Gangasagar Mela on Makar Sankranti 2025: সব তীর্থ বারবার, গঙ্গাসাগর একবার। আগে এখানকার পথ এত দুর্গম ছিল যে, এমনই মনে করতেন মানুষ। মকরসংক্রান্তিতে গঙ্গাসাগরের সঙ্গমে স্নান মানুষের যুগ-যুগান্তরের স্বপ্ন! সারাজীবন মানুষ এর জন্য অপেক্ষা করেন।
অযোধ্যার রাজা সগর। তিনি একবার অশ্বমেধ যজ্ঞ করেছিলেন। সাগররাজার অশ্বমেধের সেই ঘোড়া চুরি করেছিলেন দেবরাজ ইন্দ্র স্বয়ং। তারপর ঘোড়াটিকে এই গঙ্গাসাগরে কপিল মুনির আশ্রমে লুকিয়ে রাখেন তিনি।
এদিকে অশ্বমেধ যজ্ঞের হারানো সেই ঘোড়া খুঁজতে বেরন সগররাজার ৬০ হাজার পুত্র। খুঁজতে-খুঁজতে তাঁরা কপিল মুনির আশ্রমে এসে পড়েন।
এসে দেখতে পান, মুনি ধ্য়ানস্থ, আর তাঁর সামনে ঘোড়া বাঁধা। সগররাজার পুত্রেরা ভাবলেন, তাঁদের ঘোড়া চুরি করেছেন কপিল মুনিই। তাঁরা কপিল মুনিকে যানয় তাই বলতে আরম্ভ করলেন। এদিকে এসবে ধ্যান ভাঙে মুনির। সব দেখে ও শুনে তিনি সগররাজার সন্তানদের উপর ভয়ংকর রেগে যান। তাঁদের ভস্ম করে দেন তিনি।
অনেক পরে সগররাজার উত্তরপুরুষ ভগীরথ তাঁর পূর্বপুরুষদের প্রাণ ফিরিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানান কপিল মুনির কাছে। কপিল মুনি বলেন, গঙ্গা নদীকে স্বর্গ থেকে মর্ত্যে নিয়ে আসতে হবে। গঙ্গার স্পর্শেই এঁরা প্রাণ ফিরে পাবেন।
কিন্তু যদি স্বর্গের নদীর তীব্র গতিতে ভেসে যায় পৃথিবী! এই আশঙ্কায় মহাদেবের দ্বারস্থ হন ভগীরথ। শিব তাঁর জটায় গঙ্গাকে ধারণ করতে সম্মত হন। অবশেষে গঙ্গা স্বর্গ থেকে প্রথমে শিবের জটায়, পরে শিবের জটা থেকে মর্ত্যে নামেন। আর তা ঘটে এই মকর সংক্রান্তির দিনেই।
এদিকে তো গঙ্গার স্পর্শে সগররাজার সেই ৬০ হাজার পুত্র প্রাণ ফিরে পান। আর তা থেকেই মনে করা হয়, এই পুণ্যতিথিতে গঙ্গায় স্নান করলে অমরত্ব লাভ হয়। প্রাণ ফিরে পাওয়া তো, মৃত্যুকে অতিক্রম করাই, মানে, অমর হওয়া। এমনই লোকবিশ্বাস। সাধারণ মানুষও সেই অশেষ পুণ্য অর্জনের লোভেই আজও মকর সংক্রান্তিতে গঙ্গাসাগরে যান, স্নান করেন।
(Disclaimer: প্রচলিত ধর্মীয় রীতি, শাস্ত্র বা তত্ত্বের ভিত্তিতে এই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এটি মানা বা না মানার সুপারিশ করা হচ্ছে না। বিশ্বাস ব্যক্তিগত বিষয়। সচেতন পাঠক যা করবেন স্বদায়িত্বে। আমাদের সম্পাদকীয় দফতরের কোনও দায়বদ্ধতা নেই।)