an: ইরানে মার্কিন হামলার পরই বিস্ফোরক রাশিয়া (Russia)। পুতিন ঘনিষ্ঠ
ইরানে আচমকা মার্কিন বিমান হামলার পর ইরানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি রবিবার ঘোষণা করেছেন যে তিনি রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের আলোচনার জন্য মস্কো যাবেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ইরানি পরমাণু কেন্দ্র লক্ষ্য করে হামলা চালানোর পরপরই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
'রাশিয়া ইরানের বন্ধু, আমরা সবসময় একে অপরের সঙ্গে পরামর্শ করি," আরাঘচি সাংবাদিকদের বলেন। "আগামীকাল সকালে রাশিয়ার রাষ্ট্রপতির সাথে গুরুতর পরামর্শের জন্য আমি আজ বিকেলে মস্কো যাচ্ছি।'
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে এই হামলা চালানো হয়েছে, শনিবার গভীর রাতে। ইরান-ইসরায়েলি যুদ্ধের নয় দিন পর।
মার্কিন কর্মকর্তারা দাবি করেছেন যে এই হামলাগুলি ইরানের সম্ভাব্য পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচিকে নিরপেক্ষ করার লক্ষ্যে করা হয়েছিল।
তিনি আরও পরামর্শ দেন যে এই হামলাগুলি ইরানকে রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী করেছে। "ইরানের রাজনৈতিক শাসনব্যবস্থা টিকে আছে - এবং সম্ভবত আরও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। জনগণ দেশের আধ্যাত্মিক নেতৃত্বের চারপাশে একত্রিত হচ্ছে, যাদের মধ্যে যারা আগে এর প্রতি উদাসীন বা বিরোধী ছিল।"
আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে ইরান রাশিয়ার বন্ধু দেশ। সম্প্রতি নানা কারণে আমেরিকার সঙ্গেও রাশিয়ার সম্পর্কে টানাপোড়েন রয়েছে। ফলে রাশিয়া যে ইরানের পাশে দাঁড়াবে মেদভেদেভের মন্তব্যে তা পরিষ্কার।
রবিবার এক সাংবাদিক বৈঠকে ইরানের বিদেশমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি জানান, সোমবার সকালে তিনি মস্কোয় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করবে। আরাগচি বলেন, ‘রাশিয়া আমাদের বন্ধু। আজই আমি মস্কো রওনা হচ্ছি, কাল সকালে প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে আলোচনায় বসব।’
উল্লেখ্য ভারতীয় সময় রবিবার ভোরে ইরানের ৩ টি পরমাণুকেন্দ্রে হামলা চালায় আমেরিকা। ফরদো, ইসফাহান ও নতনাজে এই পরমাণুকেন্দ্রে হামলার তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইরান। তারা পালটা প্রত্যাঘাতের হুমকি দিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে ইরানের হাতে কোনও তৃতীয় দেশ পরমাণু অস্ত্র তুলে দিলে যুদ্ধ পরিস্থিতি যে ভয়ংকর হয়ে উঠবে তা বলাই বাহুল্য। রাশিয়ার প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের মন্তব্যে এই সম্ভাবনা আরও জোরালো হয়ে উঠেছে।
ইরানের বিদেশমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি জানিয়েছেন 'পারমাণবিক কেন্দ্রে হামলা চালিয়ে আমেরিকা সীমা পেরিয়ে গিয়েছে। রাষ্ট্রসঙ্ঘ সনদের ৫১ নম্বর ধারা অনুযায়ী এবার আত্মরক্ষার অধিকার প্রয়োগ করবে ইরান।'
তিনি আরও বলেন, 'আমরা কূটনৈতিক আলোচনার মধ্যেই ছিলাম। জেনেভায় ইউরোপীয় মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে কথা হচ্ছিল। কিন্তু ইজরায়েল ও আমেরিকা সেই আলোচনা বানচাল করে দিল। এবার আর আমেরিকার সঙ্গে কূটনীতি সম্ভব নয়।'
এই মুহূর্তে আন্তর্জাতিক মহলের একটা বড় অংশের সহানুভূতি ইরানের সঙ্গে। ইউরোপের দেশগুলো ছাড়া আর কেউই সেভাবে আমেরিকার পাশে এসে দাঁড়ায়নি।
ফলে ইরান এখন আন্তর্জাতিক মহলের সমর্থন আদায়ে যোগাযোগ শুরু করেছে। সেক্ষেত্রে তারা কতটা সফল হয় সেদিকে নজর রয়েছে সকলের।