Home> দেশ
Advertisement

Supreme Court on Fatherhood: আপনার স্ত্রী কার ঔরসে গর্ভবতী, সেটা বিষয় নয়! আইনি মতে, আপনিই বাবা: সুপ্রিম কোর্ট

Law News: যদি কোনও বিবাহিত মহিলার সন্তান হয়, তাহলে সেই সন্তানের আসল বাবা যেই হোক না কেন, আইনত তার স্বামীকেই সেই সন্তানের বাবা হিসেবে গণ্য করা হবে। 

Supreme Court on Fatherhood: আপনার স্ত্রী কার ঔরসে গর্ভবতী, সেটা বিষয় নয়! আইনি মতে, আপনিই বাবা: সুপ্রিম কোর্ট

জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: সম্প্রতি, ভারতের সুপ্রিম কোর্ট একটি ঘটনায় গুরুত্বপূর্ণ রায় দিয়েছে যা বিবাহিত দম্পতিদের মধ্যে সন্তানের পিতৃত্ব নির্ধারণের আইনি দিক নিয়ে জোর বিতর্ক তৈরি করেছে। একটি মামলার শুনানিতে শীর্ষ আদালত জানিয়েছে যে, যদি কোনও বিবাহিত মহিলার সন্তান হয়, তাহলে সেই সন্তানের আসল বাবা যেই হোক না কেন, আইনত তার স্বামীকেই সেই সন্তানের বাবা হিসেবে গণ্য করা হবে।  সেই স্বামীকেই তাঁর স্ত্রীর সন্তানের দায়িত্ব নিতে হবে। এই রায় ভারতীয় আইন, বিশেষ করে প্রমাণ আইন, ১৮৭২ (Indian Evidence Act, 1872)-এর একটি নির্দিষ্ট ধারার ওপর ভিত্তি করে দেওয়া হয়েছে।

কী জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট: 

অর্থাত্‍ বৈধ দাম্পত্য জীবনে সন্তানের জন্ম হলে, আইন স্বামীকেই সন্তানের বৈধ পিতা হিসেবে ধরে নেবে। এমনকি পরকীয়ার অভিযোগ উঠলেও, যদি না স্বামী প্রমাণ করতে পারেন যে গর্ভধারণের সময় তিনি স্ত্রীর কাছে ছিলেন না (non-access), ততদিন এই ধারণা অটুট থাকবে বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)।

শীর্ষ আদালত স্পষ্ট জানিয়েছে, ডিএনএ (DNA) পরীক্ষা করার দাবি স্বয়ংক্রিয়ভাবে কোনও পক্ষের অধিকার নয় এবং এটি রুটিন প্রক্রিয়ায় করা উচিত নয়। সন্তানের কল্যাণ, ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও সামাজিক মর্যাদাকে জৈবিক সত্যের চেয়ে অগ্রাধিকার দিতে হবে।

এই রায় ঘিরে দেশজুড়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সমালোচকদের দাবি, এতে পুরুষদের ওপর অন্যায্য দায় চাপানো হচ্ছে— তাদের এমন সন্তানের দায়িত্ব নিতে বাধ্য করা হচ্ছে, যারা হয়তো জৈবিকভাবে তাদের নয়। 

আরও পড়ুন: Contextual Sex age reduce: ছেলেমেয়ে যতই লুকিয়ে সে*ক্স করুক, ১৮-এর নীচে যৌ*ন-সম্মতি দেওয়া ভীষণ বিপজ্জনক: কেন্দ্র...

আরও পড়ুন: Supreme Court on Mumbai Alimony Case: প্লিজ ভিক্ষা করবেন না! আপনি শিক্ষিত, চাকরি করে খান... স্ত্রীর ১২ কোটি টাকার খোরপোশ খারিজ সুপ্রিম কোর্টের...

রায়ের মূল বিষয়বস্তু:

সুপ্রিম কোর্ট তার রায়ে বলেছে যে, যদি কোনো বিবাহিত দম্পতি একসাথে থাকেন, তবে সেই সময়ে স্ত্রীর গর্ভে আসা সন্তানের পিতৃত্ব নিয়ে কোনো প্রশ্ন তোলা যাবে না। কোনো তৃতীয় ব্যক্তি যদি পিতৃত্বের দাবিও করে, তাহলেও আইন অনুযায়ী স্বামীর অধিকারই বজায় থাকবে। আদালত এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কারণ:

১. আইনি ভিত্তি: ভারতীয় প্রমাণ আইন, ১৮৭২-এর ১১২ নম্বর ধারা অনুযায়ী, যদি কোনো সন্তান বৈধ বিবাহ চলাকালীন জন্ম নেয়, তাহলে ধরে নেওয়া হবে যে সেই সন্তান বিবাহিত দম্পতিরই। এই পিতৃত্বের ধারণাটি শুধুমাত্র তখনই অস্বীকার করা যেতে পারে, যদি প্রমাণিত হয় যে দম্পতি সেই সময়ে একসাথে ছিলেন না এবং তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন সম্ভব ছিল না।

২. সামাজিক সুরক্ষা: এই ধরনের আইনি সুরক্ষা মূলত সন্তানের অধিকার এবং সামাজিক স্থিতিশীলতা রক্ষার জন্য তৈরি করা হয়েছে। এর উদ্দেশ্য হলো, কোনো সন্তানের পরিচয় যেন অনিশ্চয়তার মধ্যে না পড়ে। যদি স্বামীকেই আইনি বাবা হিসেবে গণ্য করা হয়, তাহলে সন্তান তার পিতার সম্পত্তি এবং অন্যান্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হয় না।

৩. তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ: আদালত স্পষ্ট করে জানিয়েছে যে, বিবাহিত দম্পতির ব্যক্তিগত সম্পর্কের মধ্যে তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপকে উৎসাহিত করা উচিত নয়। যদি কোনো তৃতীয় ব্যক্তি দাবি করে যে সে ওই সন্তানের আসল বাবা, তাহলে সেই দাবিকে গুরুত্ব দেওয়া হবে না, যদি না স্বামীর দিক থেকে কোনো সুস্পষ্ট প্রমাণ বা স্বীকারোক্তি থাকে যে সে সন্তানটির বাবা নয়।

প্রভাব এবং তাৎপর্য:

এই রায় বিবাহিত জীবনের পবিত্রতা এবং সন্তানের অধিকারকে সমর্থন করে। এটি এমন একটি আইনি কাঠামো তৈরি করে, যা কোনও বিতর্ক বা তৃতীয় পক্ষের দাবির কারণে বিবাহিত পরিবারের মধ্যে তৈরি হতে পারে এমন জটিলতা থেকে সন্তানকে রক্ষা করে। এটি নিশ্চিত করে যে, বিবাহিত সম্পর্কে জন্ম নেওয়া কোনো শিশুর আইনি পরিচয় প্রশ্নাতীত থাকবে।

বিতর্ক: 

এই রায় ঘিরে দেশজুড়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সমালোচকদের দাবি, এতে পুরুষদের ওপর অন্যায্য দায় চাপানো হচ্ছে— তাদের এমন সন্তানের দায়িত্ব নিতে বাধ্য করা হচ্ছে, যারা হয়তো জৈবিকভাবে তাদের নয়। 

অনেকের মতে, এই রায় বিবাহের পবিত্রতাকে ব্যক্তিগত অধিকার ও সত্যের ঊর্ধ্বে স্থান দিয়েছে, বিশেষত সেই স্বামীদের ক্ষেত্রে যারা স্ত্রীর বিশ্বাসঘাতকতার শিকার। সমালোচকরা আরও বলছেন, পরকীয়া অপরাধের অবসান ঘটানোর পর এই রায় বিয়ের দায়িত্ববোধ আরও দুর্বল করেছে এবং আইনি কাঠামো পরোক্ষভাবে বিশ্বাসঘাতকতাকে বৈধতা দিচ্ছে।

অন্যদিকে অনেকেই ব্যাপারটাকে সমর্থন করে জানিয়েছে, এই সিদ্ধান্তের মূল উদ্দেশ্য হল সন্তানকে সামাজিক কলঙ্ক থেকে রক্ষা করা এবং পারিবারিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা। তবে বহু মানুষের মতে, এই প্রবণতা ভারতীয় পারিবারিক মূল্যবোধকে ক্ষয় করছে, যেখানে বিশ্বাস, আস্থা ও কর্তব্যকে ক্রমে প্রতিস্থাপন করছে ‘আইনগত কল্পনা’, যা সামাজিক ভাবমূর্তিকে সত্যের উপরে রাখছে।

 

(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)

Read More