Kangana Ranaut: রাজনীতিতে সম্ভবত আর মন বসছে না কঙ্গনা রানাওতের। সম্প্রতি সাক্ষাৎকারে তাঁর একের পর এক মন্তব্য দেখে তেমনই মনে করছেন অনুরাগীরা। এমনকি, তাঁর মন্তব্যের জেরে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে পদ্ম শিবিরেও। নালা পরিষ্কার করা ও রাস্তা সাফাই করার মতো সমস্যা নিয়ে তাঁর দ্বারস্থ হচ্ছেন সাধারণ মানুষ, যা মোটেই পছন্দ হচ্ছে না কঙ্গনার। রাজনীতি করে রোজগারের পরিমাণ নিয়েও সন্তুষ্ট নন তিনি। এ বার রাজনীতি নিয়ে আরও বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন কঙ্গনা।
গত বছর হিমাচলপ্রদেশের মন্ডী থেকে বিজেপির সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন কঙ্গনা। কিন্তু অভিনেত্রীর দাবি, সাংসদদের চেয়ে বিধায়কদের পরিস্থিতি ভাল।
সম্প্রতি তিনি জানিয়েছেন, তিনি নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পরে কোনও একটি মন্ত্রক পাওয়ার আশা করেছিলেন। মান্ডির মতো জায়গায় বিপর্যয় মোকাবিলা করার জন্য মন্ত্রকের দরকার পড়ে, যা তাঁর কাছে নেই। এর চেয়ে ভাল বাজেট থাকে পঞ্চায়েতপ্রধান ও বিধায়কদের এলাকায়, দাবি কঙ্গনার।
এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, 'বহু সাংসদই নানা বিষয় নিয়ে চটে রয়েছেন। আমরা পরস্পরের সঙ্গে এ সব নিয়ে আলোনা করি।' রাজ্য ও কেন্দ্রের মধ্যে সেতুর কাজ করেন সাংসদেরা। তাই অভিনেত্রী বলেন, 'আসলে সাংসদদের কোনও জায়গাই নেই'।
হিমাচল প্রদেশের বন্যাকবলিত সংসদীয় কেন্দ্র মান্ডিতে তাঁর বহু প্রতীক্ষিত সফরের পরে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছিল। কঙ্গনা সাংসদ হিসেবে একেবারেই নতুন। এমনকি রাজনীতিকে 'অত্যন্ত ব্যয়বহুল শখ' বলেও বর্ণনা করেন তিনি।
তবে যে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি সমালোচনার মুখে পড়েছে তা হলো মান্ডি সফরের সময় তিনি একটি মন্তব্য করেছিলেন, যেখানে তিনি বলেছিলেন, 'দুর্যোগে ত্রাণ সরবরাহের জন্য তার কোনও সরকারি মন্ত্রিসভা নেই।'
সম্প্রতি অভিনেতা থেকে রাজনীতিবিদ হওয়া এই নেত্রী আরও একধাপ এগিয়ে দাবি করেছেন, পঞ্চায়েত ও বিধানসভার (বিধায়ক) বাজেট সাংসদদের থেকে বেশি। সাংসদদের কেউ সম্মান করে না বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
অনেকে বলেন, 'অনেক এমপি খুব হতাশ বোধ করেন এবং আমরা একে অপরের সাথে এই বিষয়গুলি নিয়ে কথা বলি। এমন নয় যে অন্যদের বিশাল কিছু সুযোগ-সুবিধা আছে। আপনাকে শুধু সংগ্রাম করতে হবে। আমরা (সাংসদরা) হলাম রাজ্য ও কেন্দ্রের মধ্যে সংযোগকারী যোগসূত্র। সুতরাং, আপনি মূলত কোথাও নেই। আমরা গোধূলির মতো।'
একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের সাথে কথোপকথনের সময় তিনি বলেছিলেন যে, সংসদ সদস্যরা প্রায়শই মাঝখানে 'হোঁচট' খান।
তিনি বলেন, 'আপনি যখন আপনার রাজ্যে যান, তখন আপনার কাছে এমন কোনও জায়গা নেই যেখানে আপনি সংযুক্ত আছেন বা যেখানে আপনি একটি প্রকল্প চালাচ্ছেন। আর কেন্দ্রে গেলে সব সময় মন্ত্রীদের অফিসের বাইরে লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হয়। অনেক সাংসদও অভিযোগ করেন যে একজন পঞ্চায়েত বা বিধায়কের বাজেট একজন সাংসদের চেয়ে অনেক বেশি। তারা আমাদের সম্মান করে না।'
জেলা উন্নয়ন সমন্বয় ও মনিটরিং কমিটি (দিশা) প্রতিষ্ঠাকে স্বাগত উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'একজন সংসদ সদস্যের কাজের জন্য অনেক যোগাযোগের প্রয়োজন হয়। দিশা একটি বিশাল পদক্ষেপ। যদি আমাদের ডেপুটি কমিশনার বা রাজ্য সরকারের অধীনে যারা স্পষ্টভাবে কাজ করেন তাদের জিজ্ঞাসা করার অধিকার বা ক্ষমতা না থাকত, তবে এটি একটি অপ্রয়োজনীয় জায়গা হত।'
আমি মনে করি, এই হতাশার কারণেই এটি (দিশা) তৈরি করা হয়েছিল: 'আমাদের স্থান এবং কাজ কী? আমরা কী করব এবং কোথায় যাব?' এছাড়াও, বিধায়করা খুব আঞ্চলিক। এলাকায় তাঁদের খুব প্রভাব এবং মন্ত্রীরা অনেক ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত। এদিকে আপনারা (এমপিরা) মাঝখানে আছেন, দোদুল্যমান। সব মিলিয়েই নানা সমস্যার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়।'
রাজনীতি নিয়ে পর পর এমনই সব বিতর্কিত মন্তব্য করে চলেছেন কঙ্গনা। রাজনীতিতে পরিশ্রম করতে হয় ঠিকই। তবে এত পরিশ্রম আশা করেননি তিনি। তাই তিনি বলেছেন, 'আমি ভাবিনি, এতটা পরিশ্রম করতে হয়।
আমাকে যখন কাজের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, তখন জানানো হয়, ৬০-৭০ দিন সংসদে উপস্থিত থাকলেই হবে। বাকি দিনগুলোয় নিজের কাজ করা যাবে। বিষয়টা শুনে ঠিকঠাকই মনে হয়েছিল। কিন্তু এখন দেখছি, অনেকটা সময় দিতে হয়।'