Wife killed husband: প্রেমিকা-প্রথম স্ত্রী নয়, দ্বিতীয় স্ত্রীর হাতে স্বামীর হাড়হিম পরিণতি! এক রাজ্যে খুন, আরেক রাজ্যে লাশ...

Uttar Pradesh Murder: পাহাড়ের খাদে দেহ উদ্ধারের পর পুলিস ভেবেছিল, সড়ক দুর্ঘটনা। কিন্তু ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসতেই তদন্তের মোড় ঘুরে যায়! গেস্টহাউজের বুকিং স্লিপ নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর্দাফাঁস করে।

জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ফের স্ত্রী ও প্রেমিকের হাতে স্বামী খুন। এবার এই হাড়হিম হত্যাকাণ্ড ঘটেছে উত্তরপ্রদেশে। জানা গিয়েছে, সম্পত্তির কারণে দিল্লির বাসিন্দা এক ব্যক্তিকে তাঁর স্ত্রী ও প্রেমিক মিলে কোদালের কোপে খুন করে লাশ ফেলে দেয় পাহাড়ের খাদে। মৃতের নাম রবীন্দ্র কুমার। উত্তরাখণ্ডের পাহাড়ে উদ্ধার হয় নিহত রবীন্দ্র কুমারের দেহ। তারপরই তাঁর দিল্লি থেকে নিখোঁজ রহস্যের উদ্ঘাটন হয়। খুনের দায়ে গ্রেফতার করা হয়েছে রবীন্দ্র কুমারের দ্বিতীয় স্ত্রী রীনা সিন্ধু ও তাঁর প্রেমিক পরিতোষকে। জানা গিয়েছে, স্ত্রী রীনা সিন্ধু ও তাঁর প্রেমিক পরিতোষ দুজনে মিলে রবীন্দ্র কুমারকে উত্তরপ্রদেশে খুন করে। তারপর একটি SUV-তে করে লাশ নিয়ে গিয়ে উত্তরাখণ্ডের কোটদ্বারের কাছে পাহাড়ের খাদে ফেলে দেয়।

দিল্লিতে নিখোঁজ, উত্তরপ্রদেশে খুন, উত্তরাখণ্ডে উদ্ধার দেহ!

জুনের গোড়ার দিকে দক্ষিণ দিল্লির রাজোক্রি থেকে নিখোঁজ হয়ে যান ৫৬ বছর বয়সী রবীন্দ্র কুমার। ৫ জুন উত্তরাখণ্ড পুলিস একটি দেহ উদ্ধার করে। সেই মৃতদেহ উদ্ধার রহস্যের তদন্তে নেমে একটি মিসিং লিংক খুঁজে পায় পুলিস। যার সূত্র ধরে রবীন্দ্র কুমার নিখোঁজ রহস্যের সমাধান হয়। দেহটি নিখোঁজ রবীন্দ্র কুমারের বলে শনাক্ত হয়। নিহত রবীন্দ্র কুমারের সঙ্গে দ্বিতীয় স্ত্রী রীনা সিন্ধুর বয়সের ব্যবধান ২০ বছর। পেশায় রীনা সিন্ধু একজন ফিজিওথেরাপিস্ট। সেই সূত্রেই প্রেমিক পরিতোষের সঙ্গে তাঁর আলাপ। বছর খানেক আগে  চিকিৎসার জন্য প্রথমবার তাঁর সেন্টারে এসেছিলেন পরিতোষ। সেখান থেকেই আলাপের সূত্রপাত। ধীরে ধীরে দুজনের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। পরিতোষের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন রীনা সিন্ধু।

সম্পত্তি বিবাদে স্বামীকে খুন দ্বিতীয় স্ত্রীর!

ওদিকে রবীন্দ্র কুমারের সঙ্গে রীনা সিন্ধুর সম্পত্তিগত বিবাদ বাড়তে থাকে। একটি চেক বাউন্স মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে রবীন্দ্র কুমার ৬ মাস জেল খাটেন। এরপর কুমার ১৮ লাখ টাকা ঋণ শোধের জন্য মোরদাবাদের একটি সম্পত্তি বিক্রি করতে চাইলে স্ত্রী রীনা সিন্ধুর সঙ্গে চরমে ওঠে বিবাদ। ধৃত স্ত্রী রীনার দাবি, ওই বাড়িটি বিক্রি করলে তাঁকে রাস্তায় থাকতে হত! তদন্তে নেমে পুলিস জানতে পেরেছে এরপরই কুমারের সমত্তি দখলের জন্যই স্ত্রী রীনা সিন্ধু ও তাঁর প্রেমিক পরিতোষ, দুজনে মিলে রবীন্দ্র কুমারকে হত্যার ছক কষে। ৩১ মে সিন্ধু একটি পার্টির অজুহাতে উত্তর প্রদেশের নাগিনায় পরিতোষের বাড়িতে রবীন্দ্র কুমারকে ডেকে নিয়ে যায়। ওখানে রবীন্দ্র কুমারকে আকণ্ঠ মদ্যপান করিয়ে, সিন্ধু ও পরিতোষ দুজনে মিলে কোদাল দিয়ে ঘাড়ে ও বুকে আঘাত করে তাঁকে খুন করে। এরপর মৃতদেহটি একটি SUV 500 গাড়িতে করে প্রথমে রামনগর, তারপর কোটদ্বারে নিয়ে এসে পাহাড়ের খাদে ফেলে দেয়। তারপর গাড়িটিও নয়ডার কাছে ফেলে রেখে চলে যায়।

মিসিং লিংক ময়নাতদন্তের রিপোর্ট!

এখন পাহাড়ের খাদে দেহ উদ্ধারের পর পুলিস প্রাথমিকভাবে ভেবেছিল, এটি একটি নিছক সড়ক দুর্ঘটনা। কিন্তু ময়নাতদন্তের রিপোর্টে নিহতের পাঁজরের ২টি হাড় ভাঙা অবস্থায় পাওয়া যায়। যা থেকেই তদন্তের মোড় ঘুরে যায় খুনের দিকে! এরপরই পুলিস সিসিটিভি ফুটেজের সূত্র ধরে পরিত্যক্ত গাড়িটিও উদ্ধার করে। তারপর গেস্টহাউজের বুকিং স্লিপের সূত্র ধরে রবীন্দ্র কুমার, স্ত্রী রীনা সিন্ধু ও প্রেমিক পরিতোষের গতিবিধির বিষয়ে নিশ্চিত হয় পুলিস। নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর্দাফাঁস হয়।