ওয়েব ডেস্ক: সাধারণত অসমে NDFB জঙ্গিদের টার্গেটে থাকে অ-বোড়োরা। বালজান বাজারে হামলা হয়েছে বোড়োদের ওপর। কেন এই ছকভাঙা হামলা? সম্ভবত বিজেপির ভোট সমীকরণ ভাঙার লক্ষ্যেই এই হামলা।
ঘড়িতে সময় তখন সাড়ে বারোটা। বাজারের মধ্যে আচমকাই গুলিবৃষ্টি। গ্রেনেড বিস্ফোরণ। শুক্রবার দুপুরে NDFB জঙ্গিদের এমনই ভয়াবহ হামলার সাক্ষী কোকরাঝাড়।
কিন্তু, বোড়ো অধ্যুষিত তেনালি বাজার, বালাজানের মতো জায়গায় কেন হামলা চালাল জঙ্গিরা? এমন জায়গায় কেন হামলা যেখানে এলোপাথাড়ি গুলির শিকার বোড়োরাই? পরিসংখ্যান বলছে গুরুতর আহত ও মৃতদের অধিকাংশই বোড়ো।
NDFB-র ইতিহাস বলছে, তাদের নিশানায় সবসময়ই থাকে সংখ্যালঘু কিংবা অ-বোড়ো মানুষজন। আগের বেশিরভাগ হামলায় এদেরই টার্গেট করেছে NDFB। তেনালি বাজার থেকে ২ কিলোমিটার দক্ষিণেই মুসলিম ও অ-বোড়ো অধ্যুষিত এলাকা। সেই জায়গার বদলে কেন তেনালি বাজারে হামলা চালাল NDFB জঙ্গিরা?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন তেনালি বাজার বেছে নেওয়া পিছনে রয়েছে পরিকল্পনা। বোড়ো ল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা BTA স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার প্রধান হাগ্রামা মাহিলারি। মাহিলারি নিজেও একসময়ের বোড়ো জঙ্গি। বর্তমানে অসমে বিজেপির জোটসঙ্গী। মাহিলারিকে সামনে রেখে বোড়ো ভোটব্যাঙ্ককে কাছে টানার চেষ্টা করছে বিজেপি। তাই মাহিলারিকে চ্যালেঞ্জ করে বিজেপি সরকারকে বার্তা দিতেই হামলার জন্য তেনালি বাজারকে বেছে নিয়েছে NDFB ।
প্রথম কারণ যদি হয় রাজনৈতিক, দ্বিতীয় কারণ অবশ্যই অর্থনৈতিক। ২০১৪-র ডিসেম্বরে কোকরাঝাড়, শোনিতপুর, চিরাংয়ে হামলার পর লাগাতার NDFB বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে সেনা। এখনও পর্যন্ত ২৫জন শীর্ষ নেতার মৃত্যু হয়েছে। গ্রেফতার ২৫৩ জন ক্যাডার। অভিযানের জেরে বন্ধ ভূটান সীমান্তের ট্রানজিট ক্যাম্প। ভূটানের ক্যাম্পে আটকে শীর্ষনেতা জি বিদাইও। সংগঠনের রেশন ও পয়সা বন্ধ। হামলা চালিয়ে ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করতে চাইছে NDFB। আতঙ্ক ছড়িয়ে টাকা তোলার রাস্তা পরিষ্কার করাই লক্ষ্য
এই মুহুর্তে NDFB-যে কতটা মরিয়া তা স্পষ্ট মৃত জঙ্গি মননঞ্জয় ইসালারির পরিচয় থেকেও। ইসালারি NDFB-র বহু পুরনো কম্যান্ডার। তেনালি বাজারে হামলা চালাতে তার মতো পুরনো কম্যান্ডারকে ব্যবহার করা থেকেই স্পষ্ট কতটা কোণঠাসা NDFB।