অয়ন ঘোষাল: ১৮৯৭ সালে স্বামী বিবেকানন্দ রামকৃষ্ণ মিশন তৈরি করে বললেন, মা সারদা দেবী হবেন সংঘ জননী। এরপর বেলুড় মঠ তৈরি হলেও সংঘ জননীর কোনও স্থায়ী মাথা গোঁজার ঠিকানা ছিল না। স্বামী সারদানন্দের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বাগবাজারে ১৯০৭ সালে একটি দানের জমিতে বাড়ি তৈরির কাজ শুরু হয়।
১৯০৯ সালে আজকের তিথিতেই শ্রী মা এই বাড়িতে প্রথম পদার্পণ করেন। সেই উপলক্ষে প্রতি বছর পদার্পণ উৎসব পালন করা হয়।
১৯০৯ থেকে জীবনের বাকি সময় বেশিরভাগ দিনেই সারদা দেবী এই বাড়িতেই কাটিয়েছেন। পরবর্তী কালে এই বাড়িই মায়ের বাড়ি বলে পরিচিত। ১৯০৬ সালে পাওয়া জমিতে ঋন নিয়ে করা দোতলা বাড়ি। ১৯০৮ সালে এই বাড়ির একতলায় উদ্বোধন পত্রিকার প্রকাশ। মা এলেন ১৯০৯ সালে। সেই থেকেই আবির্ভাব তিথি।
এটি বর্তমানে একটি গ্রেড এ হেরিটেজ। মাঝেমাঝে জয়রামবাটি থাকলেও শেষ বয়সে বাতের ব্যাথায় কাবু মা সারদা, এই বাড়িতেই কাটিয়েছেন। তাই আজকের দিনে এই বাড়িতে এসে মায়ের শয়নকক্ষে রাখা ছবির দিকে তাকালে শুধু আধ্যাত্মিক নয়, মানসিক শান্তিও পান ভক্তরা।
আজ সারাদিন অত্যন্ত ব্যস্ততায় কাটে এখানকার আধিকারিক ও স্বেচ্ছাসেবকদের। কারণ ভোর চারটেয় শুরু হয় মায়ের মঙ্গলারতি। সাড়ে নটা থেকে দু'ঘন্টার জন্য বন্ধ হয় মায়ের শয়নকক্ষ। কারণ জীবদ্দশাতে ঠিক এই সময়ে বাগবাজার ঘাটে স্নানে যেতেন মা। ফিরে এসে স্বপাক আহার্য গ্রহণ করতেন।
সেই নির্ঘণ্ট মেনে আজও এই দুই ঘন্টার মধ্যেই মাকে অঙ্গমার্জনা করে নতুন পাট ভাঙ্গা শাড়িতে সাজিয়ে বিশেষ ফলমূল ও পরমান্ন ভোগের আয়োজন করা হয়। বাকি সকাল থেকে রাত, মায়ের অত্যন্ত প্রিয় স্থলপদ্ম নিয়ে অবলীলাক্রমে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করেন ভক্তরা। শুধু একপলকের দর্শনের আশায়।