নিজস্ব প্রতিবেদন: ভূমধ্যসাগর দিয়ে পাড়ি দিচ্ছে এক জলযান। আর তার ডেকে দাঁড়িয়ে আছেন এক তরুণ ভারতীয়। হঠাৎই তাঁর চোখ আটকে গেল সমুদ্রবক্ষে। দেখলেন নীল একটা আলো ঠিকরে উঠছে জলের বুক থেকে। তাঁর মাথায় খেলে গেল বিদ্যুৎ। শুরু হতে চলল ভারতীয় বিজ্ঞানের এক নতুন যুগ।
কেন হঠাৎ এই ভূমিকা? আসলে আজ, সোমবার জাতীয় বিজ্ঞান দিবস। প্রতি বছরই এই ২৮ ফেব্রুয়ারি দিনটি বিজ্ঞানদিবস হিসেবে উদযাপিত হয়। কিন্তু এত দিন থাকতে কেন এই ২৮ ফেব্রুয়ারিতেই জাতীয় বিজ্ঞান দিবস উদযাপিত হয়? এর পিছনে রয়েছে 'রামন এফেক্ট'। ভারতীয় পদার্থবিজ্ঞানী সি ভি রামন ১৯২৮ সালে এই এফেক্ট আবিষ্কার করেন (আবিষ্কারের দিনটি ছিল ২৮ ফেব্রুয়ারিই)। এ জন্য ১৯৩০ সালে তিনি পদার্থে নোবেল পুরস্কার জেতেন।
কিন্তু কী এই রামন এফেক্ট? তার সঙ্গে ভূমধ্যসাগরেরই-বা কী যোগ?
'রামন এফেক্ট' বা 'রামন স্ক্যাট্যারিং' আলোর বিচ্ছুরণ সংক্রান্ত এক আবিষ্কার। কলকাতায় 'ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কাল্টিভেশন অফ সায়েন্স'-য়ে বসে সি ভি রামন এই যুগান্তকারী কাজটি করেন। আলো যখন কোনও বস্তুর উপর ফেলা হয় তখন সেটি কীরকম তরঙ্গদৈর্য্যে ছড়িয়ে পড়ে, বা বলা ভাল, ভেঙে গিয়ে বিচ্ছুরিত হয়, সেটাকে ব্যাখ্যা করে এই রামন এফেক্ট। বি
কিন্তু কলকাতা নয়, বিষয়টি রামন প্রথম খেয়াল করেন ১৯২১ সালে, ইউরোপ যাওয়ার পথে ভূমধ্য়সাগরে। সেখানে সাগরের জলে নীল আলোর বিচ্ছুরণ দেখে তাঁর মনে প্রথম এই ভাবনাটা আসে। তিনি মার্কারি ল্যাম্প ও বরফের টুকরো নিয়ে ল্যাবরেটরিতে কাজ শুরু করেন। তারপর ১৯২৮ সালে এ সংক্রান্ত পেপার প্রকাশ করেন।
আরও দুই বিজ্ঞানী এই বিষয় নিয়ে কাজ করেছিলেন। দেখতে গেলে সি ভি রামনের আগেই তাঁরা এটা খেয়াল করেছিলেন। তাঁরা হলেন-- রাশিয়ান পদার্থবিজ্ঞানী গ্রিগরি ল্যান্ডসবার্গ ও লিওনিড ম্যান্ডেলস্টাম। কিন্তু ১৯২৮ সালে রামন যখন তাঁর পেপার প্রকাশ করেছিলেন, তাঁরা করেছিলেন এর কয়েকমাস পরে। ফলে প্রথম কৃতিত্বের অধিকারী হয়ে রইলেন সি ভি রামনই।
আরও পড়ুন: National Science Day: জাতীয় বিজ্ঞান দিবস কেন ২৮ ফেব্রুয়ারিতেই উদযাপিত হয়?