সুতপা সেন: "আমরা সবাই একসাথে আছি। এই ছবিতেই দেখা যাচ্ছে সেটা। আর এই ছবি দেখে ওদের কী প্রতিক্রিয়া হচ্ছে দেখো! ওরা উদ্বিগ্ন (Worrid)।" এদিন বেঙ্গালুরুতে বিরোধী নেতৃত্বের সবার সঙ্গে ছবি তোলার সময় হাসতে হাসতে বললেন মমতা। পাশাপাশি, তিনি আরও বলেন, 'মণিপুর জ্বলছে আর ওরা বিদেশ ঘুরে বেড়াচ্ছে। গত দশ বছর ধরে দেশকে শাসন করার সুযোগ পেয়েছেন মোদী। কিন্তু সবদিক থেকেই তিনি ব্যর্থ। তিনি শুধু ঘৃণার রাজনীতি ছড়িয়েছেন। দেশের অর্থনীতি একেবারে বিপর্যস্ত।' বলাই বাহুল্য, মমতার খোঁচার নিশানায় ছিল এদিনের এনডিএ বৈঠক। বেঙ্গালুরুতে বিরোধীদের মেগা বৈঠকের দিনই দিল্লিতে পালটা বৈঠক এনডিএর। আজ বিজেপির ডাকে আলোচনার টেবিলে বসবে ৩৮টি দল। বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা বৈঠকে উপস্থিত থাকার জন্য এই ৩৮টি দলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। বৈঠকে উপস্থিত থাকছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা সহ অন্যান্য নেতৃত্ব। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, বেঙ্গালুরুর পাল্টা কি দিল্লি?
উল্লেখ্য, আজ বেঙ্গালুরুতে বৈঠকে বসছে বিজেপি বিরোধী ২৬টি দল। চব্বিশে দিল্লিতে পরিবর্তনের ডাক দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই লক্ষ্যেই পাটনার পর এবার বেঙ্গালুরুতে বিরোধী বৈঠক। আজ মেগা বৈঠকে এক টেবিলে বসছেন সোনিয়া, রাহুল থেকে শুরু করে নীতীশ-মমতা। যোগ দিচ্ছেন এনসিপি সুপ্রিমো শরদ পাওয়ারও। বেঙ্গালুরু বৈঠক থেকেই অভিন্ন কর্মসূচির খসড়া পেশ হবে। মূল্যবৃদ্ধি, মণিপুর, মেরুকরণের রাজনীতি- বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ইত্যাদি ইস্যুতে কীভাবে প্রচারে জোর দেওয়া যায়, তার রূপরেখা তৈরি হতে পারে। অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়েও আলোচনার প্রস্তাব রয়েছে। এখন বিরোধীদের এই বৈঠক যে বিজেপিকে চাপে ফেলেছে, তা তাদের বডি ল্যাঙ্গোয়েজ থেকেই স্পষ্ট বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। কারণ, তাদের মতে, নইলে একইদিনে তড়িঘড়ি এনডিএ বৈঠক ডাকত না বিজেপি। প্রসঙ্গত, সূত্রের খবর,গতকাল বেঙ্গালুরুতে বিরোধীদের বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, গণতন্ত্র বাঁচানোর লড়াই শুরু হয়েছে। ঐক্যবদ্ধ মহাজোট বিজেপির পতন ঘটাবে।
বিরোধীদের বৈঠকে গতকাল যথেষ্ট-ই আক্রমণাত্মক ছিল মমতার হুঁশিয়ারি। সূত্রের খবর, বৈঠকে আগাগোড়া বিজেপিকে তুলোধনা করেন তৃণমূল নেত্রী। তিনি স্পষ্ট ভাবে বলেন, বিরোধীরা যে ভাবে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে তাতে বিজেপি পরাস্ত হবেই। বিরোধীদের মুখ বন্ধ করার জন্য বিজেপি যেভাবে এজেন্সিকে কাজে লাগাচ্ছে তা বন্ধ করা প্রয়োজন। বিজেপি বিরোধী রাজ্য়গুলি বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের উদাহরণ টেনে মমতা বলেন, এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তাতে মানুষের উন্নয়নের টাকা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অতীতে এমন ঘটনা ঘটেনি যে ইতিহাসের সিলেবাস বদল করে দেওয়া হয়েছে। রাজ্যে রাজ্যে জাতপাতের নামে যেভাবে বিভেদের রাজনীতি করা হচ্ছে তাতে নক্কারজনক। এই বিজেপিকে পরাস্ত করতেই হবে। তা না হলে এই দেশকে ধরে রাখা যাবে না। এদেশের সার্বভৌমত্ব ধরে রাখা যাবে না। দেশের মানুষের মধ্যে সম্প্রীতি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তার জন্য সবাইকে বিভেদ ভুলে একজোট হতে হবে। কমন মিনিমাম প্রোগ্রাম করে এমনভাবে এগোতে হবে যাতে বিজেপি ক্ষমতায় আসতে না পারে।