Mysterious Flight to Iran: ইরান-ইজরায়েলের যুদ্ধ ক্রমশ অন্য আকার ধারণ করছে। এখনই এটা থামার কোনও সম্ভাবনা নেই। যে বিশ্বযুদ্ধের আকার নিতে পারে, সেটা কারও অজানা নয়। সেই আশঙ্কা আরও খানিকটা বাড়িয়ে দিল কয়েকটি রহস্যময় চিনা বিমান। ইসরায়েলে হামলার পর এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে চিন। এরমধ্যে দেশটি থেকে ইরানে রহস্যময় বিমান পাঠানো হয়েছে। এ বিমান নিয়ে শুরু হয়েছে নানা জল্পনাকল্পনা।
আমেরিকার সংবাদমাধ্যমের দাবি, চিনের অন্তত পাঁচটি বোয়িং ৭৪৭ বিমান বেজিং থেকে উড়ে গিয়েছে ইরানের দিকে। ওই বিমানগুলিতে যাত্রী বা পণ্য দুইই পরিবহণ করা যায়। চিন কী পাঠিয়েছিল? আদৌ ওই বিমানগুলি ইরানে গিয়েছে নাকি অন্য কোথাও? সবটাই রহস্য।
এরপর আরও একটি বিমান চীনের উপকূলীয় শহর থেকে ছেড়ে গেছে। এছাড়া সোমবার সাংহাই থেকে তৃতীয় আরও একটি বিমান ইরানে গেছে। এ নিয়ে তিন দিনে ৩টি বোয়িং ৭৪৭ বিমান ইরানে পাঠানো হয়েছে।
ফ্লাইট ট্র্যাকিং ডেটা অনুযায়ী, প্রতিটি বিমান উত্তর চীন পেরিয়ে কাজাখাস্তান, তারপর উজবেকিস্তান এবং তুর্কমেনিস্তান হয়ে ইরানের দিকে যাত্রা করেছে। এসব বিমান ইরান সীমান্তের কাছে গিয়ে হঠাৎ রাডার থেকে অদৃশ্য হয়ে যায়।
বিমান চলাচলের উপর নজরদারি চালানো সংস্থা 'ফ্লাইটরেডার২৪'-কে উদ্ধৃত করে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজ দাবি করছে, বিমানগুলি উত্তর চিন থেকে উড়ে কাজাকিস্তানের দিকে যায়। তার পর দক্ষিণে বাঁক নিয়ে উজবেকিস্তান এবং তুর্কমেনিস্তান পৌঁছোয়।
সেগুলির অভিমুখ ছিল ইরানের দিকে। বিমানগুলিকে ইরানের আকাশসীমায় দেখা গিয়েছে। তবে সেগুলি ইরানেই রয়েছে, নাকি অবতরণের পর অন্য কোথাও গিয়েছে স্পষ্ট নয়।
এখানেই রহস্য ঘনীভূত হচ্ছে। তাহলে কি বোয়িং ৭৪৭ বিমানগুলি পাঠিয়ে চিন তেহেরানের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিল? ভূরাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের তেমনই ধারণা।
ফক্স নিউজের দাবি, ওই বিমানগুলিতে যাত্রী পরিবহণ কিংবা পণ্য পরিবহণ দুইই ব্যবহার করা হয়। এগুলি যুদ্ধবিমান নয়। তবে চিন ওই বিমানে খাদ্য, অস্ত্র কিংবা অন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী চিন, ইরানে পাঠাতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও চিনের সরকার বা বিমানসংস্থা কেউ এ নিয়ে সরকারিভাবে মুখ খোলেনি।
এসব বিমানে কী পাঠানো হয়েছে তা নিয়েও নানা জল্পনা কল্পনা চলছে। এভিয়েশন বিশ্লেষকরা বলছেন, এই বোয়িং ৭৪৭ বিমানগুলো সাধারণত সামরিক সরঞ্জাম পরিবহণের জন্য ব্যবহৃত হয় এবং সরকারিভাবে চুক্তিবদ্ধ পরিবহনেও ব্যবহার করা হয়।
এবার যদি চিনও, তেহেরানের পাশে দাঁড়িয়ে যায়, তাহলে ইজরায়েল বা আমেরিকাকে চাপে ফেলতে পারে। বিশ্বযুদ্ধের যে আশঙ্কা করা হচ্ছে, সেটাও প্রবল হতে পারে।
আসলে চিন, গ্যাস এবং তেলের জন্য ইরান তথা পশ্চিম এশিয়ার উপর নির্ভরশীল। আবার শুল্কযুদ্ধের জন্য বেজিংয়ের সঙ্গে আমেরিকার দূরত্ব বেড়েছে। ফলে চিনের পক্ষে তেহেরানের পাশে দাঁড়ানো অস্বাভাবিক নয়।
এক্সেটার বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকায় চিনের কূটনীতি বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ড. আন্দ্রেয়া ঘিসেল্লি বলেন, চিনের পক্ষ থেকে ইরানকে সহায়তার প্রত্যাশা অনেকের মধ্যেই রয়েছে এবং এই কার্গো ট্রান্সপোর্টগুলো সেই সম্ভাবনার দিকে ইঙ্গিত দিতে পারে।