নিজস্ব প্রতিবেদন: "...এখন যৌবন যার, যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়..." কবি হেলাল হাফিজের জনপ্রিয় কবিতার এই পংক্তিটি খানিক বদলে নিয়ে বলা যেতে পারে, এখন সরকারি চাকরির স্বপ্ন যার, যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়। শুনে অবাক লাগলেও ভারতের একটি সংসদীয় স্থায়ী কমিটি সম্প্রতি এমনটাই সুপারিশ করেছে। কমিটির সুপারিশ, এখন থেকে দেশের কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের কোনও পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে ৫ বছরের জন্য বাধ্যতামূলকভাবে সেনাবাহিনীতে (নৌ/স্থল/বায়ু) কাজ করতে হবে।
সূত্রের খবর, সংসদীয় স্থায়ী কমিটিটি চাইছে তাদের দেওয়া এই সুপারিশের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় কর্মীবর্গ ও প্রশিক্ষণ মন্ত্রক একটি প্রস্তাব তৈরি করে সরকারের কাছে জমা দিক। কমিটির ধারণা, এই সুপারিশ কার্যকর হলে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে এই মুহূর্তে যে বিপুল শূন্যপদের সমস্যা রয়েছে, তার সমাধান হবে। উল্লেখ্য, বর্তমানে শুধু স্থল সেনাতেই অফিসার পদে ৭ হাজার এবং সাধারণ পদে ২০ হাজার শূন্যপদ রয়েছে। পাশাপাশি, বায়ুসেনা ও নৌসেনা বাহিনীতে শূন্যপদের মোট পরিমাণ ৩০,৩০০।
প্রসঙ্গত, কেবল রেলমন্ত্রকেই ৩০ লক্ষ কর্মী চাকরি করেন। এছাড়া সবকটি অঙ্গরাজ্যের কর্মী সংখ্যা যোগ করলে অঙ্কটি প্রায় ২ কোটিতে পোঁছবে। আর তাই এই সব পদে পরবর্তীকালে নিয়োগের ক্ষেত্রে সেনাবাহিনীতে ৫ বছরের চাকরি নিশ্চিত করতে পারলে লোকবল কম থাকায় দেশের নিরাপত্তার আলগা সুতো ঠাস বুনোটে পরিণত হবে বলে মনে করা হচ্ছে। পাশাপাশি, কর্মজীবনের প্রথম ৫ বছর সেনাবাহিনীতে কাজ করলে কর্মীরা অনেক বেশি শৃঙ্খলাপরায়ন এবং কর্মঠ হবে বলেও দাবি ওই সংসদীয় স্থায়ী কমিটিটির।
জানা যাচ্ছে, কমিটি এই সুপারিশ প্রথমে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকে পাঠিয়েছিল। কিন্তু নির্মালা সীতারামনের দফতর এ বিষয়ে খুব একটা গুরুত্ব না দেওয়ায় কিঞ্চিত অখুশি কমিটি। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক গোটা বিষয়টি কর্মীবর্গ ও প্রশিক্ষণ মন্ত্রকের উপর চাপিয়ে দিয়েছে বলে খবর। কিন্তু যে বিভাগই প্রস্তাব পেশ করুক তাতে আপত্তি নেই কমিটির। তারা কেবল চায়, দেশের নিরাপত্তার বিষয়টি সুনিশ্চিত হোক।
কিন্তু, ভারতে এমন আইন জারি হলে তা সাধারণ ভোট দাতাদের উপর কী প্রভাব ফেলবে তা নিয়ে সন্দিহান ওয়াকিবহাল মহল। অনেকেই মনে করছে, এত বড় রাজনৈতিক ঝুঁকি সহসা কোনও সরকারই নিতে চাইবে না।