Home> দেশ
Advertisement

Allahabad High Court: প্রাইভেট হাসপাতালগুলো রোগীদের ভাবছে ATM মেশিন! ডাক্তারির একমাত্র লক্ষ্য কি শুধুই রোজগার? হাইকোর্টের বেনজির তোপ...

Medical Negligence Case: ২০০৭ সালের ২৯শে জুলাই উত্তর প্রদেশের দেওরিয়ায় একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল, যেখানে অভিযোগ করা হয় যে একজন গর্ভবতী মহিলাকে একটি নার্সিং হোমে ভর্তি করা হয়েছিল। অভিযোগ করা হয়েছিল যে, ডাক্তার অপারেশন করতে পাঁচ ঘন্টা দেরি করেছিল, যার ফলে ভ্রূণ মারা গিয়েছিল।

Allahabad High Court: প্রাইভেট হাসপাতালগুলো রোগীদের ভাবছে ATM মেশিন! ডাক্তারির একমাত্র লক্ষ্য কি শুধুই রোজগার? হাইকোর্টের বেনজির তোপ...

জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: চিকিৎসায় গাফিলতি (Medical Negligence)  সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানিতে এলাহাবাদ হাইকোর্ট (High Court) সম্প্রতি একটি কড়া মন্তব্য করেছে। আদালত বলেছে যে বেসরকারি হাসপাতালগুলো (Private Hospitals) রোগীদের 'ATM'-এর মতো ব্যবহার করে। 

আদালতের পর্যবেক্ষণ: 

আদালত আরও উল্লেখ করেছে, কিছু ডাক্তার ও হাসপাতাল মানুষের জীবন বাঁচানোর চেয়ে টাকা উপার্জনকে বেশি প্রাধান্য দেয়। তাদের কাছে চিকিৎসার মান বা রোগীর সুস্থতার চেয়ে আর্থিক লাভ অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এই পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে আদালত বেসরকারি চিকিৎসা ব্যবস্থার বাণিজ্যিকীকরণের (commercialization) ওপর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

হাইকোর্টের এই মন্তব্য এমন এক সময়ে এলো, যখন দেশজুড়ে বেসরকারি হাসপাতালগুলোর বিরুদ্ধে অতিরিক্ত বিল এবং চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগ বাড়ছে।

হাইকোর্টের মন্তব্য:  

চিকিৎসার অবহেলার অভিযোগে ২০০৮ সালের একটি মামলা খারিজ করার জন্য এক চিকিৎসকের দায়ের করা আবেদন খারিজ করে এলাহাবাদ হাইকোর্ট মন্তব্য করেছে যে, বেসরকারি হাসপাতাল/নার্সিং হোমগুলো রোগীদের 'গিনিপিগ/এটিএম' হিসেবে ব্যবহার করছে, শুধুমাত্র অর্থ আদায়ের জন্য।

অভিযোগ করা হয়েছিল যে, ডাক্তার শুধুমাত্র অবহেলাই করেননি, বরং ৮,৭০০ টাকা বিল করার পরেও অতিরিক্ত ১০,০০০ টাকা দাবি করেছিলেন। তিনি ডিসচার্জ স্লিপ দিতেও অস্বীকার করেছিলেন। ড. অশোক কুমার রায়ের দায়ের করা আবেদন খারিজ করে বিচারপতি প্রশান্ত কুমার মন্তব্য করেছেন, 'যে কোনো চিকিৎসক, যারা যথাযথ যত্ন ও সতর্কতার সঙ্গে তাদের পেশা চালিয়ে যাওয়া উচিত। কিন্তু সেইসব ডাক্তারদের, যারা সঠিক সুবিধা, ডাক্তার এবং পরিকাঠামো ছাড়াই নার্সিং হোম খুলে রোগীদের প্রলুব্ধ করে শুধু তাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করার জন্য তাদের লাইসেন্স।'

ঘটনার সূত্রপাত: 

২০০৭ সালের ২৯শে জুলাই উত্তর প্রদেশের দেওরিয়ায় একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল, যেখানে অভিযোগ করা হয় যে একজন গর্ভবতী মহিলাকে একটি নার্সিং হোমে ভর্তি করা হয়েছিল। অভিযোগ করা হয়েছিল যে, ডাক্তার অপারেশন করতে পাঁচ ঘন্টা দেরি করেছিল, যার ফলে ভ্রূণ মারা গিয়েছিল। পরিবারের সদস্যরা আপত্তি জানালে, ডাক্তারের কর্মচারীরা তাদের মারধর করে বলে অভিযোগ করা হয়।

শুনানির সময়, ওই প্রসূতির আইনজীবী যুক্তি দেন যে, ড. রায়ের রোগীর চিকিৎসা করার জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসা-যোগ্যতা ছিল। ডাক্তারের তরফ থেকে যুক্তি দেওয়া হয়েছিল যে, মেডিকেল বোর্ডের জমা দেওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে কোনও চিকিৎসা অবহেলা প্রমাণিত হয়নি। অভিযোগকারীর আইনজীবী বলেন, ভর্তির সময় রোগী স্থিতিশীল অবস্থায় ছিলেন, তবুও নার্সিং হোমে অ্যানাস্থেটিস্ট না থাকায় অস্ত্রোপচার বিলম্বিত হয়েছিল।

এলাহাবাদ হাইকোর্টের যুগান্তকারী রায়: 

উভয় পক্ষের কথা শোনার পর, আদালত চিকিৎসার অবহেলার ক্ষেত্রে ডাক্তারদের সুরক্ষাসংক্রান্ত দুটি মামলার কথা উল্লেখ করে। ড. সুরেশ গুপ্ত বনাম এনসিটি দিল্লি সরকার এবং জ্যাকব ম্যাথিউ বনাম পাঞ্জাব রাজ্যের মামলার সুপ্রিম কোর্টের রায় উল্লেখ করে আদালত জানায় যে, এই সুরক্ষা তখনই প্রযোজ্য হতে পারে যদি চিকিৎসা পেশাজীবীরা তাদের দায়িত্ব দক্ষতার সাথে পালন করে থাকেন। আদালত আরও যোগ করেছে যে, রোগীকে চিকিৎসা করার সময় একজন ডাক্তার যদি সাধারণ যত্ন না নেন তবে ফৌজদারি দায়বদ্ধতা সৃষ্টি হয়।

আরেকটি ঘটনা: 

উত্তরপ্রদেশে ৯৫ বছর বয়সী এক মহিলার মৃত্যুতে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যেখানে তার পরিবার চিকিৎসার অবহেলার অভিযোগ করেছে। আরেকটি উল্লেখযোগ্য মামলায় 'দীর্ঘস্থায়ী প্রসব'-এর কারণে ভ্রূণের মৃত্যু হয়েছে, যার ফলে এলাহাবাদ হাইকোর্ট ফৌজদারি কার্যধারার অনুমতি দিয়েছে।

প্রাইভেট হাসপাতালের কদর্য রূপ: 

বেসরকারি হাসপাতালগুলো রোগীদের 'এটিএম মেশিন'-এর মতো ব্যবহার করছে বলে এলাহাবাদ হাইকোর্টের কড়া মন্তব্যটি এমন একটি মামলা থেকে এসেছে যেখানে একজন ডাক্তার অস্ত্রোপচার বিলম্বিত করেছিলেন, যার ফলে ভ্রূণের মৃত্যু হয়। আদালত ফৌজদারি অভিযোগ বাতিল করতে অস্বীকার করে এটিকে অবহেলার একটি সুস্পষ্ট কাজ বলে মনে করে।

বিচারপতি প্রশান্ত কুমার ড. অশোক কুমারের মামলাটির সভাপতিত্ব করেন, যিনি একজন নার্সিং হোমের মালিক। তিনি একজন গর্ভবতী মহিলাকে অ্যানাস্থেটিস্ট ছাড়াই অস্ত্রোপচারের জন্য ভর্তি করেছিলেন। অ্যানাস্থেটিস্ট কয়েক ঘন্টা পরে আসার সময় দেখা যায়, গর্ভের শিশুটি মারা গেছে। আদালত উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে যে, এই ধরনের অনুশীলন সাধারণ হয়ে উঠছে, যেখানে বেসরকারি নার্সিং হোমগুলো পর্যাপ্ত ডাক্তার বা পরিকাঠামো ছাড়াই রোগীদের প্রলুব্ধ করে, তারপর তাদের "গিনিপিগ/এটিএম মেশিন"-এর মতো ব্যবহার করে টাকা আদায় করে।

আরও পড়ুন: Kannur Jail crime case: রোমহর্ষক! ক্রাচে ভর দিয়ে হাঁটতে হয়! ধর্ষণ-খুনে দোষী 'বিকলাঙ্গ' ক্রিমিনাল জেলের ২৫ ফুটের দেওয়াল টপকে...

আরও পড়ুন: Contexual Sex age reduce: 'বাচ্চারা এখন লুকিয়ে সেক্স করছে, সঙ্গমের বয়স ১৮ থেকে কমিয়ে ১৬ করা হোক!' সুপ্রিম কোর্টে সওয়ালের ঝড়...

 

 

(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)

 

Read More