Pancham Shib Pujo: বছরের এই একমাত্র সময়ে কুণ্ড থেকে এই পঞ্চমশিবকে তোলা হয় এবং কোপাই নদীর জলে স্নান করিয়ে তাঁকে মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হয়। বিশেষ পূজা ও ভোগ নিবেদনের শেষে আগামী ১লা ইলা বৈশাখ, পঞ্চমশিবকে পুনরায় মায়ের কুন্ডে নিমজ্জিত করা হবে। এই সময় কঙ্কালীতলা পরিণত হয় এক আধ্যাত্মিক মেলায়, যেখানে ভক্তদের ঢল নামে দূর-দূরান্ত থেকে।
প্রসেনজিত্ মালাকার: সতীপীঠ কঙ্কালীতলায় আজ এক বিশেষ আধ্যাত্মিক মুহূর্তের সাক্ষী থাকল ভক্তসমাজ। মায়ের আবির্ভাব দিবসের তিথিতে পবিত্র কুণ্ড থেকে তোলা হয়েছে পঞ্চমশিবকে। দেবীর আরাধনায় নিয়োজিত পুরোহিত, সন্ন্যাসী ও ভক্তবৃন্দ এই মহতী কর্মযজ্ঞে অংশগ্রহণ করেন।
এই উপলক্ষে ছয় দিন ধরে চলছে বিশেষ ভোগ নিবেদন ও পূজার্চনা। তারই প্রস্তুতি হিসাবে আজ মায়ের সেই বিশেষ কুন্ডটি সম্পূর্ণভাবে পরিষ্কার করা হয়েছে।
প্রাচীন শাস্ত্রানুসারে অঘোর, তৎপুরুষ, ঈশান, সদ্যোজাত ও বামদেব—এই পাঁচটি শিলাকে একত্রে “পঞ্চমশিব” বলা হয়। বছরের এই একমাত্র সময়ে কুণ্ড থেকে এই পঞ্চমশিবকে তোলা হয় এবং কোপাই নদীর জলে স্নান করিয়ে তাঁকে মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হয়।
বিশেষ পূজা ও ভোগ নিবেদনের শেষে আগামী ১লা ইলা বৈশাখ, পঞ্চমশিবকে পুনরায় মায়ের কুন্ডে নিমজ্জিত করা হবে। এই সময় কঙ্কালীতলা পরিণত হয় এক আধ্যাত্মিক মেলায়, যেখানে ভক্তদের ঢল নামে দূর-দূরান্ত থেকে।
কথিত আছে, সতীর কাঁকাল বা কোমরভাগ এই তীর্থভূমিতে পতিত হয়েছিল, তাই এর নাম ‘কঙ্কালীতলা’। অনেকে আবার মনে করেন, দক্ষযজ্ঞের পর দেবী পার্বতীর কঙ্কাল এখানে পড়েছিল, সেই থেকেই এই নামকরণ।
এই শক্তিপীঠে দেবী গর্ভাদেবী নামে পূজিতা হন এবং ভৈরব রূপে বিরাজমান রুরু। মন্দিরসংলগ্ন কুণ্ডটিকে ঘিরে রয়েছে বহু অলৌকিক বিশ্বাস। কুন্ডের জলে থাকা পাথরের খণ্ডগুলিকে সাধকরা দেবীর শরীরের অংশ হিসেবে মান্য করে থাকেন।
বিশ্বাস, এই কুণ্ডের সঙ্গে কাশীর মনিকর্নিকা ঘাটের এক অদৃশ্য যোগ রয়েছে। তাই এই কুণ্ডে স্নান, স্পর্শ ও পূজা অনেকেই মনে করেন আত্মার মুক্তির পথ।
আজকের কুন্ড পরিষ্কার এবং পঞ্চমশিবের উত্থাপন কঙ্কালীতলার আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যের ধারাকে আরও জোরদার করল, যা ভক্তদের মনে বয়ে আনল ভক্তি, শ্রদ্ধা ও আশীর্বাদের অনির্বচনীয় অনুভব।