Dilip Ghosh Son Death: গত মঙ্গলবার আচমকাই প্রয়াত হন দিলীপ ঘোষের স্ত্রী রিঙ্কু মজুমদারের ছেলে সৃঞ্জয় দাশগুপ্ত ওরফে প্রীতম। এরপরেই প্রীতমের মৃত্যুর কারণ হিসাবে রিঙ্কুর বিয়েকে দায়ী করে প্রীতমের বাবা রাজা দাশগুপ্ত। এরপর পড়শিরা দাবি করে, রাজাও কোনও সোজা লোক নয়। ওর অত্যাচারেই বাড়ি ছেড়ে চলে আসতে বাধ্য হয়েছেন রিঙ্কু মজুমদার। এমনকী রাজা দ্বিতীয় বিয়েও করেছিলেন।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: গত মঙ্গলবার আচমকাই প্রয়াত হন দিলীপ ঘোষের স্ত্রী রিঙ্কু মজুমদারের ছেলে সৃঞ্জয় দাশগুপ্ত ওরফে প্রীতম। ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে জানা গিয়েছে, acute hemorrhagic pancreatitis অর্থাৎ অগ্ন্যাশয় প্রদাহে রক্তক্ষরণ জেরে মৃত্যু হয়েছে প্রীতমের।
ময়নাতদন্তে যাই উঠে আসুক না কেন, সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে রব ওঠে। মায়ের অবসাদের কারণেই নাকি ছেলের এই পরিণতি। বিয়ের পর থেকে দিলীপ ঘোষের সঙ্গে থাকতেন রিঙ্কু। শাপুরজিতে একাই থাকতেন প্রীতম। ফলে মানসিক অবসাদের তত্ত্ব উঠে এসেছে।
প্রীতমের মৃত্যুর দিনই প্রথম প্রকাশ্যে দেখা যায় রিঙ্কু মজুমদারের প্রথম স্বামী তথা প্রীতমের বাবা রাজা দাশগুপ্তকে। তিনিও দাবি করেন মায়ের বিয়ের পরেই নাকি ছেলে অবসাদে ভুগতেন। ছেলের মায়ের পুনর্বিবাহকেই কার্যত কারণ হিসাবে তুলে ধরেন প্রয়াত সৃঞ্জয় দাশগুপ্তের বাবা রাজা দাশগুপ্ত।
অন্যদিকে প্রীতমের মৃত্যুর পরের দিনই ছেলের অকালমৃত্যু নিয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, মৃত্যুর প্রকৃত কারণ ময়নাতদন্তের সম্পূর্ণ রিপোর্ট পেলে বুঝতে পারব। বন্ধু বান্ধব নিয়ে থাকত। একা থাকেনি সেইভাবে।
দিলীপ আরও বলেন, ড্রাগের সমস্যা ওর আগে থেকেই ছিল। ওর কাউন্সেলিং চলছিল। ওর অফিসের ডাক্তার দেখত। হঠাৎ করে কেন হল কি হল রিপোর্ট এলে বুঝতে পারব।
দিলীপ আরও বলেন, একটা তরতাজা ছেলে। আজকের যুবসমাজের মধ্যে নেশার যে কী প্রভাব, তার এটা একটা নমুনা। ঠিক কী হয়েছিল বলার আগেই তো ছেলেটা শেষ হয়ে গেল। আমাদের সবার কাছে এটা একটা বড় শিক্ষা। আমাদের ছেলেমেয়েরা কোথায় যাচ্ছে কী করছে? তাকে লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষ করে দিলেই দায়িত্ব শেষ হয় না। তারপরেও এতবড় রিস্ক থেকে যায়। এটাই চিন্তার বিষয়।
অন্যদিকে রাজা দাশগুপ্ত বলেন, “আসলে আমার সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পরে ছেলে মায়ের উপরে পুরোপুরি নির্ভরশীল ছিল। মা বিয়ে করে চলে যাচ্ছে। বুঝতে না দিলেও ও কষ্টে ছিল। তাই সামাজিক অনুষ্ঠানে ছিল না।
প্রীতমের বাবা সংবাদমাধ্যমে আরও বলেন, আমাকে ফোন করেছিল। বলেছিল, বাবা, আর কিছু বছর পরে আমিও বিয়ে করব। মা বলছে, আবার একা হয়ে যাবে। মা একটা সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। মা যদি ভাল থাকে, তা হলে অবশ্যই ভাল।”
রাজা আরও বলেন, “বাহ্যিক ভাবে ও হয়তো সবাইকে দেখিয়েছে যে, ও বিয়েটা মেনে নিয়েছে। কিন্তু মনে মনে হয়তো মেনে নিতে পারেনি। একেবারে একা হয়ে গিয়েছিল। বাবার কাছ থেকেও চলে এল, মা-ও চলে গেল। গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছিল ছেলেটা।
প্রীতমের বাবার আরও দাবি, মৃত্যুর কারণ নিয়ে আমার ধোঁয়াশা রয়েছে। সাধারণ মৃত্যু বলে আমার মনে হয় না। খুব হাসিখুশি, সবার সঙ্গে কথা বলতো, কিন্তু ব্যথাটা বলতো না কাউকে। না হলে মায়ের বিয়ের দিন বাইরে চলে যেত না! সামাজিক অনুষ্ঠান হচ্ছে, মেনে নিয়েছিল।
রাজার দাবি, 'আবার আমাকে বলেছিল, আমি থাকব না, দিঘা চলে যাচ্ছি। আলাদা করে আর কী করে বলবে! ও তো ছেলে, সবটা তো আর ভাঙতে পারে না! কারণটা বুঝে নিতে হবে।'
রাজা দাশগুপ্ত কার্যত কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দেন রিঙ্কু মজুমদারকে। এদিকে পড়শিদের দাবি, মদ খেয়ে এসে রিঙ্কুকে মারধর করত রাজা।
এক প্রতিবেশী দাবি করেন যে‘রিঙ্কুর বিয়ে নিয়ে আজ অনেক কথা হচ্ছে। রাজা যে রিঙ্কুকে ছেড়ে আরেকটা বিয়ে করেছিল, সে কথা অনেকেই জানেন না। বহু আগেই রিঙ্কু আর প্রীতমকে রীতিমতো পথে বসিয়ে চলে যায় রাজা।
প্রতিবেশীদের দাবি, আরেকটা বিয়ে করে। সেই পক্ষের একটি মেয়ে রয়েছে। কিন্তু সে বিয়েও টেকেনি। মেয়েকে নিয়ে দ্বিতীয় স্ত্রী আলাদা হয়ে গিয়েছে।’
আরেক প্রতিবেশীর দাবি,‘রাজার দুর্ব্যবহার ও অসভ্যতার শিকার হয়েছেন মা। রাজা দ্বিতীয় বিয়ে করার পর রিঙ্কু কীভাবে ছেলেকে মানুষ করেছে, আমরা অনেকেই তার সাক্ষী। ছেলে সাবলম্বী হওয়ার পরেই রিঙ্কু নতুন করে জীবন শুরু করার কথা ভেবেছে। তাঁকে যারা দোষ দিচ্ছেন, তারা সবটা না জেনেই দিচ্ছেন!’