শতরূপা কর্মকার: ভারতীয় আবহাওয়া দফতর ভারতের তিনটি রাজ্যে ইতোমধ্যেই তাপপ্রবাহের কমলা সতর্কতা জারি করেছে। পশ্চিমবঙ্গ, বিহার ও অন্ধ্রপ্রদেশে গরমের তীব্রতা অত্যধিক হারে বেড়ে চলেছে। যদিও তেলেঙ্গানায় এই বছরের এখনও পর্যন্ত তাপমাত্রা সর্বাধিক। এই তিনটি রাজ্য ছাড়াও সিকিম, ঝাড়খন্ড, ওড়িশা ও উত্তরপ্রদেশে গরমের তীব্রতা বাড়তে পারে বলে আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর। পূর্বাভাসে আরও জানা গিয়েছে যে মঙ্গলবার জম্মু ও কাশ্মীর, হিমাচল প্রদেশ এবং পঞ্জাবে পশ্চিমী ঝঞ্ঝা বজ্রঝড় বয়ে আনলে পশ্চিম ভারতের কিছু অংশ তাপপ্রবাহের হাত থেকে কিছুটা স্বস্তি পাবে।
তবে সোমবার ভারতের উষ্ণতম শহর হিসেবে তেলেঙ্গানার জয়শঙ্কর ভূপালপল্লি জেলাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। রেকর্ড তাপমাত্রা ছিল সর্বোচ্চ ৪৪.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। উত্তরপ্রদেশের সুলতানপুরে তাপমাত্রা ছিল ৪৩.৪ ডিগ্রি, বিহারের সুপলে তাপমাত্রা ছিল ৪২.৪ ডিগ্রি। এছাড়াও উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজ, ঝাঁসি, কানপুর ও আগ্রা, বিহারের পাটনা ও পূর্ব চম্পারণ এবং পাঞ্জাবের ভাতিন্ডায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: NCP-তে ভাঙন! বিজেপি’র দিকে ঝুঁকছেন অজিত? ফের জল্পনা মহারাষ্ট্রে
পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারতের অনেক জায়গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে ৩-৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল। এবছর পশ্চিমবঙ্গে এমনিতেও স্বাভাবিকের থেকে দেরিতে গ্রীষ্ম এসেছে। গত ছয় দিন ধরে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে বিচ্ছিন্ন এলাকায় তাপপ্রবাহ রেকর্ড করা গিয়েছে। উপকূলীয় অন্ধ্রপ্রদেশে চার দিন এবং বিহারে তিন দিন টানা তাপপ্রবাহ চলেছে। তাপপ্রবাহের অবস্থা বিবেচনা করা হয় যখন সমভূমিতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি; উপকূলীয় অঞ্চলে ৩৭ ডিগ্রির বেশি এবং পার্বত্য অঞ্চলে ৩০ ডিগ্রির বেশি হয়। এই তাপমাত্রা স্বাভাবিক তাপমাত্রার থেকে গড় বিচ্যুতি সর্বোচ্চ ৪.৫ থেকে ৬.৪ ডিগ্রির বেশি হয়। অর্থ্যাৎ কোনও জায়গায় স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৪.৫ থেকে ৬.৪ ডিগ্রি বেশি। এই অবস্থা টানা দুই দিন অব্যাহত থাকলে দ্বিতীয় দিনে তাপপ্রবাহ ঘোষণা করা হয়।
ভারতীয় আবহাওয়া দফতর বা আইএমডি সোমবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রার শহরের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। সোমবার উত্তরপশ্চিম ভারত ও পূর্ব ভারতে গড় তাপমাত্রা ছিল ৪০-৪২ ডিগ্রি। সেই হিসেবেই মরশুমের উষ্ণতম শহর ছিল তেলেঙ্গানার জয়শঙ্কর ভূপালপল্লি জেলা; সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪৪.৬ ডিগ্রি। এছাড়াও অন্যান্য উষ্ণতম শহরগুলির মধ্যে ছিল ওড়িশার বারিপাড়া (৪৪.২ ডিগ্রি), মধ্যপ্রদেশের ঝাঁসি (৪৩.৬ ডিগ্রি), ওড়িশার বৌধ (৪৩.৫ ডিগ্রি), ঝাড়খন্ডের ডালটনগঞ্জ (৪৩.৪ ডিগ্রি), ওড়িশার ঝাড়সগুরা (৪৩.৪ ডিগ্রি), বিহারের পাটনা (৪৩.২ ডিগ্রি), মধ্যপ্রদেশের খাজুরাহো (৪৩.২ ডিগ্রি), ওড়িশার সম্বলপুর (৪৩.২ ডিগ্রি) ও পশ্চিমবঙ্গের শ্রানিকেতন (৪৩.২ ডিগ্রি)।
এই প্রচণ্ড গরমের সময় বিশেষ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে শিশু, বৃদ্ধ, দীর্ঘস্থায়ী রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি ও শারীরিক ভাবে দুর্বল মানুষেরা। আবহাওয়া দফতর তাই দেহ হাইড্রেটেড রাখার জন্য পর্যাপ্ত জল, ওআরএস বা অনুরূপ ঘরে তৈরি পানীয় বেশি করে পান করতে পরামর্শ দিয়েছেন।