং তিনিই এখানে প্রথম পুজো করেন!
হিমালয়ে বারবার
প্রসঙ্গত, এবার বর্ষায় হিমালয়ে বারবার অঘটন ঘটেছে। কখনও উত্তরাখণ্ডে কখনও হিমাচলে। হিমাচলের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুখু খুবই শঙ্কিত ছিলেন এ নিয়ে। সেখানে কাজে নেমে পড়েছে স্পেশাল টিম। টিমটি খুঁজবে, বর্ষায় বারবার বিপর্যয় কেন হিমাচলে? পাঁচজনের এই সেন্ট্রাল টিমটির নেতৃত্বে ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি অ্যাডভাইসর কর্নেল কেপি সিং। হিমাচলে এবার ভয়াবহ এই ক্লাইডবার্স্টগুলিতে কত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, সেই হিসেব করার জন্য অমিত শাহ এই টিম পাঠাবেন বলে কথা দিয়েছিলেন। মাত্র ১৫ মিনিটেই ভোলবদলে গিয়েছিল নদীর। আচমকা বিপুল জল নেমে এসেছিল নদীখাতে! কাছাকাছি ছোট্ট একটি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র ছিল। কয়েকজন কর্মী নিকটস্থ অঞ্চলেই থাকতেন। জলস্তর যখন বাড়তে থাকে তখনই সকলে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। ভয়াবহ জলস্রোত টেনে নিয়ে চলে যায় বেশ কয়েকজনকে। কত জন ভেসে গিয়েছেন? সংখ্যাটা এখনও পরিষ্কার নয়। দুজন মারা গিয়েছেন, তাঁদের শনাক্তও করা গিয়েছে। এবারের ক্লাউডবার্স্টের মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে হিমাচলের কুলুর সাইঞ্জ ভ্যালিতে। এই ক্লাউডবার্স্টের ঠিক পরেই সেখানে স্থানীয় এক নদীখাত-- জিভ নালায়-- ভয়ংকর স্রোত নেমে আসে। সঙ্গে সঙ্গে জারি হয় সতর্কতা। ভয়ংকর এই জলপ্রবাহের একটি ভিডিয়োও সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মে ঘুরছে। তাতে দেখা গিয়েছে, কী ভয়ংকর ভাবে বইছে জলধারা! দেখে আঁতকে উঠতে হয়! জল যখন ধেয়ে আসছিল, তখন সেই দৃশ্য দেখে ভয়ে চিৎকার করছিলেন স্থানীয় লোকজন। সমস্ত ঝোপঝাড়, গাছপালা জলের তোড়ে মাটি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে এলোমেলো ভাবে ভেসে যাচ্ছিল। ঠিক সেই সময়েই স্থানীয় একটি নদীতে বন্যাও নেমেছিল। সব মিলিয়ে পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি ঘটেছিল।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)