Lightning and Thunderstorm kill: ঝড়বৃষ্টির সময় বাজও পড়বে। বিদ্যুত্ও চমকাবে। খুবই 'কমন' ঘটনা এটা। কিন্তু সেইসময় রাস্তায় থাকলেই বিপদ। কারোর শরীরের উপর বাজ পড়লে তাঁর মৃত্যু অবধারিত। কিন্তু, কোথায় বাজ পড়বে, কীভাবে আগে থেকে বুঝব সেটা? কীভাবেই বা বাঁচবো?
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: থইথই জলে ভাসছে দক্ষিণবঙ্গ। বৃহস্পতিবার থেকে এখনও পর্যন্ত বাজ পড়ে মৃত্যু হয়েছে প্রায় ১৯ জনের। বহুসময়ই আমরা দেখেছি, বাড়ির পাশের নারকেল গাছটায় বাজ পড়ে কীভাবে ঝলসে যায়! কিন্তু, কোথায় বাজ পড়বে, কীভাবে আগে থেকে বুঝব সেটা? কীভাবেই বা নিজেকে বাঁচাবো?
বাজ পড়ার ফলে স্থির তড়িত্ উত্পন্ন হয়। যা বিদ্যুত্ আকারে মাটিতে নেমে আসে। খেয়াল করে দেখুন, বাজ পড়ার কয়েক সেকেন্ড আগে মাথার চুল ও শরীরের লোম খাড়া হয়ে যাচ্ছে। ঠিক যেভাবে শীতকালে চিরুনি দিয়ে মাথা আঁচড়ানোর সময় শুষ্ক চুল স্থির তড়িতের ফলে খাড়া হয়ে যায়।
একের পর এক জেলায় বাজ পড়ে মৃত্যুমিছিল। কীভাবে নিরাপদে রাখা সম্ভব। বাড়ি ভিতরে থাকার চেষ্টা করুন। হাঁটু মুড়ে দু কান চেপে রাখুন। চিত হয়ে শোবেন না। একসঙ্গে সবাই থাকবেন না। খোলা আকাশের নীচে বা খুব উঁচু জায়গা এড়িয়ে চলা। বড় গাছের নীচে থাকবেন না। মোবাইল চার্জে বসিয়ে কথা বলবেন না। খালি পা-এ না থেকে জুতো পরে নিন। লক্ষ্য রাখবেন, আপনার ভেজা কাপড় যেন মাটি স্পর্শ না করে। ধাতব কোনও জিনিস সেইসময় ধরবেন না। যেমন, লোহার রেলিং, কল, পাইপ ইত্যাদি। এমনকী বাড়ির ল্যান্ডলাইনও এড়িয়ে চলুন তখন।
আকাশের মেঘে বিদ্যুতের অতিরিক্ত চার্জ সঞ্চিত হয়ে একসময় প্রবল শব্দে মাটিতে নেমে আসে ও বিপরীত চার্জের সঙ্গে মিলিত হয়ে নিষ্ক্রিয় হয়, এটাই বজ্রপাত। উঁচু গাছ বা দালানকোঠায় বাজ আঘাত হানে। কারণ, মেঘে সঞ্চিত চার্জ সবচেয়ে কম দূরত্বে বিপরীত চার্জের সঙ্গে মিলিত হতে চায়।
তাই বজ্র-বিদ্যুতের সময় আপনি বাইরে খোলা বিস্তৃত প্রান্তরে থাকলে বাজ আপনার মাথায় পড়বে। কারণ, আপনিই সেখানে সবচেয়ে উঁচু বস্তু! তাই এ সময় ঘরের ভেতর থাকা নিরাপদ। বাড়িতে বাজ পড়লেও তা টিন বা ইটের দেয়ালের মাধ্যমে মাটির সঙ্গে সহজে যুক্ত হবে, আপনার তেমন ক্ষতি হবে না।
শহরে উঁচু বিল্ডিংয়ের চারপাশে আর্থিং ব্যবস্থা থাকে। বিদ্যুৎ পরিবাহী তামার তারের এক মাথা মাটির গভীরে পুঁতে রাখা হয়, অন্য প্রান্ত থাকে ছাদের ওপরে। এতে বাজের হাত থেকে মানুষ রক্ষা পায়। গ্রামে বাড়ির চারপাশে উঁচু সুপারি ও নারকেলগাছ লাগানো হয়, যেন বাজ পড়লে সেখানেই পড়ে, বাড়ি রক্ষা পায়।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বাঁকুড়া, পুরুলিয়া এলাকায় মাথার ওপর যে বিশাল আয়তনের মেঘ এসে দাঁড়িয়েছিল তার উচ্চতা ছিল ১৪ কিলোমিটার। সেই মেঘ ছিল মারাত্মক শক্তিশালী। তাই সেকেন্ডে ২ থেকে ৩ বার করে ইনটেনসিভ লাইটনিং হয়েছে।
কাজে বেরোনো মানুষ হয়তো এখনো দামিনী অ্যাপ ব্যবহার করেননি বা খেয়াল করেননি। তাই একের পর এক মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটে গিয়েছে। এই মুহূর্তে কলকাতার মাথার ওপর একটি অনুরূপ শক্তিশালী কিউমুলোনিম্বাস মেঘ আছে।
বৃষ্টি কমলেই যদি হঠাৎ অস্বাভাবিক গরম লাগতে শুরু করে তাহলে বুঝে নিতে হবে বাকি সমস্ত মেঘ এবং হওয়ার গতিপথ অবরুদ্ধ করে দাঁড়িয়ে আছে উল্লম্ব এই মেঘ। ফলে কলকাতায় আর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ইনটেনসিভ লাইটনিং শুরু হবে। সঙ্গে ভারী বৃষ্টি আসছে।