জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: উত্তর প্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং বিএসপি (BSP) সুপ্রিমো মায়াবতীর (Mayawati) ভাগ্নি তাঁর শাশুড়ি, হাপুর পৌর কাউন্সিলের চেয়ারপারসন পুষ্পা দেবী, শ্বশুর শ্রীপাল সিং সহ সাতজনের বিরুদ্ধে যৌতুক নেওয়া, শারীরিক, মানসিক ও যৌন নির্যাতনের মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, অভিযুক্তরা যৌতুক হিসেবে ৫০ লক্ষ টাকা এবং ইন্দিরাপুরমে একটি ফ্ল্যাট দাবি করছিল। এর সঙ্গে সে তাঁর ভাসুর এবং শ্বশুরের বিরুদ্ধে ধর্ষণের চেষ্টা এবং মারধরের অভিযোগও করেছে। পুলিস কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় আদালতের নির্দেশে এই মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়েছে।
মামলা দায়েরের পর, বিএসপি জেলা সভাপতি ডঃ এ কে কারদম অভিযুক্ত দম্পতি এবং তাঁদের ছেলেকে দল থেকে বহিষ্কার করেছেন। দায়ের করা প্রতিবেদনে মায়াবতীর ভাগ্নি জানিয়েছেন যে, ২০২৩ সালের ৯ নভেম্বর রামলীলা মাঠের কাছে ব্যাংক কলোনির বাসিন্দা পুষ্পা দেবীর ছেলে বিশালের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। পুষ্পা দেবী বর্তমানে বিএসপি থেকে হাপুরের পৌরসভার সভাপতি। অভিযোগ, বিয়ের পরপরই, নির্যাতিতার স্বামী বিশাল, শ্বশুর শ্রীপাল সিং, শাশুড়ি পুষ্পা দেবী, ভগ্নিপতি ভূপেন্দ্র ওরফে মনু, শ্যালিকা নিশা, শ্যালিকা শিবানী, মামা-শ্বশুর অখিলেশ মিলে গাজিয়াবাদের ইন্দিরাপুরমে একটি ফ্ল্যাট এবং ৫০ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবি করতে শুরু করে। মায়াবতীর ভাগ্নির দাহি তাঁর স্বামী তাঁকে হুমকি দিতেন কারণ তাঁর পিসি মায়াবতী বহুজন সমাজ পার্টির প্রধাণ। মায়াবতীর ভাগ্নির দাবি, তাঁর স্বামী বিশাল বলেন, 'তোমার কাছে অনেক টাকা আছে। তুমি একটা ফ্ল্যাট আর ৫০ লক্ষ টাকার ব্যবস্থা করো'। এই কথার প্রতিবাদ করলে অভিযুক্তরা তাঁকে মারধর শুরু করে। অভিযুক্তরা হুমকি দিতে থাকে যে, কেউ যদি এ বিষয়ে অভিযোগ করে, তাহলে তাঁদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হবে।
এফআইআরে অভিযুক্ত স্বামী, শ্বশুর এবং ভাসুরের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ করেছেন মায়াবতীর ভাগ্নি। তিনি বলেছেন যে বিয়ের আগেও তাঁর স্বামী তাঁর শরীর গঠনের জন্য স্টেরয়েড ইনজেকশন নিতেন, যার কারণে তিনি পুরুষত্বহীন হয়ে পড়েন। এরপর তিনি তাঁর থেকে আলাদা থাকতে শুরু করে। সন্তান নেওয়ার জন্য, তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকেরা তাঁকে তাঁর ভাসুরের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের জন্য চাপ দিত।
২০২৫ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি রাতে, তার শ্যালক ভূপেন্দ্র ওরফে মনু এবং শ্বশুর শ্রীপাল সিং তাঁকে নির্মমভাবে মারধর করেন। অভিযুক্তরা তাঁকে ধর্ষণের চেষ্টাও করে। ২০২৫ সালের ১৮ মার্চ, তিনি তাঁর পরিবারের কাছে এই ভয়ংকর অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করেন। এরপর পরিবার তাঁর শ্বশুরবাড়িতে পৌঁছায়।
আরও পড়ুন- Ajker Rashifal | Horoscope Today | Rashifal Hanuman Jayanti 2025: নতুন চাকরি! উপচে পড়বে ধন-দৌলত, হনুমান জয়ন্তীর বিশেষ যোগে কপাল খুলবে এই রাশিদের...
নির্যাতিতার অভিযোগ, ১৭ মার্চের ঘটনার পর তিনি তাঁর পরিবারের সঙ্গে থানায় গিয়েছিলেন। কিন্তু, পুলিশ রিপোর্টটি নথিভুক্ত করতে চায়নি। ২০২৫ সালের ২১শে মার্চ তিনি এসপির কাছে অভিযোগ করেন। কিন্তু এর পরেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তিনি ন্যায়বিচারের জন্য আদালতের দ্বারস্থ হন। সিও জিতেন্দ্র কুমার শর্মা বলেন, আদালতের নির্দেশে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সকলের বিরুদ্ধে একটি প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
এই ঘটনার পর, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়, বিএসপি জেলা সভাপতি ডঃ এ কে কর্দম বিএসপি সুপ্রিমোর নির্দেশে পুষ্পা দেবী, শ্রীপাল এবং ছেলে বিশালকে বিএসপি থেকে বহিষ্কার করেন। এই ঘটনাটি রাজনৈতিকমহলেও আলোচনার বিষয়বস্তু হয়ে উঠেছে। আসলে, পুষ্পা দেবী বিএসপির টিকিটে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। তাঁর স্বামী শ্রীপাল আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত ছিলেন। এমন পরিস্থিতিতে দল থেকে তাঁর বহিষ্কার তাঁর রাজনৈতিক কেরিয়ার শেষ করে দিতে পারে। প্রসঙ্গত, মায়াবতীর পরিবারে মোট নয় ভাইবোন রয়েছে। তাদের মধ্যে ছয় ভাই আছেন - সিদ্ধার্থ, নরেশ, সুভাষ, টিটু, রাজকুমার এবং আনন্দ কুমার। দিল্লির একটি পাঁচতারা হোটেলে ধুমধাম করে বিয়ে হয়েছিল তাঁর ভাগ্নির। এই ঘটনায় তুমুল শোরগোল উত্তর প্রদেশে।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)