ওয়েব ডেস্ক: দেশের রাষ্ট্রপতির ঘরণী ছিলেন তিনি। প্রণব মুখার্জির দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের তিনি ছিলেন ছায়াসঙ্গী। নেপথ্যে থেকেও স্বামীর জীবনের প্রতিটি মাইলফলকে রয়েছে তার অবদান। দীর্ঘ ৫৮ বছরের জীবনসঙ্গী। প্রতিদিন সকালে আহ্নিক সেরে তার কপালে ফুল ছুঁয়েই দিন শুরু করতেন প্রণব মুখার্জি। আজ চলে গেলেন শুভ্রা মুখার্জি।
বাংলাদেশের নড়াইলে জন্ম শুভ্রা মুখার্জির। মাত্র ১০ বছর বয়সে পরিবারের সঙ্গে চলে আসেন কলকাতায়। ১৯৫৭ সালের ১৩ জুলাই বিয়ে হয় প্রণব মুখার্জির সঙ্গে। দুই ছেলে ও এক মেয়ের মা শুভ্রা অনুপ্রাণিত ছিলেন দেং জিয়াওপিংয়ের দ্বারা। মাঝেমধ্যেই দেংয়ের উদ্ধৃতি শোনা যেত তার মুখে। শান্তিনিকেতন থেকে স্নাতকোত্তর পাশ করেছিলেন তিনি। মাত্র ৬ বছর বয়স থেকেই সঙ্গীতচর্চা করতেন। শিখেছিলেন কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, গোরাচাঁদ সর্বাধিকারীর কাছে। কখনও বাণিজ্যিক অনুষ্ঠানে গান করেননি তিনি। গান ছিল তার আধ্যাত্মিক যোগ স্থাপনের মাধ্যম। পড়া, গান ও বাগানের পরিচর্যার করার মতো বিষয় নিয়েই কেটে যেত তার সময়। স্বামী রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর তারই ছেড়ে যাওয়া আসনে বীরভূমের নলহাটি থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন ছেলে অভিজিত্। মেয়ে শর্মিষ্ঠা কত্থক নৃত্যশিল্পী।
শুধু স্বামী সন্তান সংসারের সাফল্যে গর্বিত হয়েই আটকে থাকেননি তিনি। সাংস্কৃতিক জগতে তৈরি করেছিলেন নিজের পরিচিতি। রাষ্ট্রপতি ভবনেও নিয়মিত বসত গানের আসর। সংসার থেকে স্বামীর ব্যস্ততা, সবকিছুই সামলাতেন পাকা হাতে। ফার্স্ট লেডি হিসেবে দেওয়া সাক্ষাত্কারে জানিয়েছিলেন তাদের সুখী দাম্পত্যের কথা। ৫৫ বছরের বিবাহিত জীবনে একবারও ঝগড়া না হওয়ার কথাও গর্বের সঙ্গে জানিয়েছিলেন তিনি। রাষ্ট্রপতি ভবনে নিজের পুজোর ঘর সুন্দর করে সাজিয়েছিলেন তিনি। অতি প্রিয় তানপুরা ও হারমোনিয়াম নিয়ে এসেছিলেন সঙ্গে করে।