lness:জগন্নাথ বললেন, 'নিয়তি খণ্ডানো যায় না। তোমার রোগভোগ হতই। তোমার কষ্ট হচ্ছে দেখে আমি তোমার সেব...
পুরীর জগন্নাথ-দর্শন বা জগন্নাথ-তত্ত্ব এক আশ্চর্য বিষয়। ভক্ত ও ভগবানের মধুর লীলার বহিঃপ্রকাশ এর পরতে-পরতে।
স্নানযাত্রার ১৬ দিনের মাথায় রথযাত্রা। এদিনই জগন্নাথদেব ফের ভক্তসমক্ষে প্রকাশিত হন।
মাঝের ১৫ দিন কী ঘটে? এই সময়টায় জগন্নাথের জ্বর হয়। তাই তিনি ভক্তদের দেখা দেন না। ১০৮ কলসি জলে স্নানের পরই জ্বর আসে তাঁর।
এই সময়টায় তিনি অনসরগৃহে থাকেন। পুরীর মন্দিরের মধ্যে এক গোপন কুঠুরি। যাকে এখনকার ভাষায় বলে আইসোলেশন রুম।
মন্দিরের বৈদ্য তথা রাজবৈদ্য এই সময়টায় শ্রীজগন্নাথদেবের চিকিৎসা করেন। পুরোপুরি ভেষজ ওষুধে চিকিৎসা হয় তাঁর। তাঁকে রোগীর মতো পথ্য দিয়ে সেবা করা হয়।
রথযাত্রার একদিন আগে, এবার দিনটি ২৬ জুন, তাঁর নবযৌবন দর্শন হয়।
এর পিছনে এক আশ্চর্য ঘটনা আছে। মাধবদাস নামে এক ব্যক্তি জগন্নাথের একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন। নিয়মিত সেবাপুজো করতেন তিনি। একবার তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। কিন্তু নিজের হাতে জগন্নাথের সেবা করা থেকে নিজেকে বঞ্চিত করাটা মেনে নিতে না পেরে অসুস্থ শরীরেই তিনি পুজো ও ভোগ নিবেদনের কাজ শুরু করেন।
আর তখনই মিব়্যাকল! স্বয়ং জগন্নাথদেব ছদ্মবেশে ওই ভক্তের কাছে আসেন এবং তাঁর সেবা করতে শুরু করেন। অচৈতন্য মাধবদাস কিছু বুঝতে পারেন না প্রথমে। সেরে উঠে তিনি ভক্তের প্রতি ঈশ্বরের কৃপা দেখে আপ্লুত হয়ে পড়েন। তিনি জগন্নাথকে জিজ্ঞাসা করেন, প্রভু, আপনি তো চাইলে মুহূর্তে আমাকে সুস্থ করে তুলতে পারেন, তা না করে আমার সেবা করছেন! এ কী লীলা?
জগন্নাথ বলেন, যা ঘটবে, তা ঘটবে, নিয়তি খণ্ডানো যায় না। তোমার রোগভোগ হতই। এই জগতের নিয়ম। আর তোমার কষ্ট হচ্ছে দেখেই আমি তোমার সেবা করতে চলে এসেছি, কেননা ভক্তের কষ্ট আমি দেখতে পারি না। সেই শুরু। এর পর থেকে ভক্তের অসুস্থতা মনে রেখে তিনি প্রতিবার স্বয়ং অসুস্থ হয়ে পড়েন। এবং ১৫ দিন ধরে রোগভোগ করেন।