জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: আমির খানের ছবি একাধিকবার বাস্তব ঘটনার সিনেদলিল হয়ে থেকেছে। সিনেমার মাধ্যমে সামাজিকবার্তা কিংবা সচেতনতার প্রচার করতে মিস্টার পারফেকশনিস্ট-এর জুড়ি মেলা ভার! সম্প্রতি আমির অভিনীত ‘সিতারে জমিন পর’ ছবিটিও তার জ্বলন্ত উদাহরণ।
প্রায় ২০০ কোটির গণ্ডি ছোঁয়া যে সিনেমা দেখে সুপারস্টারের প্রশংসায় পঞ্চমুখ সিনেসমালোচক, দর্শকরা। রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের তরফেও প্রশংসা আদায় করে নিয়েছেন তিনি। চলতি আবহেই শোনা গেল, মেঘালয়ের রোমহর্ষক ‘হানিমুন হত্যাকাণ্ড’ নাকি এবার পর্দায় ফুটিয়ে তুলতে চলেছেন আমির খান।
ইতিমধ্যেই ‘মিস্টার পারফেকশনিস্ট’ ‘খুনি বউমা’ সোনমের খোঁজখবর নেওয়া শুরু করেছেন। বলিউড মাধ্যম সূত্রে খবর, অভিনেতা-প্রযোজক নাকি এই মধুচন্দ্রিমা মার্ডারের রোমহর্ষক গল্প পর্দায় নিয়ে আসার জন্য আদা-জল খেয়ে মাঠে নেমে পড়েছেন।
প্রেমিকের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে বিয়ের মাত্র দিন দুয়েকের মাথায় স্বামীকে খুন করে নবপরিণীতার দেহ লোপাটের কাণ্ড শুনে শিউড়ে উঠেছিলেন গোটা দেশ! বিগত মে-জুন মাস জুড়ে এই খবর চর্চার শিরোনামে থেকেছে। এহেন রোমহর্ষক হত্যাকাণ্ড মানুষের জটিল মনস্তত্ত্ব নিয়েও অনেক প্রশ্ন তুলে দিয়েছিল সাম্প্রতিক অতীতে।
এবার সূত্রের খবর, ‘মেঘালয় মার্ডার’ নিয়ে বেশ পড়াশোনা করছেন অভিনেতা। সোনম-রঘুবংশীকে নিয়ে নিত্যদিন খবরের কাগজ, নানা তথ্য ঘাঁটছেন। এমনকী ঘনিষ্ঠবৃত্তেও এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছেন আমির খান। আর সেখান থেকেই জল্পনার সূত্রপাত, অদূর ভবিষ্যতে হয়তো আমিরের প্রযোজনা সংস্থার তরফে মেঘালয়ের ‘হানিমুন মার্ডার’ নিয়ে কোনও ঘোষণা হতে পারে।
যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে আমির খান প্রোডাকশনস-এর তরফে কোনওরকম বিবৃতি পাওয়া যায়নি এখনও। কারণ, এই মুহূর্তে তাঁরা আমিরের স্বপ্নের প্রজেক্ট মহাভারত-এর প্রি-প্রোডাকশন নিয়ে ব্যস্ত।
উপরন্তু পাইপলাইনে একগুচ্ছ সিনেমাও রয়েছে। এই জল্পনা সত্যি হলে যে,পারিবারিক কিংবা স্পোর্টস ড্রামার বাইরে গিয়ে প্রযোজক-অভিনেতা-পরিচালক আমির রহস্য-রোমাঞ্চে ভরপুর এক ছবি দর্শকদের উপহার দেবেন, তা বলাই বাহুল্য।
মেঘালয়ের সেই অভিশপ্ত মধুচন্দ্রিমায় কী ঘটেছিল? গত ১৯ মে সোনমের সঙ্গে বিয়ে হয় রাজা রঘুবংশীর। ২০ মে মধুচন্দ্রিমায় মেঘালয়ে ঘুরতে যান নবদম্পতি। ২৩ মে চেরাপুঞ্জিতে পৌঁছান তাঁরা। সেখানেই নিখোঁজ হয়ে যান দম্পতি।
এই ঘটনার ১১ দিন পর জলপ্রপাতের খাদ থেকে উদ্ধার হয় যুবকের দেহ। তবে খোঁজ মিলছিল না তাঁর স্ত্রী সোনমের। এই পরিস্থিতিতে দাবি করা হয়, রাজাকে খুনের পর তাঁর স্ত্রীকে অপহরণ করা হয়েছে। স্থানীয় দুষ্কৃতীদের দিকে ডাকাতির ও অপহরণের অভিযোগ তোলে মৃতের পরিবার। তদন্তে নামে মেঘালয় পুলিশ।
এই ডামাডোলের মাঝেই উত্তরপ্রদেশের গাজিপুর থেকে গ্রেপ্তার হন সোনম রঘুবংশী। তদন্তে নেমে মেঘালয় পুলিশের তরফে জানানো হয়, তাঁর প্রেমিক রাজ কুওয়াহার সঙ্গে সম্পর্কের জেরে মধুচন্দ্রিমায় গিয়ে ভাড়াটে খুনিদের সাহায্যে স্বামীকে খুন করেছেন সোনম।
রাজের সঙ্গে যোগসাজশে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়। অভিযুক্ত পুলিশি জেরায় খুনের কথাও স্বীকার করে নিয়েছিলেন। মহাভারত-এর পর কি তাহলে এবার আমিরের পাখির চোখ মেঘালয় মার্ডার-এর দিকে? সময়ের গর্ভেই লুকিয়ে সেই উত্তর।