Aghori Baba: সদ্য শিবরাত্রি গেল, মহাকুম্ভের স্নানও শেষ হল, এদিকে আজ আবার অতি বিশেষ অমাবস্যা। আসুন, এই বিচিত্র পবিত্র যোগাযোগের আবহে অঘোরী সন্ন্যাসীদের নিয়ে একটু চর্চা করা যাক, যাঁরা বর্গের দিক থেকে শৈব সাধু, আবার যাঁরা তন্ত্রপন্থীও। কাপালিক ঐতিহ্য থেকে উদ্ভূত এই অঘোরীরা আশ্চর্য সন্ন্যাসী!
কী করেন এই অঘোরীরা? এঁদের সাধনা মূলত মৃতদেহ সম্পর্কিত আচার-অনুষ্ঠানির্ভর। এঁরা প্রায়শই শ্মশানবাসী। শরীরে শবদাহের ছাই মাখেন। মানুষের মৃতদেহের হাড় ব্যবহার করেন, বিশেষত খুলি। হাড়ের মালাও পরেন। এমনকী মৃত মানুষের শরীর থেকে মাংসও খান এঁরা!
শৈব অঘোরীরা কিন্তু দশমহাবিদ্যার পুজো করেন। এই দশমহাবিদ্যার দেবীদের মধ্যে ধূমাবতী, বগলামুখী এবং ভৈরবী এঁদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয়। অঘোরী সাধকেরা পুজো করে মহাকাল, ভৈরব, বীরভদ্র, অবধূত এবং শিবের বিভিন্ন রূপেরও। অতিপ্রাকৃত বা অলৌকিক ক্ষমতা লাভের জন্যই অঘোরীর এই পুজো-অর্চনা করেন বলে মনে করা হয়।
এঁরা মোটেই সংসারী হন না, থাকেনও না পাড়া বা সমাজের কাছাকাছি। মানুষকে ধর্মের পথ দেখান। তাই ত্যাগই এঁদের লক্ষ্য। কিন্তু জনবিচ্ছিন্ন হয়ে থাকলেও, ত্যাগ করলেও আশ্চর্যজনক ভাবে এঁরা নারীসঙ্গ করেন।
সাধু-সন্ন্যাসী মানেই তাঁরা ব্রহ্মচর্য করবেন এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু অঘোরীদের ক্ষেত্রে এই কথাটা খাটে না। এঁরা মোটেই ব্রহ্মচর্য পালন করেন না।
শুধু তাই নয়, এঁরা মৃতদেহের সঙ্গে পর্যন্ত যৌনতা করেন। তবে সেটাকে তাঁদের উচ্চ সাধনার অন্যতম অঙ্গ বলে মনে করা হয়। মৃত নারীদেহের সঙ্গে সঙ্গম এঁদের সাধনারই বিশেষ অঙ্গ। তাঁরা মনে করেন, এভাবে সঙ্গম বা যৌনতা করেও তাঁরা যদি ধর্মীয় অনুভূতির অধিকারী হন, তবে তা তাঁদের সাধনার দৃষ্টিকোণ থেকে অনেক বড় ব্যাপার। এটাই তাঁদের সাধনপথের বিশেষ সিদ্ধি।
বেনারস ও উজ্জয়িনীর শ্মশানেই সাধারণত অঘোরীদের বেশি দেখা যায়। এঁরা কুকুরদেরও খুব ভালোবাসেন।
মধ্যযুগীয় ভারত ও কাশ্মীরের কাপালিক সন্ন্যাসী এবং দাক্ষিণাত্য মালভূমির কালামুখদের সঙ্গে সাদৃশ্য থাকা সত্ত্বেও, মনে করা হয় অঘোরীদের উৎপত্তি মূলত বাবা কিনারামের মাধ্যমেই, যিনি স্বয়ং একজন শৈব সন্ন্যাসী ছিলেন। তিনি ১৫০ বছর বেঁচেছিলেন। ১৮ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে মারা যান।
(Disclaimer: প্রচলিত ধর্মীয় রীতি, শাস্ত্র বা তত্ত্বের ভিত্তিতে এই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এটি মানা বা না মানার সুপারিশ করা হচ্ছে না। বিশ্বাস ব্যক্তিগত বিষয়। সচেতন পাঠক যা করবেন স্বদায়িত্বে। আমাদের সম্পাদকীয় দফতরের কোনও দায়বদ্ধতা নেই।)