জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: উত্তরপ্রদেশের (UttarPradesh) বাগপথে কাঁওয়ার যাত্রা (Kawar Yatra) থেকে বাড়ি ফেরার সময়, এক ব্যক্তিকে তার স্ত্রী ও প্রেমিক গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। অগ্নিদগ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন ওই ব্যক্তি। জানা গেছে, অভিযুক্তরা তাকে আটকে তার শ্বশুরবাড়িতে নিয়ে যায় এবং সেখানে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।
গুরুতর দগ্ধ ব্যক্তি:
গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় ওই ব্যক্তিকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। নিহত ব্যক্তির বাবা এই ঘটনায় ২১শে জুলাই একটি এফআইআর (FIR) দায়ের করেছেন, যেখানে পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে, দুঃখজনকভাবে এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।
এই ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। পরিবার ও গ্রামবাসীরা সোমবার ডোগাট থানার সামনে নিহত ব্যক্তির মৃতদেহ নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। তারা অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতারির দাবি জানিয়েছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয় এবং পরিবার শেষকৃত্য সম্পন্ন করে।
ঘটনার বিবরণ:
উত্তরপ্রদেশের বাগপত জেলায় এই হৃদয়বিদারক এই ঘটনাটি ঘটেছে। পাঁচ দিন ধরে জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে মারা গেছেন এক যুবক। নিহত যুবকটি এই জেলার রামলা থানা এলাকার কান্দারা গ্রামের বাসিন্দা। নিহতের নাম সানি। অভিযোগ উঠেছে যে, নিহত সানির স্ত্রী অঙ্কিতার আয়ুব নামের এক যুবকের সাথে সম্পর্ক ছিল। সানি অঙ্কিতাকে একজন অপরিচিতের সাথে ফোনে কথা বলতে নিষেধ করেছিলেন।
এই নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এর ফলস্বরূপ, সানির স্ত্রী অঙ্কিতা তার বাপের বাড়ি চলে আসেন। অন্যদিকে, সানির পরিবারের বক্তব্য অনুযায়ী, গত ২২শে জুলাই সানি, কানওয়ার করতে হরিদ্বারের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে রওনা হন। যখন তিনি ডোগাট এলাকার কানওয়ার রুটে পৌঁছন, তখন তার শ্বশুরবাড়ির লোকেরা এবং তার স্ত্রীর প্রেমিক আয়ুব সেখানে উপস্থিত হয় এবং তাকে তাদের সঙ্গে নিয়ে যায়।
স্ত্রী ও শাশুড়ির সামনে অগ্নিসংযোগ:
এরপর আয়ুব সানির স্ত্রী ও শাশুড়ির সামনে সানির গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। কেউ একজন সানির পরিবারকে এই বিষয়ে খবর দেয়, যার পর পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে সানিকে হাসপাতালে নিয়ে যান। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে উচ্চতর কেন্দ্রে রেফার করা হয়, কিন্তু অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
নিহতের স্বজনদের বিক্ষোভ:
সানির শরীরের ৮০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। পাঁচ দিন ধরে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করার পর অবশেষে সানি মারা যান। গভীর রাতে পরিবারের সদস্যরা সানির মৃতদেহ নিয়ে থানায় পৌঁছান এবং পুলিশের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগ আনেন। এরপর তারা মৃতদেহ নিয়ে থানায় বসে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে, পুলিশ কর্মকর্তার আশ্বাসে পরিবার রাজি হয়। বর্তমানে, পুলিশ একটি মামলা দায়ের করে পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
এই নৃশংস ঘটনাটি সমাজে নারী-পুরুষ সম্পর্কের জটিলতা এবং হিংসতার এক ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেছে। এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি উঠেছে।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)