জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: মাত্র ছমাস আগেই বিয়ে হয়েছে। এরই মধ্যে চরম সিদ্ধান্ত নববধূর। ২৬ বছর বয়সী মার্চেন্ট নেভি অফিসারের স্ত্রীকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। যদিও মৃত মধু সিংয়ের বাড়ির লোকজন দাবি করেছেন যে, তাদের মেয়েকে খুন করা হয়েছে। এবং অপরাধ লুকোতে এই আত্মহত্যার গল্প তারা সাজিয়েছে।
আরও পড়ুন:Plane Crash: ল্যান্ড করার আগেই ভেঙে পড়ল বিমান! ভয়াবহ আগুনে পুড়ে ছাই, মৃ*ত...
পরিবারের দাবি, মধুর স্বামী অনুরাগ সিং তাঁকে পণের জন্য চাপ দিতেন। এবং মধুর উপর তিনি শারীরিক অত্যাচার চালাতেন। মধুর বাবা সুশান্ত গলফ সিটি পুলিস স্টেশনে এফআইআর দায়ের করেছেন বলে জানা গিয়েছে।
চলতি বছর ২৫ ফেব্রুয়ারি অনুরাগের সঙ্গে মধুর বিয়ে হয়। অনুরাগ মার্চেন্ট নেভির দ্বিতীয় অফিসার। তবে অনুরাগ ১৫ লাখ টাকা পণের জন্য মধুর উপর চাপ সৃষ্টি করতে শুরু করে। এবং তাঁর উপর নির্যাতন শুরু করার পর পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে মোড় নেয়।
মধুর বোন প্রিয়া বলেন, অনুরাগ মধুর উপর ছোট ছোট বিষয়ে চড়াও হতেন, মারধর করতেন। এমনই একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করে প্রিয়া বলেন, ১০ মার্চ মধুকে প্লেট ঠিকভাবে না রাখার জন্য মারধর করা হয়েছিল বলে অভিযোগ।
প্রিয়া আরও জানান, মধু সেদিন তাকে ফোন করে সাহায্যের জন্য ভিক্ষা চাইছিলেন। এবং তাঁকে বলেন, 'তাড়াতাড়ি এসো, নাহলে ও আমাকে মেরে ফেলবে'। প্রিয়াও অভিযোগ করেন যে, অনুরাগ মধুকে জোর করে মদ্যপান করাতেন। বাধা দিলে তাঁকে মারধর করতেন। তিনি দাবি করেন যে, মধু ঘুরতে যেতে, পার্টি করতে ভালোবাসতেন। কিন্তু বিয়ের পর তাঁকে ঘরবন্দি করে রাখা হত, বাইরে বেরোতে দিত না মধুকে।
অনুরাগ সবসময় মধুর সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট ও ফোন নজরে রাখতেন। তিনি মধুকে তার নিজের বোনের সঙ্গেও কথা বলার জন্য অপমান ও নির্যাতন করতেন। প্রিয়ার আরও দাবি, একবার অনুরাগ দুই বোনকে সমকামী সম্পর্ক আছে বলে অভিযোগ করেছিলেন।
মধুর মৃত্যুর আগের দিন, অনুরাগ এবং মধু একসঙ্গে বাইরে যান। মধুর পরিবারের দাবি, সেই সময় অনুরাগ মদ্যপান করছিলেন এবং জোর করে মধুকে গাড়ি চালাতে বাধ্য করেন। পথে একটি গর্ত এড়াতে গিয়ে মধু হঠাৎ গাড়ি ঘুরিয়ে নেন। এ ঘটনা নিয়ে অনুরাগ অভিযোগ তোলেন যে, মধু নাকি রাস্তায় ছেলেদের দিকে তাকিয়ে মনোযোগ হারিয়েছেন - এবং এরপর তিনি গাড়ির ভেতরেই মধুকে মারধর করেন।
তবে অনুরাগের পরিবারের দাবি, এই অভিযোগ মিথ্যে। তারা জানায়, সোমবার বিকেল ৪টার দিকে মধুকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গেলে, তারা সঙ্গে সঙ্গে মধুর বাবাকে খবর দেন। কিন্তু মধুর পরিবারের অভিযোগ, যখন তারা অনুরাগের বাড়িতে পৌঁছান, তখন মধুর মরদেহ আগেই নিচে নামিয়ে ফেলা হয়েছিল।
মধুর পরিবার ঘটনার সময় নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে। তাদের দাবি, অনুরাগ ৩০ এপ্রিল একটি কাজে বাইরে যান এবং বলেন, তিনি ছয় মাস পর ফিরে আসবেন। কিন্তু হঠাৎ করেই তিনি ২২ জুলাই ফিরে আসেন। মধুর বাবা, ফতেহ বাহাদুর সিংহ, প্রশ্ন তোলেন: 'তিনি আগেভাগে কেন ফিরে এলেন, আর তার পরে এত তাড়াতাড়ি মধুর মৃত্যু কীভাবে হল?'
এছাড়াও, অনুরাগ দাবি করেছিলেন যে তাদের বাড়ির গৃহকর্মী সেদিন ছুটিতে ছিলেন। তবে পুলিসি জিজ্ঞাসাবাদে গৃহকর্মী জানান, তিনি সোমবার প্রতিদিনের মতোই কাজে আসেন, কিন্তু বাড়ি থেকে কোনও সাড়া না পেয়ে তিনি ফিরে যান। মধুর বাবা আরও অভিযোগ করেন, অনুরাগ অন্য মহিলাদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতেন। তিনি বলেন, মধু গর্ভবতী হওয়ার পর অনুরাগ জোর করে তার গর্ভপাত করান। পুলিস জানিয়েছে, তারা সব দিক থেকেই তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে।
আপনি কি অবসাদগ্রস্ত? বিষণ্ণ? চরম কোনও সিদ্ধান্ত নেবেন না। আপনার হাত ধরতে তৈরি অনেকেই। কথা বলুন প্লিজ...
iCALL (সোম-শনি, ১০টা থেকে ৮টা) ৯১৫২৯৮৭৮২১
কলকাতা পুলিস হেল্পলাইন (সকাল ১০টা-রাত ১০টা, ৩৬৫ দিন) ৯০৮৮০৩০৩০৩, ০৩৩-৪০৪৪৭৪৩৭
২৪x৭ টোল-ফ্রি মানসিক স্বাস্থ্য পুনর্বাসন হেল্পলাইন-- কিরণ (১৮০০-৫৯৯-০০১৯)
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)