India Pakistan War Operation Sindoor: আকাশসীমা, নিয়ন্ত্রণরেখা বা পশ্চিমের সীমান্তরেখা-- কোনও কিছুই অতিক্রম করেনি ভারত (India)। অথচ তা না করেও পাকিস্তানের (Pakistan) প্রশাসনিক ও সামরিক ক্ষমতার ভরকেন্দ্রে থাকা শহরগুলির নাকের ডগায় হামলা করে এসেছে ভারত। এটাই আপাতত ইসলামাবাদের (Islamabad) কাছে সবথেকে বড় লজ্জার! আতঙ্কেরও নয় কী?
অপারেশন সিঁদুরের পরে পাকিস্তানের কাছে সব থেকে বড় আতঙ্কের ও লজ্জার হল-- আকাশসীমা, নিয়ন্ত্রণরেখা কিংবা পশ্চিম সীমান্তরেখা কোনও কিছুই অতিক্রম না করেও পাকিস্তানের প্রধানতম প্রশাসনিক ও সামরিক ক্ষমতার ভরকেন্দ্রে থাকা শহরগুলির নাকের ডগায় হামলা করেছে ভারত!
কী ভাবে সম্ভব হল? কারণটা লুকিয়ে সার্জিকাল স্ট্রাইকের সঙ্গে 'অপারেশন সিঁদুরে'র পার্থক্যের মধ্যেই। কী সেই পার্থক্য?
সার্জিকাল স্ট্রাইকের সঙ্গে অপারেশন সিঁদুরের প্রধান পার্থক্য-- ভারতের যুদ্ধবিমান কিংবা স্পেশাল গেরিলা বাহিনী নিয়ন্ত্রণরেখা অতিক্রমই করেনি। কারণ, তার দরকারও পড়েনি।
কেন? আসলে আধুনিকতম যুদ্ধপ্রযুক্তির মাধ্যমেই ভারতীয় সামরিক বাহিনী ইসলামাবাদ, লাহোরের দোরগোড়ায় এই আক্রমণ শানিয়েছে।
বাহওয়ালপুর ঘাঁটি ধ্বংস করেছে ভারত, সেখান থেকে লাহোর মাত্র ৪০ কিমি দূরে! মুরিদকেতে আঘাত হেনেছে ভারত, হাফিজ সইদের এই আস্তানা থেকে লাহোরের দূরত্ব মাত্র ৫৫ কিমি! শিয়ালকোট থেকে গুজরানওয়ালা মাত্র ৫০ কিমি দূরে! কোটলিতেও একাধিক টার্গেট করা হয়েছে-- সেখান থেকে ইসলামাবাদের দূরত্ব? একটু বেশি, ১২৭ কিমি। তবে, যুদ্ধে আক্রমণের হিসেবে সেটা এমনকী বেশি?
আর এটার আলোচনায় উঠে আসছে তিনটি বিশেষ অস্ত্রের কথা। রাফাল ফাইটার জেট। এয়ার টু সারফেস ক্রুজ মিসাইল স্কাল্প। হ্যামার এয়ার টু গ্রাউন্ড বম্ব।
আর এই ত্রিশক্তির সঙ্গে 'কে ড্রোন'। সামরিক পরিভাষায় যাকে সকলে 'সুইসাইড ড্রোন' হিসেবেই চেনে। নির্দিষ্ট টার্গেটের সন্ধান না পাওয়া পর্যন্ত আকাশে উড়বে, তবে খুব উঁচুতে নয়, যাতে দ্রুত শত্রুপক্ষের রেডারে ধরা না পড়ে। এবং টার্গেট একবার খুঁজে পেলেই সুইসাইড ড্রোন সেখানে ঝাঁপিয়ে পড়ে বিস্ফোরণ ঘটাবে। অর্থাৎ একবার নিক্ষিপ্ত হলে সে কাজ হাসিল করতে নিজে ধ্বংস হবে এবং টার্গেটকেও ধ্বংস করবে।
২০১৯ সালের বালাকোটে সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের নেতৃত্ব দিয়েছিল মিরাজ ২০০০ জেট। ২০২৫ সালে সেই দায়িত্ব পালন করল রাফাল। বহন করল ৩০০ কিমি রেঞ্জসম্পন্ন 'স্কাল্প মিসাইল'-- এর ডাকনাম 'স্টর্ম শ্যাডো'। দিনে রাতে যে কোনও আবহাওয়ায় স্টর্ম শ্যাডো মিসাইল ব্যবহার করা যায়। অ্যাডভান্সড নেভিগেশন সিস্টেম থাকায় বাংকারের আড়াল থেকেও টার্গেটকে চিহ্নিত করে একেবারে নিখুঁত ভাবে আছড়ে পড়তে পারে এই মিসাইল।
'হ্যামার' কি হাতুড়ি? হ্যাঁ, এ ক্ষেত্রে হাতুড়ির কথা আসবেই। এর পোশাকি নাম হল-- 'হাইলি অ্যাজাইল মডিউলার মিউনিশন এক্সটেন্ডেড রেঞ্জ'। ৭০ থেকে ৮০ কিমি এর রেঞ্জ। হ্যামারের কোড নেম 'গ্লাইড বম্ব'। বৈশিষ্ট্য? যুদ্ধে ব্যবহার করা যে কোনও সাধারণ বোমার সঙ্গে এই বোমাকে জুড়ে দেওয়া যেতে পারে। এর সোজা মানে, নিক্ষিপ্ত হবে সাধারণ বোমা-ই, কিন্তু সেটি আছড়ে পড়বে ওই সাধারণ বোমার চারগুণ শক্তিশালী হয়ে।
মঙ্গলবার মধ্যরাতে ভারতের সামরিক বাহিনী প্রথমবার এই ত্রিশক্তিকে সবথেকে বড় অভিযানে নামিয়েছিল।
আর প্রথম অভিযানই সফল। রাফাল, হ্যামার, স্কাল্পের যোগ্য সহযাগী সুইসাইড ড্রোন! ওয়াঘা থেকে লাহোর কিন্তু মাত্র ২৩ কিমি। যুদ্ধ পুরোপুরি শুরু হয়ে গেলে এবং ভারত তার প্রতিরক্ষার সব মণিমুক্তো নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়লে কী হতে পারে, সেটা ভেবে দেখেছে কি পাকিস্তান?