একসময় বলিউডের উঠতি অভিনেত্রীদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন তনুশ্রী দত্ত (Tanushree Dutta) । ২০০৪ সালে ফেমিনা মিস ইন্ডিয়া (Femina Miss India) খেতাব জিতে প্রবেশ বলিউডে, তারপর ২০০৫-এ ‘আশিক বানায়া আপনে’ দিয়ে রূপালি পর্দায় যাত্রা শুরু। প্রথম ছবিতেই সাহসী চরিত্রে অভিনয় করে নজর কাড়েন তিনি। সেই সময় অনেকের কাছেই তিনি ছিলেন ‘ক্রাশ’, ‘ড্রিমগার্ল’। কিন্তু এই ঝলমলে গ্ল্যামার জগতের পিছনে ছিল অনেক অন্ধকার, যা এতদিন পর ফের সামনে আনলেন তনুশ্রী।
‘চকোলেট’ ছবির শ্যুটিং চলাকালীন পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রীর বিরুদ্ধে একাধিক অসম্মানজনক আচরণের অভিযোগ এনেছেন তনুশ্রী।
এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, শ্যুটিংয়ের দিন না থাকা সত্ত্বেও তাঁকে সেটে ডাকা হত। সকাল থেকে সন্ধ্যে পর্যন্ত বসিয়ে রাখা হত, অথচ কোনও দৃশ্যেই তাঁকে ব্যবহার করা হত না। এমনকি, শর্ট ড্রেস পরে বসে থাকতে বাধ্য করা হত ইউনিটের সামনে। রোব বা কিছু দিয়ে নিজেকে ঢাকতে গেলেও তা করতে দেওয়া হত না।
তনুশ্রীর ভাষ্যে, শুটিং থাকুক আর না থাকুক, তাকে দিনের পর দিন পোশাকবিহীন বা সাহসী শর্ট ড্রেস পরে শুটিং ফ্লোরে বসিয়ে রাখা হতো। এমনকি নিজেকে ঢাকতে চাইলেও অনুমতি দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ তার।
তিনি বলেন, 'শর্ট স্কার্ট পরে বসে থাকতাম, রোব পরতে গেলে বলা হত 'না, শট আসছে, খুলে ফেলো'। এইভাবে আমাকে সবার সামনে বসিয়ে রাখা হত'।
এক সময় এক দৃশ্যে, যেখানে তনুশ্রীর থাকা একেবারেই জরুরি ছিল না, সেখানে তাঁকে পোশাক খুলে নাচার নির্দেশ দেন বিবেক, দাবি তনুশ্রীর। অভিনেত্রীর কথায়, ‘আমাকে উনি বলেন, কাপড় খুলে নাচো’। আমি হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম। তখন ইরফান খান ও সুনীল শেট্টি এগিয়ে এসে আমায় বাঁচান'।
২০১৮ সালে তনুশ্রী দত্ত সেই প্রথম মুখ যিনি ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতে #MeToo আন্দোলনের শুরুটা করেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, ২০০৯ সালে ‘হর্ন ওকে প্লিজ’ ছবির সেটে বর্ষীয়ান অভিনেতা নানা পাটেকর তাঁকে যৌন হেনস্থা করেন।
শুধু শারীরিক নয়, মৌখিকভাবেও তাঁকে অপমান করা হয় বলে দাবি তনুশ্রীর। যদিও পরে নানা পাটেকর সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং ২০১৯ সালে তাঁকে আইনি ক্লিনচিটও দেওয়া হয়।
সম্প্রতি নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেন তনুশ্রী, যেখানে কাঁদতে কাঁদতে বলেন তিনি এখন নিজের বাড়িতেই হেনস্থার শিকার হচ্ছেন। মেইড রাখা যাচ্ছে না, কারণ যাঁদের রাখা হয়, তাঁরাই নাকি ষড়যন্ত্রে যুক্ত।
ভিডিয়োয় বলেন, 'আমি নিজের বাড়িতে হেনস্থা হচ্ছি। পুলিশকে ফোন করেছি, তাঁরা বলেছে থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ করতে। ২০১৮ সাল থেকে এসব চলছে। আমি আর পারছি না, দয়া করে কেউ কিছু করুন, দেরি হওয়ার আগেই।'