Trump Reduce Tariffs on Pakistan: দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলির মধ্যে পাকিস্তানের উপর সবচেয়ে কম পারস্পরিক শুল্ক চাপাল আমেরিকা। গত ২ এপ্রিলের ঘোষণায় পাকিস্তানের পণ্যে ২৯ শতাংশ শুল্ক আরোপের কথা জানিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে বৃহস্পতিবার নয়া শুল্কহার সংবলিত যে নির্দেশনামায় তিনি স্বাক্ষর করেছেন, সেখানে পাকিস্তানের উপর প্রযুক্ত পারস্পরিক শুল্কের হার কমিয়ে ১৯ শতাংশ করা হয়েছে।
নয়া শুল্কহার ঘোষিত হওয়ার পরেই সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ লেখেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।” বুধবার ভারতীয় পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের পরেই পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি সেরে ফেলার কথা ঘোষণা করেন ট্রাম্প।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলির মধ্যে পাকিস্তানের উপর সবচেয়ে কম পারস্পরিক শুল্ক চাপাল আমেরিকা। গত ২ এপ্রিলের ঘোষণায় পাকিস্তানের পণ্যে ২৯ শতাংশ শুল্ক আরোপের কথা জানিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে বৃহস্পতিবার নয়া শুল্কহার সংবলিত যে নির্দেশনামায় তিনি স্বাক্ষর করেছেন, সেখানে পাকিস্তানের উপর প্রযুক্ত পারস্পরিক শুল্কের হার কমিয়ে ১৯ শতাংশ করা হয়েছে।
ভারতের শীর্ষস্থানীয় কূটনীতিবিদ কে সি সিং-এর মতে, "পাকিস্তানকে ট্রাম্প যে আচমকা এতটা ভালবাসতে শুরু করেছেন, তার পেছনে অবশ্যই এই দুটো ঘটনারই বড় ভূমিকা আছে।"
গত মে মাসের প্রথমার্ধে ভারতের 'অপারেশন সিঁদুর' ও তারপর পাকিস্তানের পাল্টা জবাবকে কেন্দ্র করে দুই দেশ যেভাবে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিল, সেই ঘটনাও ট্রাম্প ও ইসলামাবাদের মধ্যে আস্থাকে বাড়িয়ে তুলেছে।
কারণ ওই সংঘাত শুরু হওয়ার চার দিনের মাথাতেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সবার আগে দাবি করেন, তার সরকারের মধ্যস্থতাতেই ভারত ও পাকিস্তান যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে। কয়েক ঘন্টার মধ্যে সত্যি সত্যি যুদ্ধবিরতি কার্যকরও হয়ে যায়।
আরও যেটা লক্ষ্যণীয়, সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের ওই সফরের ঠিক পর পরই জুলাই মাসের গোড়ায় ওয়াশিংটন ডিসি-তে যান পাকিস্তানের বিমানবাহিনীর প্রধান জাহির আহমেদ বাবর সিধু।
'দ্বিপাক্ষিক প্রতিরক্ষা সহযোগিতা' আরও উন্নীত করতে এবং 'পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে' আলোচনা করতে ওই সফরে তিনি পেন্টাগন, স্টেট ডিপার্টমেন্ট ও ক্যাপিটল হিলে একের পর এক বৈঠক করেন।
হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র অ্যানা কেলি জানিয়েছিলেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে 'সম্ভাব্য পরমাণু যুদ্ধ' ঠেকানোয় ট্রাম্পের অবদানের স্বীকৃতিতে পাকিস্তান তার নাম নোবেল পুরস্কারের জন্য সুপারিশ করার পরই এই বৈঠক চূড়ান্ত করা হয়।
আরও যেটা লক্ষ্যণীয়, সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের ওই সফরের ঠিক পর পরই জুলাই মাসের গোড়ায় ওয়াশিংটন ডিসি-তে যান পাকিস্তানের বিমানবাহিনীর প্রধান জাহির আহমেদ বাবর সিধু।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জমানায় পাক-মার্কিন সম্পর্ক যে বদলাচ্ছে, তা অবশ্য খুব ভালভাবে টের পাওয়া গিয়েছিল মাস দেড়েক আগেই – যখন পাকিস্তানের সেনাধ্যক্ষ, ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরকে হোয়াইট হাউসে মধ্যাহ্নভোজে আপ্যায়িত করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
পাকিস্তান কোনও এক দিন ভারতকেও তেল বিক্রি করতে পারে বলে ভবিষ্যদ্বাণী করেন ট্রাম্প। ওই পোস্টেই ট্রাম্প জানান, দুই দেশের এই বোঝাপড়ায় কোন তেল উত্তোলনকারী সংস্থা নেতৃত্ব দেবে, তা তাঁর প্রশাসন ঠিক করবে। তবে পাকিস্তানে বিশাল তৈলভান্ডার রয়েছে বলে ট্রাম্প যে দাবি করেছেন, তার কোনও প্রমাণ এখনও পর্যন্ত মেলেনি।
পাকিস্তান অবশ্য বিষয়টিকে আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্ক 'মসৃণ' করার উপায় হিসাবেই দেখছে। সে দেশের অর্থ মন্ত্রকের তরফে বৃহস্পতিবার রাতে একটি বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, 'এই চুক্তি শক্তি, খনিজ, তথ্যপ্রযুক্তি, ক্রিপ্টোকারেন্সির ক্ষেত্রে (আমেরিকার সঙ্গে) অর্থনৈতিক সহযোগিতার নতুন যুগের সূচনা হল।' মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানে উৎপাদিত রেডিমেড পোশাকের অন্যতম বড় বাজার আমেরিকা।
এত দিন পাকিস্তানকে এই বিষয়ে কড়া প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ফেলত পড়শি ভারত এবং বাংলাদেশ। কিন্তু ভারত এবং বাংলাদেশের তুলনায় পাকিস্তানের উপর আরোপিত মার্কিন শুল্কের পরিমাণ কম হওয়ায় এ বার প্রতিযোগিতায় তারাই এগিয়ে থাকবে বলে আশা ইসলামাবাদের।
ঘটনাচক্রে, বৃহস্পতিবারই বিদেশি ডিজিটাল পরিষেবার উপর প্রযুক্ত ৫ শতাংশ কর প্রত্যাহার করার কথা জানায় পাকিস্তান। অনেকেই মনে করছেন, এই কর প্রত্যাহার করে আদতে ওয়াশিংটনকে বার্তা দিয়েছিল পাকিস্তান। তার পরেই পাকিস্তানের উপর ১৯ শতাংশ শুল্ক আরোপের কথা জানায় হোয়াইট হাউস।