জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ৬৫ বছর বয়সী একজন অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা এস. বিজয়ন তামিলনাড়ুর তিরুভন্নামালাই জেলার আরুলমিগু রেণুকাম্বাল অম্মান মন্দিরকে প্রায় ৪ কোটি টাকার সম্পত্তি দান করেছেন। কিন্তু এর কারণ জানলে অবাক হয়ে যাবেন। সম্পত্তির উত্তরাধিকার নিয়ে তাঁর কন্যাদের কাছে অপমানিত হয়েছেন তিনি। কারণ সেটাই। অন্তত এমনটাই জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষক।
তিনি এই সিদ্ধান্ত নেন, কারণ দীর্ঘদিন ধরে উত্তরাধিকার নিয়ে তাঁর কন্যাদের সঙ্গে বিবাদ চলছিল। যাতে তিনি নিজেকে অবহেলিত মনে করেছেন। কন্যাদের কাছে আঘাতও পেয়েছেন বলে দাবি। কেরালা রাজ্যের অরণি শহরের কাছাকাছি কেশবপুরম গ্রামে বসবাসকারী বিজয়ন মন্দিরে যান হাতে নিয়ে দুটি সম্পত্তির দলিল। একটি মন্দিরের কাছাকাছি অঞ্চলের, যার মূল্য ৩ কোটি টাকা এবং অপরটি ১ কোটি টাকার।
২৪ জুন দুপুর ১২টা ৩০ মিনিট নাগাদ, যখন মন্দির কর্তৃপক্ষ দানবাক্স খুলে গোনার কাজ শুরু করেন, তখন তারা দেখতে পান যে সেই বাক্সে প্রায় ৪ কোটি টাকার মূল সম্পত্তির আসল দলিলের বান্ডিল রাখা আছে। এইচআরঅ্যান্ডসিই (HR&CE) দফতরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রতি দুই মাস অন্তর চার থেকে পাঁচজন মন্দিরকর্মীর একটি দল মন্দিরে জমা পড়া দানের টাকা গোনার কাজ করে। মন্দিরটিতে মোট ১১টি দানবাক্স (হুণ্ডি) রয়েছে।
এরকমই এক নিয়মিত গোনার সময়, তারা মন্দিরের মূল মণ্ডপের সামনে রাখা হুণ্ডি খুললে কয়েন ও নোটের সঙ্গে তারা আসল সম্পত্তির দলিলও পেয়ে চমকে ওঠেন। হাতে লেখা নোটও ছিল যার সঙ্গে। মন্দিরের কার্যনির্বাহী আধিকারিক এম. সিলাম্বরাসন ব্যাখ্যা করেন, শুধুমাত্র দলিলগুলো দানবাক্সে ফেলা মানেই এই নয় যে মন্দির স্বয়ংক্রিয়ভাবে সেই সম্পত্তির মালিক হয়ে যাবে। মন্দিরের আইনগত মালিকানা অর্জনের জন্য, ভক্তকে দফতরে গিয়ে দানের বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে নথিভুক্ত করতে হবে।
জানা গিয়েছে, বিজয়ন ছোটবেলা থেকেই রেণুকাম্বাল অম্মানের একনিষ্ঠ ভক্ত। তদন্ত চলাকালীন মন্দির কর্তৃপক্ষ জানতে পারে যে, স্ত্রীর সঙ্গে মনোমালিন্যের পর তিনি প্রায় ১০ বছর ধরে একা বসবাস করছিলেন এবং এই সময়ে পরিবার থেকে কোনওরকম সাহায্য পাননি। আরও জানা যায়, গত কয়েক মাস ধরে তাঁর কন্যারা তাঁর ওপর চাপ সৃষ্টি করছিলেন যেন তিনি তাঁদের নামে সম্পত্তি লিখে দেন।
মন্দির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, হুণ্ডিতে পাওয়া দুটি সম্পত্তির দলিল মন্দিরের কাছাকাছি ১০ সেন্ট জমি এবং একটি একতলা বাড়ির জন্য। তাঁরা আরও জানান, আপাতত দলিলগুলো বিজয়নের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব নয়, কারণ বিষয়টি ঊর্ধ্বতন এইচআরঅ্যান্ডসিই (HR&CE) আধিকারিকদের জানানো হয়েছে এবং তাঁরাই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন। ততদিন পর্যন্ত বিভাগ এই দলিলগুলো সুরক্ষিত অবস্থায় সংরক্ষণ করবে।
বিজয়ন বলেন, “আমি মন্দির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে আইন মেনে আমার সম্পত্তি আনুষ্ঠানিকভাবে মন্দিরের নামে লিখে দেব। আমি আমার সিদ্ধান্ত ফিরিয়ে নেব না। আমার সন্তানরা আমার দৈনন্দিন প্রয়োজনের জন্যও আমাকে অপমান করেছে।” কিন্তু বর্তমানে পরিবার সেই সম্পত্তি ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করছে বাকি সদস্যরা।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)